Beta
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

‘রিসেট বাটন’র যে ব্যাখ্যা দিল ড. ইউনূসের দপ্তর

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রবিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। ছবি : পিআইডি
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রবিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। ছবি : পিআইডি
[publishpress_authors_box]

আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বলা ‘রিসেট বাটন’ নিয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে তার দপ্তর।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৃহস্পতিবার বলা হয়েছে, ড. ইউনূস বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস মুছে ফেলার কথা বলেননি। বরং তিনি কলুষিত রাজনীতির ধারার অবসান ঘটিয়ে নতুন যাত্রার কথা বুঝিয়েছেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়া ড. ইউনূস গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘রিসেট বাটন’ চাপার কথা বলেছিলেন।  

সাক্ষাৎকার নেওয়া সাংবাদিকের প্রশ্নে তার কথাটি ছিল এমন- “আপনি পুরনো দিনের কথাবার্তা বলছেন। এর মধ্যে একটা গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেছে। আপনার বোধহয় স্মরণে নেই। আপনি এমনভাবে বলছেন যেন এসব ঘটনা ঘটেই নাই।

“নতুন ভঙ্গিতে যা হচ্ছে, সেটা দেখতে হবে। কত ছেলে প্রাণ দিল, সেটা নিয়ে আপনার কোনও প্রশ্ন নেই। ছাত্ররা বলেছে, আমরা রিসেট বাটন পুশ করেছি। অতীত নিশ্চিতভাবে চলে গেছে। এখন নতুন ভঙ্গিতে আমরা গড়ে তুলব।”

গত ১ অক্টোবর ওই সাক্ষাৎকার প্রকাশের পর তার ওই বক্তব্য ধরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ফেইসবুক সার্চের ক্ষেত্রে ‘পপুলার নাও’ ক্যাটাগরিতে চলে আসে শব্দবন্ধটি।

এক পক্ষ বলছে, ড. ইউনূস বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস মুছে দিতে চান। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তার অংশগ্রহণের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “আমার ইতিহাস উনি মুছে দেওয়ার কে?”

অন্যদিকে ড. ইউনূসের পক্ষে ‘রিসেট বাটন’ এর ব্যাখ্যা দেওয়াও চলছে সমানতালে। প্রবাসে থাকা অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের ফেইসবুকে লেখেন, “যখন সংশোধন বা সিস্টেম ম্যালফাংশন ফিক্স করার আর কোনও উপায় থাকেনা, ঠিক তখন আপনাকে এক প্রকার বাধ্য হয়েই রিসেট অপশন বা বাটন চাপ দিতে হয়।

“রিসেট মানে শেষ নয়, রিসেট মানে নতুন যাত্রা, রিসেট মানে দেশ বদল নয়, দেশের নতুন সূর্যোদয় দেখার অপেক্ষা।”

এনিয়ে মাতামাতির মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যখন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রিসেট বাটন টেপার কথা বলেছিলেন, তিনি কলুষিত রাজনীতির ধারার অবসান ঘটিয়ে নতুন যাত্রা শুরুর কথা বোঝাতে চেয়েছিলেন। যে ধারাটি বাংলাদেশের মূল সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, অর্থনীতিকে পতনের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে, ভোট ও নাগরিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে।”

তিনি বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস মুছে ফেলার কথা বলেননি, বলা হয় বিবৃতিতে।

রিসেট বাটনের যান্ত্রিক ব্যাখ্যা তুলে ধরে সেই বার্তায় বলা হয়, “কেউ যখন কোনো ডিভাইসে রিসেট বোতাম চাপেন, তখন তিনি নতুন করে ডিভাইসটি চালু করতে সফটওয়্যার সেট করেন। এতে হার্ডওয়্যার পরিবর্তন হয় না। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের হার্ডওয়্যার।”

ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূসের বলা রিসেট বাটন নিয়ে কেউ কেউ ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে বলে দাবি করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিতে ড. ইউনূসের দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে দেওয়া বক্তব্যটিও এই প্রসঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে বিবৃতিতে।

তাতে বলা হয়, ৮ আগস্ট দেশে ফিরে বিমানবন্দরে ড. ইউনূস বলেছিলেন যে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা। যার অর্থ প্রথম স্বাধীনতা ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে।

একাত্তরে যুক্তরাষ্ট্রে থেকে ড. ইউনূস যে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রেখেছিলেন, সেটাও তুলে ধরা হয় প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে।

তাতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে অধ্যাপক ইউনূস মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা আসার পরপরই তিনি বাংলাদেশ নাগরিক কমিটি গঠন করেন। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে রাজি করানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী প্রচার চালিয়েছিল এই সংগঠন।

তিনি তখন একটি নিউজলেটার প্রকাশ করেছিলেন জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, তার মাধ্যমে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যা সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে জানানো হয়।  

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত