Beta
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫

জীবনের হার্ডলস পেরোনো রোকসানা জিতলেন ট্র্যাকেও

১০০ মিটার হার্ডলসে সবার আগে রোকসানা।
১০০ মিটার হার্ডলসে সবার আগে রোকসানা।
[publishpress_authors_box]

রোকসানা বেগমের জীবনটাই যেন অ্যাথলেটিকসের হার্ডলস ইভেন্ট। কখনও দৌড়। কখনও লাফ। কখনও পানির মধ্যে দৌড়। জীবনের হার্ডলসজয়ী সেই রোকসানা এবার জিতলেন সত্যিকারের হার্ডলসের লড়াই। নোয়াখালীর অ্যাথলেট রোকসানা শনিবার ১৭তম জাতীয় সামার অ্যাথলেটিকসে ১০০ মিটার হার্ডলসে  ১৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতেও জাতীয় অ্যাথলেটিকসে সোনা জেতেন তিনি।

রোকসানার পরিবারের অবস্থা তত স্বচ্ছল না। তিনি বলেন, “আমার বাবা মাইক্রো গাড়ি চালক ছিলেন। তিন ভাই ও এক বোনের সংসারে এখন আমিই একমাত্র উপার্জন করি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ২০২০ সাল থেকে চাকরি করি। আর্মি থেকে পাওয়া বেতনেই নিজে চলি ও পরিবারকে সহযোগিতা করি।”

নোয়াখালীর সোনাপুরে রোকসানার বাড়ি। এই জেলার অন্য অ্যাথলেটদের মতো কোচ রফিক উল্লাহ মিলনের হাত ধরেই তার অ্যাথলেটিকসে আগমন, “মিলন স্যারই আমাকে অ্যাথলেটিকসে এনেছেন। আমি লং জাম্প দিয়ে অ্যাথলেটিকস শুরু করেছিলাম। স্যারের পরামর্শে হার্ডলসে আসি এবং ভালোই করছি।”

সোনা জয়ের পর রোকসানা।

নোয়াখালীর নেতিবাচক গ্রামের পরিবেশে অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে এই পর্যায়ে এসেছেন, “গ্রামে পরিবারকে অনেকে অনেক কথা বলত। মেয়ে সন্ধ্যার পর কোথা থেকে আসে। তারা তো আর জানতো বা বুঝতো না অ্যাথলেটিকস বা খেলাধুলা করি।”

অ্যাথলেটিকসে আসায় এখন রোকসানাকে অনেকে চেনেন। সম্মান মিললেও প্রাপ্তিটা পর্যাপ্ত নয়। এরপরও খানিকটা সন্তুষ্টি তার, “অ্যাথলেটিকসে না এলে হয়তো এতদিন বিয়ে হয়ে যেত। গ্রামে যেটা খুবই স্বাভাবিক।”

ওদিকে ছেলেদের ১১০ মিটার হার্ডলস জিতেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তানভীর ফয়সাল। তিনি গত দুই জাতীয় আসরেও এই ইভেন্টে সেরা ছিলেন। হার্ডলসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টে শ্রেষ্ঠত্ব থাকলেও তেমন আলোচনায় থাকেন হার্ডলাররা। এ নিয়ে খানিকটা আক্ষেপ ঝরে তানভীরের কন্ঠে, “আমরা অ্যাথলেট, ১০০ মিটার যারা করে তারাও। মিডিয়া, ফেডারেশন বা সবারই দৃষ্টি থাকে ১০০ মিটারের দিকেই।”

ছেলেদের ১১০ মিটার হার্ডলস জিতেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তানভীর ফয়সাল।

তরুণ অ্যাথলেটদের লক্ষ্য থাকে স্প্রিন্টার হওয়ার। হার্ডলারের স্বপ্ন দেখেন খুব কম জনই। তানভীর নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন হার্ডলার হিসেবে, ‘অ্যাথলেটিকস মানেই কষ্ট। সেটা আমার শরীর দেখেই বুঝতে পারছেন। হার্ডলসই আমার পছন্দ, আমি হার্ডলসই করে থাকি।”

এবার সামারের শ্রেষ্ঠত্বের মাধ্যমে তানভীরের এই ইভেন্টে হ্যাটট্রিক পূর্ণ হয়েছে। তবে তার কাছে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাই বেশি আনন্দের, “প্রথম যে কোনো কিছুই স্মরণীয়। তাই প্রথম যখন প্রথম হয়েছিলাম সেটাই বেশি আনন্দ দিয়েছিল।”

শনিবার অন্যান্য ইভেন্টের মধ্যে ৪০০ মিটার হার্ডলসে সেনাবাহিনীর নাজমুল হাসান রনি, একই সংস্থার বর্ষা খাতুন, নারী ডিসকাস থ্রোতে নৌবাহিনীর জাফরিন আক্তার, পুরুষ লং জাম্পে পুলিশের মনিরুল মোল্লা, শটপুটে নৌবাহিনীর গোলাম সারওয়ার সোনা জেতেন।

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত