দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে প্রধানমন্ত্রী ‘মিথ্যাচার’ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বাজারের নিয়ন্ত্রকরাই এখন সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
শনিবার নয়া পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “ডামি নির্বাচনের সিন্ডিকেট সরকার উদ্ভট কথাবার্তা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ সরকার এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির দায়ও চাপাচ্ছে বিএনপির ওপরে। শুক্রবার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেছেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সরকার উৎখাতে আন্দোলকারীদের কিছু কারসাজি আছে।”
তিনি বলেন, “উনার এ ধরনের কথা বলার অর্থ তার স্বেচ্ছাতন্ত্র পঁচে-গলে বিকৃত হয়ে গেছে। তাই মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা, অসত্য, বানোয়াট, ভিত্তিহীন কথা বলা ছাড়া শেখ হাসিনার আর কোনো পুঁজি নেই…। এ বক্তব্য বিকারগ্রস্ত মনেরই বহিঃপ্রকাশ। এ কারণে তিনি হাস্যকর মিথ্যাচার করছেন। তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন দ্রব্যমূল্য বেড়েছে সীমাহীন।”
রিজভী বলেন, “নিজেদের ব্যর্থতা-লুটপাট, চুরি-চামারি আর সেই অপকর্মের দায় নির্লজ্জের মতো বিএনপির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার অভ্যাস তাদের পুরনো। এই বৈশিষ্ট্য পাড়া-মহল্লায় বখাটেদের মতো।”
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের প্রাণ বাঁচানো দায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ডামি সরকার লোক দেখানো হাঁক-ডাঁক দিলেও বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। বাজারের নিয়ন্ত্রকরাই এখন সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রতিটি পণ্যের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এ অবস্থায় নিম্নআয়ের মানুষ শুধু নয় মধ্যবিত্তরাও চরম অসহায় হয়ে পড়েছে। চাল-ডাল-তেল-পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারছে না মানুষ। আর খাসির-গরুর মাংস তো একেবারে দূর আকাশের নক্ষত্র।”
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘‘উনার এমন সম্পদ বোধ হয় অনেক আছে। মানুষ নানা কথা বলে। কিন্তু রাজনীতির যে নৈতিকতা বা রাজনীতির যে ইতিবাচক যে সম্পদ…সত্য কথা বলা, সুশাসন দেওয়া, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এই পুঁজি তার শেষ হয়ে গেছে। এমনি বৈষয়িক পুঁজি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নানা কথা প্রচলিত আছে। এক এমপির যে ইংল্যান্ডে ২শ মিলিয়ন ডলারের যে সম্পদ পাওয়া গেছে, ২৬০টা বাড়ি…, চিন্তা করা যায়!”
তিনি যোগ করেন, “এটা তো এখন বাংলাদেশের গণমাধ্যমে এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিখ্যাত গণমাধ্যমে আছে। এই সম্পদের কাহিনী আলাদিনের কাহিনী, আরব্য ঔপন্যাসের কাহিনীকেও হার মানাচ্ছে।”
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হলেও তার চিকিৎসা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, “তার অবস্থা গুরুতর। কারাগারে তার চিকিৎসা হচ্ছে না, তাকে উপযুক্ত ব্যবস্থাপত্র ও ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না। তিনি হাঁটতেও পারছেন না। আমি অবিলম্বে তার সুচিকিৎসার আহ্বান জানাচ্ছি।”