প্রশ্ন : রোমান সানা তো অবসরের চিঠি দিয়েছেন ফেডারেশনকে। এ ব্যাপারে আর্চারি ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটি কি কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে?
কাজী রাজীব উদ্দীন : আজ (শুক্রবার) রোমানের চিঠিটা আমরা গ্রহণ করেছি।
প্রশ্ন : ক্যারিয়ারের মাঝপথে কেন রোমান হঠাৎ অবসর নিলেন?
রাজীব উদ্দীন : এটা একান্তই তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। চিঠিতেও সে ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করেছে। তাকে তো জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। সে নিজেই ক্যাম্প ছেড়েছে। এটা সত্যি, গত কয়েক মাস ধরে তার পারফরম্যান্স ভালো না। বুঝতে হবে, প্রত্যেকটা দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোচ ও নির্বাচক কমিটির ভূমিকা থাকে। সেখানে সাধারণ সম্পাদকের কিছু করার থাকে না। আমার সংগঠক জীবনে কখনও খো খো বা আর্চারির দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে কাউকে অনুরোধ করিনি। ফ্রেডরিখ (মার্টিন ফ্রেডরিখ) বিদেশি কোচ। ওর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গী থেকেই দল বাছাই করে। সে ভালো করে জানে কে কোথায় গিয়ে খেলতে পারবে। ব্যাপার হচ্ছে, একজনের জন্য পুরো ক্যাম্প নষ্ট করে লাভ নেই।
প্রশ্ন : রোমানের অবসরের বিষয়টি নিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান কথা বলেছেন। সেটা নিশ্চয় শুনেছেন?
রাজীব উদ্দীন : শুনেছি। তবে উনারা এ ব্যাপারে চিন্তিত না।
প্রশ্ন : মন্ত্রী যদি আপনাকে ডাকে কি বলবেন?
রাজীব উদ্দীন : আমরা ওর ব্যাপারে খারাপ কথা বলিনি। বলবও না। এ নিয়ে কোনও মন্তব্যও করব না। তার সিদ্ধান্ত সে নেবে। যে শর্তে সে ফিরে এসেছিল (নিষিদ্ধ হওয়ার পর) সে প্রতিটি শর্ত ভঙ্গ করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা তো আমরা ওকে দিইনি। বিশ্ব আর্চারি দিয়েছিল।
প্রশ্ন : অবসরের ইস্যুতে আপনি তাকে বোঝাতে পারতেন…..।
রাজীব উদ্দীন : সে তো সরাসরি চিঠিটা আমাকে দেয়নি। প্রথমে ট্রেনিং কমিটি তাকে অনুরোধ করেছে। চেয়ারম্যান বলেছে, তুমি পাগলামো কোরো না। ভেবে চিন্তে দেখো। কিন্তু সে নিজেই তার কফিনে পেরেক ঠুকে দিয়েছে।
প্রশ্ন : গুঞ্জন আছে এক নারী আর্চার রোমানের কারণে ক্যাম্প ছেড়ে গিয়েছিলেন..।
রাজীব উদ্দীন : আমিও শুনেছি। ওই মেয়েটি তখন রিকার্ভের শীর্ষ খেলোয়াড় ছিল। সে কিন্তু দিয়ার (দিয়া সিদ্দিকী) চেয়েও ব্রাইট ছিল। করোনার আগের ঘটনা ছিল সেটা।
প্রশ্ন : তখন রোমানকে কিছু বলেননি কেন?
রাজীব উদ্দীন : কোনও মেয়ের সম্মান হানি হোক সেটা কখনও চাইনি। আমার নিজের মেয়ে হলে কি করতাম? তবে আমার কাছে এমন ডকুমেন্টস আছে রোমানের। আমি মুখ খুললে আমারও সম্মান যাবে, রোমানেরও যাবে। আসলে ওর মানসিক সমস্যা আছে।
প্রশ্ন : সেটা কেমন?
রাজীব উদ্দীন : আমি রোমানকে ভালো একজন মনোবিদ দেখাব। একজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। বাবা হিসেবে এটা আমার দায়িত্ব।
প্রশ্ন : অনেকে বলে আপনার সঙ্গে দূরত্বের কারণে সে অবসর নিয়েছে?
রাজীব উদ্দীন : আমি ব্যক্তিগতভাবে কারও সঙ্গে দ্বন্দ্বে যাই না। কারো সঙ্গে আমার ঝগড়াও হয় না। এটা আমার স্বভাব। ছোটবেলা থেকেই এমন আমি। ওর এত মাথা গরম, কি বলব? বলে, স্যার আমি অনেক সময় না বুঝে অনেক কথা বলে ফেলি। আমি আপনার সন্তানের মতো। আমাকে মাফ করে দিয়েন। ওর বিরুদ্ধে কাজ করবো এত নিচের স্তরের লোক আমি না।
প্রশ্ন : রোমান কি আপনার সঙ্গে কোনও কথা বলেছে অবসর নিয়ে?
রাজীব উদ্দীন : না বলেনি। আমিও তো বলব না। কেন বলব? আমার দিকে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। কিন্তু বাবা হয়ে সন্তানের লাথি খেলে খাব। আল্লাহ তো দেখছেন। আমি কোনও দোষ করিনি। আর্চারির জন্য পরিবারকে সময় দিতে পারিনি। সেই আর্চারির সন্তান আমাকে আঘাত দিয়ে শান্তি পেলে পাক। কিছু বলব না। তবে..।
প্রশ্ন : তবে কি..?
রাজীব উদ্দীন : তবে যখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাবে তখন তার আসল অবস্থাটা প্রকাশ করে দিতে হবে। কারা তাকে আমার বিরুদ্ধে কথা বলার ইন্ধন দিচ্ছে সেটার স্বাক্ষী প্রমাণ আছে।
প্রশ্ন : কারা দিচ্ছে?
রাজীব উদ্দীন : এখানে তৃতীয় পক্ষ তাকে নিয়ে খেলছে। রোমানই সব বলে দিয়েছে। সে নারী ঘটিত কেলেঙ্কারি না করলে সেই খবর ওয়ার্ল্ড আর্চারিতে গেল কিভাবে? আমরা না হয় বোকা। আমরা তো সেটা পাঠানোর আগ্রহ প্রকাশ করিনি। রোমান কার সঙ্গে দেখা করেছে। কাকে কি বলছে সব জানি। অথচ তার জন্য কি করিনি? সে এখন বলছে কিছু পায়নি। দেশ তাকে কিছু দেয়নি। সে কি পাইনি?
প্রশ্ন : কি করেছেন তার জন্য?
রাজীব উদ্দীন : বাংলাদেশ আনসারে রোমানের ল্যান্স নায়েক পদ দেয়ার জন্য কতদিন হেড কোয়ার্টারে গিয়েছি। ডিজিকে (মহাপরিচালক) ধরেছি। এমনকি ডিজি তার বক্তৃতায় বলেছেন, চপল সাহেব না বললে এটা করা সম্ভব ছিল না। আমি বলেছিলাম অনারারি অফিসার বানিয়ে তাকে রেজিমেন্টে রাখেন। কিন্তু তাকে রেগুলার ল্যান্স নায়েক বানিয়েছে। এটাও সে মেনে নিয়েছে। অথচ আমি বলেছিলাম স্পোর্টসের কোথাও বা ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডজুডেন্ট পদে দেওয়া হোক। কিন্তু ওর তো বিদ্যা নেই। আরও কত কথা বলা যায়।
প্রশ্ন : বলেন শুনি..।
রাজীব উদ্দীন : রোমান যখন অ্যাক্সিডেন্ট করে বাসায় ছিল তখন জিয়াকে ( সাবেক সহকারী কোচ জিয়াউল হক) দিয়ে টাকা পাঠিয়েছি। আমি নিজেও খুলনায় ওর বাসায় গিয়েছি। মনে হয় কোনও ঈদের পরের ঘটনা। অথচ আমার তখন অন্য জায়গায় প্রোগ্রাম ছিল। গিয়ে বললাম, তুই চিন্তা করিস না। আমি তো আছি।
প্রশ্ন : কিন্তু সে তো সরকার থেকে ফ্ল্যাট বা জমি পায়নি। অথচ ওর চেয়েও তুলনামূলক কম সাফল্যে যা অন্য অ্যাথলেটরা পেয়েছেন।
রাজীব উদ্দীন : হ্যাঁ। ও আজ বলতে পারে আর্চারি থেকে কিছু পায়নি। কিন্তু আর্চারিই তো ওকে যা দেওয়ার দিয়েছে। সে তো হারিয়েই গিয়েছিল। আনসারের চাকরি কে দিয়েছে? ওকে কে ফেরালো? আজ আর্চার তৈরি করেছি বলেই আনসারে গেছে। আনসারে তো সে টাকা পাচ্ছেই। সে ক্রীড়াঙ্গন থেকে কিছু না পেলে ৫০-৫৫ লাখ টাকা খরচ করে কিভাবে খুলনায় ৫ তলা বাড়ি করলো?
প্রশ্ন : আপনার কি মনে হয় বাংলাদেশের আর্চারিকে সুকৌশলে ধ্বংস করতে এটা কারও পরিকল্পনা?
রাজীব উদ্দীন : আমি এটা বিশ্বাস করি না। কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন রোমানের সব ডকুমেন্টস ওয়ার্ল্ড আর্চারিতে কে পাঠালো?
প্রশ্ন : ফেডারেশন থেকে কেউ পাঠিয়েছে?
রাজীব উদ্দীন : ফেডারেশন থেকে কেউ পাঠায়নি। তবে দিয়া-রোমানের বিষয়টা ওপেন সিক্রেট ছিল। রোমানও স্বীকার করেছে মাঝে মধ্যে ওর মাথা গরম হয়ে যায়। সে পুরোপুরি সুস্থ না। সে জাতীয় দলে নেই তবুও মনোবিদ দেখাচ্ছি। আমার কথা হলো দেশের সম্পদ কেন নষ্ট করবো। তার পেছনে ফেডারেশন টাকা খরচ করেছে। স্পনসররা লাখ লাখ টাকা দিয়েছে।
প্রশ্ন : কিন্তু রোমান তো বলেন ফেডারেশন থেকে মাত্র ৩ হাজার টাকা বেতন পান।
রাজীব উদ্দীন : দূর..। আমার থেকেই সে লাখ টাকার বেশি পেয়েছে। সোনা জিতলে ১ হাজার ইউরো দিতাম। সে এগুলো বলবে না। আমার কাছে সব তথ্যপ্রমাণ আছে।
প্রশ্ন : আর্চাররা তো কোনও বেতন কাঠামোর মধ্যে নেই?
রাজীব উদ্দীন : আমরা বেতন কোত্থেকে থেকে দেব? আমাদেরটা কি প্রফেশনাল খেলা?
প্রশ্ন : কিন্তু রোমানের অবসরের পর প্রচুর সমালোচনা হচ্ছে।
রাজীব উদ্দীন : আজ পর্যন্ত কোনও পাবলিক আমাকে রোমানের ব্যাপারে কোনও ফোন করেনি।
প্রশ্ন : এবার কি তাহলে আর্চারদের সুযোগ সুবিধা বাড়াবেন?
রাজীব উদ্দীন : এটার সিদ্ধান্ত আমি একা নিতে পারি না। নির্বাহী কমিটি আছে আমাদের। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এককভাবে এখানে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।
প্রশ্ন : রোমানের ইস্যুতে যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের ডাকেন..।
রাজীব উদ্দীন : মন্ত্রী মহোদয় (যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান) ডেকেছিলেন। আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি ডাকেন তাহলে অবশ্যই যাবো।
প্রশ্ন : সেখানে কি বক্তব্য থাকবে?
রাজীব উদ্দীন : উনারা কি বলেন সেটা দেখে তখন আমরা বলব।
প্রশ্ন : রোমান যদি আবারও খেলায় ফিরতে চান..।
রাজীব উদ্দীন : যাওয়াটা যেমন তার সিদ্ধান্ত, ফেরাটাও তার নিজের।
প্রশ্ন : তাহলে স্বাগত জানাবেন তাকে?
রাজীব উদ্দীন : সে এখন মাইনাসে আছে। সে তো খেলে না। র্যাঙ্কিং টুর্নামেন্টে বাছাইয়ে ইচ্ছা করে খেলেনি। এর চেয়েও বড় কথা ওর সংস্থা জানে না যে সে খেলবে না। আনসার তাকে বেতন দেয়, অথচ তাদের জানায়নি! আমরা তো শুধু পারফরম্যান্স বোনাস দিই। সে আর দিয়া সর্বোচ্চ টাকা পায়।
প্রশ্ন : অভিযোগ আছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) বৃত্তি থেকে তাকে বাদ দিয়েছেন আপনি?
রাজীব উদ্দীন : আমার কি ইন্টারেস্ট? কেন দেব না? ওকে তালিকাভুক্ত করা হবে কি হবে না সেটা কোচ ও ট্রেনিং কমিটি সুপারিশ করে। আমাদের কোনও হস্তক্ষেপের অধিকার নেই। এবার যেমন ৬ জনের নাম দিয়েছে তারা।
প্রশ্ন : এটা নিয়ে রোমান তো অভিযোগ জানিয়েছেন? রাগও করেছেন।
রাজীব উদ্দীন : কেন রাগ করবে? একবার বৃত্তি পেয়েছে সে। এমনকি বৃত্তির চেয়েও বেশি টাকা পেয়েছে। সে যদি কিছুই না পেত তাহলে আমি নিজেই প্রতিবাদ করতাম। এই যে সে প্রেসে কথা বলছে। বাংলা ও ইংরেজি দুটোতেই ছাপা হচ্ছে। এখন গুগল ট্রান্সসেলেটর আছে। ওয়ার্ল্ড আর্চারির একটা টিমই আছে এগুলো ফলো করে রিপোর্ট করার। সে যে কয়েকটা শর্ত ভঙ্গ করেছে এজন্য তো আমরাও তাকে শোকজ করতে পারি।
প্রশ্ন : আপনি তাকে সাবধান করেছিলেন?
রাজীব উদ্দীন : আমি তাকে বলেছিলাম এগুলো তুই মেনে চল। তোকে কেউ আটকাতে পারবে না। আমি কোনও দিন আর্চারিকে নিজের সম্পত্তি ভাবিনি। কমিটির বাইরে কোনও কাজ করিনা। যারা আমার সঙ্গে কাজ করে তাদের জিজ্ঞাসা করে দেখেন। খরচ ছাড়া পাওয়ার কিছু নেই এখানে। কি স্বার্থ আছে আমার?
প্রশ্ন : রোমানের বিকল্পও তো তৈরি হলো না..।
রাজীব উদ্দীন : রোমানের বিকল্প তৈরির কথা অনেক বার উঠে এসেছে। সে তো কাউকে উঠতে দিত না। প্রতিটি আর্চারকে মানসিক অত্যাচার করতো।
প্রশ্ন : কি বলেন এসব?
রাজীব উদ্দীন : এই যে তার স্কোরের চেয়ে বেশি হচ্ছে রাম (রামকৃষ্ণ সাহা), রুবেল (হাকিম আহমেদ)। আমি মনে করি আর্চারদের মান বেড়েছে। রোমান আমার শত্রু না। রোমান নিজের জায়গা নিজে নষ্ট করেছে। রোমান যদি আক্রমণগুলো না করতো আমার সুবিধা হতো। আমি ট্যুরে গিয়ে আলাদা আলাদাভাবে ওর কথা প্রতিটি খেলোয়াড়কে জিজ্ঞাসা করেছি। অনেকে ওর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। কি বলেছে সেটা আপনাকে বলব না। যে উজবেকিস্তানকে আমি খেলা শিখিয়েছি ওরা অলিম্পিকের কোটা পায়। বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয়। ভাবা যায়?
প্রশ্ন : রোমান বারবার বলছেন, তাকে মানসিকভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে..।
রাজীব উদ্দীন : কেন মানসিক চাপে থাকবে না সে? আপনার ভাবি যদি আজ একটা বৃত্তি পায় সবচেয়ে বেশি খুশি হবো আমি। দিয়া বৃত্তি পেয়েছে। সে পায়নি। এটা নিয়ে যদি ওর মানসিক সমস্যা হয় তাহলে আমি সেটার সমাধান কিভাবে করবো? আমাদের কঠিন একটা সময়ে সে বিয়েটা করলো। এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের আগে জেদ ধরলো। আমাদের বাধ্য করালো। রোমানকে নিয়ে অনেক কাহিনী আছে। বলব না। অভিভাবক হিসেবে সব কথা বলা ঠিক হবে না। রোমান একজন মানসিক রোগী।
প্রশ্ন : এর মানে আপনি বলতে চাইছেন সে পাগল?
রাজীব উদ্দীন : এসব সাইকোলোজিকাল সমস্যা। বছরে দুয়েকবার হয়। অনেক পরিবারে সাইকো পেশেন্ট থাকে। ওদের পাওয়ার ইচ্ছা বেশি থাকে। ওরা ভাবতে থাকে সবই আমি পাবো। আর কেউ পাবে না। ও যখন ঢালীকে (ট্রেনিং ও ডেভলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ফারুক ঢালী) চিঠি দেয়, বলেছিলাম দেখা করিস। রুমে বসে অছি, সে আসেনি। আমি তো ওকে অত্যন্ত স্নেহ করি। ওর কারণে এক সাংবাদিক আমাকে বলেছেন আর্চারিকে বাপ দাদার সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছি। আমাকে অলিম্পিক (বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন) থেকে অন্যায়ভাবে বের করে দিয়েছে। প্রতিবাদ করেছি? করিনি। রোমানকে অনেক সুযোগ দিয়েছি। আমার দুটি চোখ বন্ধ হোক, আর্চারি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
প্রশ্ন : সেটা কেমন?
রাজীব উদ্দীন : আমি কোনও ব্যাখায় যাব না। প্রদীপের নিচের অন্ধকারটা জানার চেষ্টা করা ঠিক না। দোষে গুণে মানুষ। আমি নিজেও ধোয়া তুলসিপাতা না। এমনও পরিস্থিত তৈরি হয়েছে, দিয়ার সঙ্গে মিক্সড টিমে অন্য কেউ খেলতে চাইলে সে বাধা দিয়েছে। কিন্তু কোচ অনুমতি দিয়েছে। আমরা কিছু বলিনি। রোমানকেই বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোচ চেয়েছে, কি করবো? কিন্তু তার কথায় তো একটা ফেডারেশন চলতে পারে না। আমি রোমানের শাস্তি প্রত্যাহারের জন্য বার্লিন গিয়েছি। সেখানে গিয়ে প্রচন্ড জ্বরে আক্রান্ত হয়েছি। ভয়ঙ্কর অবস্থার মধ্যে ছিলাম। একা গিয়েছি, একা এসেছি। কেউ চাইবে না দেশের ক্ষতি হোক। আমারও অনেক দুঃখ বেদনা আছে। এত যে কষ্ট করি বদনাম ছাড়া সুনাম কেউ করেছে? আজ যদি রোমান নিজের বাবাকে অস্বীকার করে সেটা কতখানি যুক্তিসঙ্গত হবে?