উচ্চ দামে গরু-ছাগল বিক্রি নিয়ে আলোচনার মধ্যে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে ঢাকার সাদিক এগ্রোর ওয়েবসাইট।
বুধবার সকাল থেকে ঢোকা যাচ্ছে না তাদের ওয়েবসাইটে (https://sadeeqagro.com/)। সেখানে স্ক্রিনে দেখাচ্ছে, ওয়েবসাইটটি সাসপেন্ড অবস্থায় আছে।
অথচ একদিন আগেও তাদের এই ওয়েবসাইটে ঢোকা যাচ্ছিল। তাদের বিভিন্ন জাতের এবং দামের গরুর ছবিও দেখা যাচ্ছিল।
ওয়েবসাইটে কী সমস্যা, সে বিষয়ে সাদিক এগ্রোর কোনও বক্তব্য জানা না গেলেও তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নানা কারণেই বন্ধ হতে পারে ওয়েবসাইট। এর মধ্যে কারিগরি ত্রুটি যেমন থাকতে পারে, তেমনি ওয়েবসাইটের মালিক চাইলেও বন্ধ (অফলাইন) করে রাখতে পারেন। তবে এতে সাহায্য নিতে হবে ওয়েবসাইটটির হোস্টিং কোম্পানির।
সকাল সন্ধ্যার তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ দেখভালকারী শামসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, “নানান কারণেই ওয়েবসাইটে এরকম হতে পারে। অনেক সময় হোস্টিং মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে এমন হয়। এছাড়াও যার ওয়েবসাইট সে হোস্টিং কোম্পানির সাথে কথা বলে ওয়েবসাইটটিকে অফলাইন রাখতে পারে।”
সাদিক এগ্রোর ওয়েবসাইটির হোস্টিং কোম্পানি হিসাবে রয়েছে এক্সনহোস্ট।
তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোম্পানিটির বিপণণ বিভাগের হাসান জায়েদ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “অনেক সময় বিলিং সমস্যা থাকে। বকেয়া থাকলে রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে আমরা এটা করে থাকি। এছাড়া টেকনিক্যাল সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাঝে মধ্যেই ম্যালওয়্যার আক্রমণ হতে পারে। তাতে এ ধরনের সমস্যা হয়। এ ধরনের সমস্যা হলে আমাদের টিমের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা ঠিক করে দিই।”
সাদিক এগ্রোর কী ধরনের সমস্যা হয়েছে- প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা ২৫ হাজার ওয়েবসাইট মেনটেইন করি। ফলে কেউ আমাদের সাথে যোগাযোগ না করলে আমাদের পক্ষে এটা বলা কঠিন।”
তবে জায়েদ স্বীকার করেন, কেউ যদি চায় তাহলে হোস্টিং কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে ওয়েবসাইট অফলাইন করতে পারেন।
বিষয়টি জানতে ফোন দেওয়া হয় সাদিক এগ্রোর মালিক ইমরান হোসেনকে। কিন্তু তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
অতীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা সংবাদমাধ্যমে কথা বলতে খুবই আগ্রহী দেখা যেত সাদিক এগ্রোর মালিক ইমরানকে।
এই কোরবানির ঈদের আলোচিত ছাগলটি তার খামারের। ১৭৫ কেজি ওজন, ৬২ ইঞ্চি উচ্চতার ওই ছাগল ১২ লাখ টাকায় কেনার ঘোষণা দিয়ে ভাইরাল হন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে এক তরুণ।
সেই ছাগলের রশি ধরে টান পড়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের, যখন জানা যায় এই তরুণ তারই ছেলে। ছেলের ছাগলকাণ্ডের পর সম্পদ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এনবিআরের পদ হারিয়েছেন মতিউর। তার সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
এরসঙ্গে সাদিক এগ্রোর ব্রাহমা গরু নিয়েও শুরু হয় আলোচনা। কারণ এই গরু আমদানি নিষিদ্ধ হলেও তা কীভাবে সাদিক এগ্রোর পেল, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। সাদিক এগ্রোকে নিয়ে অন্য খামারিরাও কথা বলতে শুরু করেছে।
এই পরিস্থিতিতে গত কয়েকদিন সাদিক এগ্রোর মালিক ইমরানকে সংবাদমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে না। খুব পরিচিত না হলে ধরছেন না ফোন। মোহাম্মদপুর খামারে গিয়ে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।
ওয়েবসাইট বন্ধ হলেও সাদিক এগ্রোর নামে খোলা ফেইসবুক পাতা সচল পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেখানে ২৪ জুনের পর নতুন পোস্ট নেই।