Beta
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫
Beta
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫

এস আলমের ‘অর্থ পাচার’ তদন্ত করছে বিএফআইইউ

বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক।
[publishpress_authors_box]

এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের যে অভিযোগ সংবাদমাধ্যমে এসেছে, তা খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

মঙ্গলবার ঢাকার মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যলয়ে বিএফআইইউর বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান বিএফআইইউ প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস।

তিনি বলেন, “সবশেষ আদালত থেকে যে রায় এসেছে, সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে। শুধু এটুকু বললাম।”

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে বিদেশে ১০০ কোটি ডলার পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে হাই কোর্ট একটি রুল দিয়েছিল। তবে গত ৫ ফেব্রুয়ারি তা খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ।

এতে ওই অভিযোগ তদন্তের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও বিএফআইইউ বা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলাদাভাবে তদন্তের সুযোগ থেকে যায়।

গত বছরের ৪ আগস্ট একটি ইংরেজি দৈনিকে এস আলমের বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তর নিয়ে ‘এস আলম’স আলাদিন’ ল্যাম্প’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।

সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে ৬৫ শতাংশ

বিএফআইইউ’র বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাংক খাতের সন্দেহজনক লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।

মাসুদ বিশ্বাস বলেন, “তার অর্থ এই নয় যে আগে সন্দেহজনক লেনদেন কম হতো। আগে ব্যাংককর্মীরা এ ধরনের লেনদেন প্রতিবেদন করতে ভয় পেত। এখন বিএফআইইউর কার্যক্রমে সেই ভয় অনেকটা দূর হয়েছে। এ কারণে প্রতিবেদন করা বেড়েছে।”

এবারের প্রতিবেদনে আগের বছরের মতো বিভিন্ন তথ্যের পাশাপাশি হুন্ডি, অবৈধ গেমিং/বেটিং, ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং ও ফরেক্স ট্রেডিং প্রতিরোধে বিএফআইইউ কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রমের বিষয়ে পৃথক অধ্যায় সংযোজন এবং একাধিক বিশ্লেষণমূলক তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থাগুলো মোট ১৪ হাজার ১০৬টি সন্দেহজনক লেনদেন বা কার্যক্রম প্রতিবেদন (এসটিআর/এসএআর) আকারে পাঠিয়েছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি।

মাসুদ বিশ্বাস বলেন, বিএফআইইউ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৩৩টি আর্থিক গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থায় পাঠায়, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি।

এছাড়া বিএফআইইউ ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকারি অন্যান্য সংস্থার সাথে ১ হাজার ৭১টি তথ্য বিনিময় করেছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৯ শতাংশ বেশি।

প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে সন্দেহজনক লেনদেনের সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৫৭১টি। ২০২০-২১ অর্থবছরে সন্দেহজনক লেনদেন ছিল ৫ হাজার ২৮০টি। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে এমন লেনদেন ছিল ৩ হাজার ৬৭৫টি। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ৩ হাজার ৫৭৩টি।

বিএফআইইউ প্রধান বলেন, “সব সন্দেহজনক লেনদেন (এসটিআর) অপরাধ নয়। লেন‌দেন সন্দেহজনক হ‌লে তদন্ত ক‌রি। এরপর য‌দি কো‌নো অপরা‌ধের তথ্য প্রমাণ ‌মি‌লে তাহ‌লে আমরা তা‌দের বিরু‌দ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে তা পাঠাই।”

অর্থ পাচার বন্ধে ব্যাংকের তৎপরতার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “অর্থ পাচারের ৮০ শতাংশ হ‌য় ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংক য‌দি এটি ব‌ন্ধে সহযো‌গিতা না করে, তাহলে নিয়ন্ত্রণ করা ক‌ঠিন। কারণ একবার অর্থ পাচার হ‌য়ে গেলে তা ফেরত আনা যায় না।”

পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা ও সহযোগিতার জন্য ১০ দে‌শের স‌ঙ্গে এমওইউর করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান মাসুদ বিশ্বাস।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিএফআইইউর তথ্যের ভিত্তিতে অর্থ পাচারের মামলা হয়েছে ৫৯টি। এর ম‌ধ্যে দুদক মামলা করেছে ৪৭টি, সিআইডি ১০টি এবং এন‌বিআরের বিশেষ সেল ২টি। এগুলো এখনও নিষ্পত্তি হয়‌নি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএফআইইউ নির্বাহী প‌রিচালক র‌ফিকুল ইসলাম, বৈ‌দে‌শিক মুদ্রা ও নী‌তি বিভা‌গের প‌রিচালক সা‌রোয়ার হো‌সেন, অ‌তি‌রিক্ত প‌রিচালক কামাল হোসাইন উপস্থিত ছিলেন। 

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত