ছাত্র আন্দোলন চলাকালে এক শিক্ষার্থীকে হত্যার অভিযোগে করা মামলা থেকে জামিন পেয়েছেন নাট্যনির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু।
বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম সাইফুজজামানের আদালত তাকে জামিন দেয়।
আদালতে রিংকুর জামিন চেয়ে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তবে এর বিরোধীতা করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবির আন্দোলন যখন তুঙ্গে সেই সময় ১৯ জুলাই গুলশানের শাহজাদপুরে সুবাস্তু নগরভ্যালির সামনে গুলিতে নিহত হয় নাইমুর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় তার বাবা খলিলুর রহমান একটি হত্যা মামলা করেন। যেখানে আসামি করা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বোন শেখ রেহানাসহ ৬৪ জনকে। এই মামলাতেই গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে রিংকুকে গ্রেপ্তার করে গুলশান থানা পুলিশ।
পরদিন পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। সেইসঙ্গে করা হয়েছিল জামিনেরও আবেদন। তবে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠিয়ে তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জামিন শুনানির বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করে দেন।
সেই শুনানিতে আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, “রিংকু ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ছিল। তার ফেসবুক পোস্ট থেকে এ বিষয়টি স্পষ্টভাবে দেখা যায়। তিনি ৫ আগস্ট তারিখে ছাত্র আন্দোলনের পক্ষেও পোস্ট করেছেন।”
এ মামলার সঙ্গে নাট্যনির্মাতার কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই উল্লেখ করে আইনজীবী আদালতকে বলেন, “এরপরও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে আটক করা হয়।”
রিংকুকে এ মামলায় জামিন দেওয়া না হলে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি হবে বলেও শুনানিতে আদালতকে বলেন তিনি। জামিন পেলেও আসামি পালিয়ে যাবেন না, এমন নিশ্চয়তাও দেন।
তবে জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, “আসামিকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের মিছিলে সরাসরি অংশ নিতে দেখা গেলে। জুলাই জেনোসাইডে তিনিও অংশ নিয়েছেন।
“যদি হত্যার সঙ্গে উনার কোন সংশ্লিষ্টতা না থাকে পরবর্তীতে মামলা থেকে খালাস দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামিকে আপাতত কারাগারে রাখা প্রয়োজন।”
তরুণ নাট্যনির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় নাটক ও ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে পুতুলের সংসার, কবর, রূপান্তর, বোধ, মায়ের মতো কেউ নেই, পতঙ্গ, বন্দি ইত্যাদি। শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার খবর প্রকাশ হতেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান দেশের নাটক ও শিল্পাঙ্গনের মানুষ। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তও দাবি করেন তারা।