Beta
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫
Beta
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫

কোটি টাকার গরু রোজো ঢাকার প্রদর্শনীতে

Animal fair_Rubel 16
[publishpress_authors_box]

চাপা সাদার ওপর হালকা লালচে আভা ছড়ানো গরুটির নাম রোজো। গলায় তার ঝুলছে মোটা চেইন, চেইনের নিচে লকেট। মুখে পড়ানো বেল্টে লেখা সাদেক এগ্রো। গরুটির দাম হাঁকা হচ্ছে কোটি টাকা।

ঢাকার আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী। একইসঙ্গে সারাদেশের ৬৪ জেলার ৪৬৬ উপজেলায় একযোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ প্রদর্শনী।

এসব প্রদর্শনীতে নিজ নিজ উপজেলা থেকে উন্নত জাতের এবং অধিক উৎপাদনশীল জাতের গবাদিপশু এবং বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রদর্শন করা হচ্ছে। মেলায় গেলেই দেখা মিলছে গাভী, বাছুর, ষাঁড়, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, মুরগী, হাঁস, দুম্বা, কবুতর, সৌখিন পাখি, পোষা প্রাণি ইত্যাদি।

ঢাকার পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে বিশাল আয়োজন। বড় বড় বেশ কয়েকটি তাবু খাটিয়ে করা হয়েছে স্টল। প্রবেশ করলেই নজরে আসে একেক দিকে একেক পশুর সমারোহ। সেখানেই দেখা মিল রোজোর।

রোজোর পরিমাণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সাদেক এগ্রোর কর্ণধার ইমরান হোসেন বলেন, “বেসিকালি ইট’স নট এবাউট ওয়েট। ১ ক্যারেটের হীরার যদি ক্লিয়ারিটি না থাকে; তাহলে দাম অনেক কম হয়। আবার ওই একই হীরার ক্লিয়ারিটি, কালার, কাট ভালো হলে দাম অনেক হতে পারে। এটা আসলে কোয়ালিটির ওপর নির্ভর করে।”

রোজো নামের গরুটির দাম হাঁকা হয়েছে কোটি টাকা। ছবি : হারুন-অর-রশীদ

সবাই এসে রোজোর ওজন জিজ্ঞাসা করে জানিয়ে তিনি বলেন, “ওজন জিজ্ঞেস করলে ১ কোটি টাকা দামের গরুর কোয়ালিটিটা মলিন হয়ে যায়।”

আমেরিকার ব্রাহামা জাতের গরু রোজো। তিন বছর ধরে তাকে লালন পালন করছে সাদেক অ্যাগ্রো।

প্রদর্শনীতে দুটি উট, ছাগল, গরু, দুম্বা নিয়ে এসেছে সাদিক এগ্রো ফার্ম। ইমরান হোসেন সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমাদের কাছে যতরকমের পশু আছে সবরকমই প্রদর্শনীর চেষ্টা করেছি।”

দিনের বেলা রোদ প্রখর হওয়ায় সাড়া কিছুটা কম পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করেন ইমরান। বিকেলে রোদের তাপ কমলে দর্শণার্থী আরও বাড়বে বলেই আশা তার।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে প্রদর্শনীতে গিয়ে দেখা যায়, দুপুরের রোদেও দর্শনার্থীর সংখ্যা খুব একটা কম নয়। কেউ এসেছেন পরিবার পরিজন নিয়ে। আবার দেখা মিলে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া শিক্ষার্থীদেরও।

প্রদর্শনীতে পাখি, মুরগী, হাঁস দেখতে এসেছেন দশম শ্রেণী পড়ুয়া শিক্ষার্থী সামিন হাসান আদর। সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “এখনও হাঁস দেখিনি। কুকুর দেখলাম। ওইদিকে বড় বড় ষাঁড় দেখলাম। চিন্তাও করতে পারিনি এত বড় ষাঁড় হবে। প্রদর্শনীতে এসে খুবই ভালো লেগেছে।”

পরিবার পরিজন নিয়ে প্রথমবার প্রদর্শনী মেলায় এসে খুবই ভালো লাগছে বলে জানান মাহফুজুর রহমান। সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “সন্তানদের পশু-প্রাণীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়ে এসেছি।”  

এবারের মেলায় দর্শনার্থীদের সাড়ায় সন্তুষ্ট শখের মুরগিওয়ালার বিক্রয়কর্মী আরিফুল হক আকাশ। সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার  পর সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারছে। ভালোই সাড়া দেখছি। সত্যি বলতে আমরা প্রদর্শনীতে অংশ নিতে এসেছি। কেউ যদি মুরগী কিনতে চায় নিতে পারবে।”

পরিবার পরিজন নিয়ে প্রদর্শনীতে এসেছিলেন অনেকে। ছবি : হারুন-অর-রশীদ

বসিলা ব্রিজের ওপারে কেরানীগঞ্জের রাবিবা এগ্রো ফার্ম থেকে তেরোটি গরু নিয়ে প্রদর্শনীতে এসেছেন আমিনুল ইসলাম। সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “আমাদের কাছে ১৫ লাখ থেকে শুরু করে ৫০ লাখ টাকার গরু রয়েছে। বিক্রি হলে করা হবে।”

ময়মনসিংহ থেকে নয়টি ঘোড়া নিয়ে এসেছেন সনজু হর্স ফার্মের স্বত্তাধিকারী সনজু। সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “মেলা শুরুর পর পরই পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের মারোয়াড়ি জাতের একটি ঘোড়া বিক্রি হয়েছে। ঘোড়াটি আনা হয়েছিল রাজস্থান থেকে।”

ঢাকায় কেন্দ্রীয় প্রদর্শনীতে ভিন্ন ভিন্ন ভ্যালুচেইনভিত্তিক স্টল স্থাপন করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদের উন্নয়নে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রযুক্তি, ঔষধ সামগ্রী, টিকা, প্রাণিজাত পণ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণ সরঞ্জাম, মোড়কসহ পণ্য বাজারজাতকরণ প্রযুক্তি ইত্যাদির স্টল রয়েছে। এছাড়া ৭টি প্যাভিলিয়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প, এলআরআই, কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামার অংশগ্রহণ করছে প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী ও মেলায়।

মেলায় অংশ নেওয়া প্রাণীর গুণগত মান, জাত, স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য্য, আকার, অবদান, নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান, বাজারজাতকরণ, পরিবেশ ও অর্থনৈতিক প্রভাব, সার্বিক পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি বিবেচনায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ৯৩টি পুরষ্কার, ক্রেস্ট এবং অংশগ্রহণকারীকে সনদ প্রদান করা হবে। প্রদর্শনীর বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকবে গবাদিপশুর র‍্যাম্প শো।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত