জাহাজ কাটার সময় বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন হাতে আসার পর চট্টগ্রামের এস এন করপোরেশনের কার্যক্রম তিন মাস বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
একইসঙ্গে জাহাজভাঙা এই প্রতিষ্ঠানকে ২৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বিস্ফোরণে নিহত প্রত্যেক শ্রমিকের পরিবারকে ৭ লাখ টাকা এবং আহত শ্রমিকদের ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এস এন করপোরেশনের শীতলপুর ইউনিটে গত ৭ সেপ্টেম্বর জাহাজ কাটার সময় বিস্ফোরণে ১২ জন শ্রমিক-কর্মচারী গুরুতর আহত হন। তাদের মধ্যে ছয়জন মারা গেছেন।
বিস্ফোরণের পর তদন্ত কমিটি করে শিল্প মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ১৮ সেপ্টেম্বর শিল্প মন্ত্রণালয় এস এন করপোরেশনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়, যা গতকাল সোমবার প্রকাশ্যে আসে।
এস এন করপোরেশনের মালিক শওকত আলী চৌধুরী ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে তার তিনটি জাহাজভাঙা ইয়ার্ড রয়েছে।
এই তিন ইয়ার্ডে গত ১০ বছরে ১৬ জন শ্রমিক-কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে। তবে এবারই প্রথম প্রতিষ্ঠানটিকে শাস্তির আওতায় আনা হলো।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সঞ্জয় কুমার ঘোষের সই করা আদেশে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এস এন করপোরেশনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের দেওয়া নির্দেশনায় শ্রম আইন অনুযায়ী নিহত শ্রমিকদের ৭ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। গুরুতর আহত শ্রমিকদের ১২ মাসের মজুরি ও চিকিৎসা খরচ দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।
বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ আইন-২০১৮ এবং বিপজ্জনক বর্জ্য ও জাহাজভাঙার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা অনুযায়ী জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতের বিধান রয়েছে।
এর মধ্যে শ্রমিকদের পিপিই (সুরক্ষা পোশাক), হেলমেট, গ্লাভস ও গামবুট পরিধান অন্যতম। এছাড়া সম্পূর্ণ গ্যাস ও বিস্ফোরকমুক্ত করে জাহাজ কাটার কথাও উল্লেখ আছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে এসব নিয়ম না মানার উল্লেখ রয়েছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ সম্পর্কে এস এন করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বরকত উল্লাহ বলেন, “আমরা সরকারের আদেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। এরই মধ্যে নিহত শ্রমিকদের বিধি অনুযায়ী যাবতীয় পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”