তিনি অমিত প্রতিভাবান। রাজস্থান রয়্যালস এজন্যই ধরে রেখেছে রায়ান পরাগকে। কিন্তু সামর্থ্য অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারছিলেন না এই তরুণ।
গত আইপিএলে ৭ ম্যাচে করেছিলেন কেবল ৭৮ রান। তাই পরাগকে নিয়ে সমর্থকরা ট্রল করে বলত, ‘‘রাজস্থান রয়্যালসের ৫জন ব্যাটার আছে, ৫ জন বোলার আছে, আর আছে একজন পরাগ।’’
সেই পরাগ এবার ফিরে পেয়েছেন নিজেকে। প্রথম তিন ম্যাচে ১৬০.১৭ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১৮১ রান। বিরাট কোহলির রানও ১৮১। তাই সবচেয়ে বেশি রানের স্মারক কমলা টুপিটা পেয়েছেন ২২ বছরের এই তরুণ।
এবারের আইপিএলে পরাগের গড় ১৮১! টি-টোয়েন্টিতে যা অবিশ্বাস্য। প্রথম ম্যাচে আউট হয়েছিলেন ৪৩ রানে। এরপর তাকে আর আউট করা যায়নি। দিল্লির বিপক্ষে হার না মানা ৮৪’র পর কাল (সোমবার) মুম্বাইয়ে বিপক্ষে অপরাজিত ছিলেন ৫৪ রানে।
কীভাবে বদলে গেলেন পরাগ? ম্যাচ শেষে সম্প্রচারকারী চ্যানেলে তিনি জানালেন,‘‘সত্যি বলছি বিশেষ কিছুই করিনি। আগে যখন রান পেতাম না, তখন ভাবতাম অনেক বেশি। নানা রকম শট খেলতাম আর ব্যর্থ হতাম। এ বছর সাধারণ জিনিসটাই করছি। বল দেখছি আর মারছি।’’
ঘরোয়া টুর্নামেন্ট সৈয়দ মুস্তাক আলী ট্রফিতে এবার সবচেয়ে বেশি ৫১০ রান করেছিলেন পরাগ। ৪ নম্বরে নেমে তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১৮২.৭৯। রাজস্থানেও খেলছেন ৪ নম্বরেই।
ঘরোয়া ক্রিকেটে ছন্দে থাকাটা আইপিএলে সাহায্য করেছে বলে মনে করেন পরাগ, ‘‘ঘরোয়া ক্রিকেটে এরকম পরিস্থিতিতে আমি ৪ নম্বরে ব্যাট করি। যখন মুম্বাইয়ের বিপক্ষে জস ভাই (বাটলার) ও অ্যাশ ভাই (অশ্বিন) দ্রুত আউট হয়ে গেল তখন ভাবলাম, এমন পরিস্থিতিতে ঘরোয়া ক্রিকেটে যা করি, সেটাই করব।’’
রায়ান পরাগের জন্ম আসামের গুয়াহাটিতে। তার বাবা পরাগ দাসও ছিলেন প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটার। খড়গপুরে রেলওয়ে টুর্নামেন্টে এক সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনির দলে। সেই ধোনির বিপক্ষে এখন আইপিএল খেলছেন তার ছেলে রায়ান।
১৪ বছর বয়সে ভারতের সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক হতে পারত রায়ান পরাগের। কিন্তু আসামের কোচ চাইলেও নির্বাচকরা সেই ঝুঁকি নেননি। ২০১৭-১৮ মৌসুমে রঞ্জিতে অভিষেক হয় তার।
২০১৮ সালে পরাগ যুব বিশ্বকাপ জিতেছেন ভারতের হয়ে। এবারের আইপিএলে যে ছন্দে আছেন তাতে স্বপ্ন দেখতেই পারেন জাতীয় দলে খেলারও।