ঋণ খেলাপি ও অর্থ পাচার বন্ধে সরকারকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান সালমা ইসলাম।
এই শিল্পোদ্যোক্তা রবিবার সংসদে আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, “খেলাপি ঋণ লাগামহীন গতিতে বেড়েই চলছে। কোনোভাবেই এর লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না।
“হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। ঋণ খেলাপি, ব্যাংক লুটেরা এবং অর্থ পাচারকারীরা আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিচ্ছে।”
তাদের কোনোভাবেই ছাড় না দিয়ে সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই আহ্বান জানান।
সালমা বলেন, “বর্তমানে আমাদের সামনে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ। একটি হচ্ছে দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতি কমানো। আরেকটি হচ্ছে সুশাসন নিশ্চিত করা এবং শেষটি হচ্ছে আন্তর্জাতিক কূটনীতি বাংলাদেশের পক্ষে নিয়ে আসা।”
দ্রব্যমূল্য কমাতে চাইলে শুধু অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই কাজ হবে না দাবি করে তিনি বলেন, “ডলার সংকটের সমাধান করতে হবে। কারণ ডলার না থাকলে পণ্য আমদানি করা যাবে না। আর তাতে বাজারে পণ্যের সরবরাহ না থাকলে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াবে।”
সুশাসন নিশ্চিত করতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বানও জানান জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য।
কূটনীতি নিয়ে তিনি বলেন, “আমেরিকা, চীন ও ভারত- এই তিন দেশই আমাদের রাজনীতি ও অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত। সুতরাং কূটনীতিতে ভারসাম্য দরকার। জিএসপি সুবিধা যাতে ব্যাহত না হয়, সেজন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সফল কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে।”
ব্যাংক ঋণে সুদের হার দুই অঙ্কের কোঠায় উঠে যাওয়ায় দেশে শিল্পায়ন বাধাগ্রস্ত হবে বলে সতর্ক করেন এই শিল্পোদ্যোক্তা।
তিনি বলেন, “এমনিতেই ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে আমদানি ব্যয় হু হু করে বাড়ছে। এ অবস্থায় শিল্প ঋণের সুদের হার ওপেন করে দেওয়া মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে।”
বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে সালমা বলেন, “অগ্নিকাণ্ডে অনেকগুলো তাজা প্রাণ ঝরে পড়ল। এর দায় কে নেবে? বলা হচ্ছে, ভবনগুলোতে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের অভাব ছিল। কিংবা ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড মানা হয়নি।
“এসব বলে প্রতিটি দুর্ঘটনায় দায় এড়ানোর চেষ্টা চলে। এভাবে প্রাণহানি রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর কী পদক্ষেপ নিচ্ছে? দেশের মানুষ তা জানতে চায়।”
