Beta
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
Beta
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

‘সব দায় চালককে দিয়ে মূল সমস্যা থেকে যোজন যোজন দূরে’

শামসুল হক
শামসুল হক
Picture of জাকিয়া আহমেদ

জাকিয়া আহমেদ

মূল বিষয়

সড়ক দুর্ঘটনার সব দায় চালকদের উপর চাপানো ভুল।

সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে চালকদের পাশাপাশি সড়ক ব্যবস্থাপনা, যানবাহনের ফিটনেস, এবং গণপরিবহন ব্যবস্থার অনিয়মের মতো কারণগুলোও দায়ী।

সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন।

সকাল সন্ধ্যাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. এম শামসুল হক এমত দিয়েছেন।

সব দায় চালকের?

সড়কে যেকোনো দুর্ঘটনার জন্য চালককে দায়ী করার মানসিকতা প্রসঙ্গে ড. শামসুল হক বলেন, “এটি ভুল ধারণা এবং আমরা মানসিকভাবে সেখানেই আটকে আছি। চালকদের রূঢ় আচরণ, অসভ্যতা চালকদের নিয়ে আমাদের এই মানসিকতা তৈরি করতে সাহায্য করে।”

একই রুটে একাধিক কোম্পানিকে বাস চালানোর অনুমতি প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “এতে যাত্রী ধরার জন্য চালকেরা অসুস্থ প্রতিযোগিতা করে। কারণ, চালক বেতন পায় না, সে পায় পারিশ্রমিক। যাত্রীর সংখ্যার সঙ্গে তার আয় জড়িত। তাই যাত্রীকে চালক তার আয়ের উৎস ও পণ্য ভাবে। চালকের চোখ থাকে কত যাত্রী সে তুলতে পারছে সেই দিকে, রাস্তার দিকে নয়।”

উদাহরণ হিসেবে তিনি হাতিরঝিলের চক্রাকার বাস সার্ভিস এবং গুলশান ও বনানী এলাকার ‘ঢাকা চাকা’র কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “হাতিরঝিলে এক কোম্পানির বাস, প্রতিযোগিতা নেই। ‘ঢাকা চাকা’র চালক পারিশ্রমিক পান না, বেতন পান। সপ্তাহে দুই দিন ছুটি পান, প্রতিদিন সকাল ১০টায় তারা খাবার পান। এই চালকের তো বাসে গাদাগাদি করে যাত্রী নেওয়ার দরকার হচ্ছে না। তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ আছেন। হাতিরঝিলে পুলিশ দরকার হয় না, কারণ পুরোটা স্বনিয়ন্ত্রিত।”

পরিকল্পনায় গলদ

বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ড. হক বলেন, “দেশে যেকোনো সড়ক দুর্ঘটনায় প্রথমেই মানুষ দোষ দেয় চালককে। দোষ চালকদের রয়েছে, কিন্তু কেবলমাত্র চালকের সব দায় মনে করে মূল সমস্যা থেকে আমরা যোজন যোজন দূরে রয়েছি। এই চালকদের কারা লাইসেন্স দিল, সড়ক-মহাসড়কের নকশা বিজ্ঞানসম্মত কি না, যানবাহনের ফিটনেস রয়েছে কি না– এসব নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলে না।”

বিভিন্ন দেশে মোটরসাইকেলকে সীমিত করা হচ্ছে উল্লেখ করে ড. হক বলেন, “পাশের দেশ থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়ায় মোটরসাইকেলকে ‘অভিশাপ’ হিসেবে দেখা হয়। অথচ আমাদের সরকার না জেনে এত মোটরসাইকেল অনুমোদন দিয়েছে… রেজিস্ট্রেশন ফি অর্ধেক করা হয়েছে, ৩৫০ সিসির মোটরসাইকেল অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সরকার বাণিজ্যিক চাপে পড়ে এগুলো করেছে অথবা বাধ্য হয়েছে। কিন্তু তরুণ প্রজন্মের জীবন চলে যাচ্ছে। আমরা ভুলে যাই– এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলে তার দায়ও নিতে হবে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত