সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার সন্ধ্যায় শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম মামুনুর রশিদের আদালত তাদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলী হত্যা মামলায় মঙ্গলবার ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে এ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক মো. সজিব মিয়া সন্ধ্যায় আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজত চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক।
এসময় আদালন প্রাঙ্গণে ছিল পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা।
গত ১৬ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে চলা আন্দোলনে ঢাকা নিউমার্কেট এলাকার একটি পাপোষের দোকানের কর্মচারী শাহজাহান আলীকে হত্যার অভিযোগে তার মা আয়শা বেগম একটি মামলা করেন। সেখানে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
সেই মামলাতেই মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হন সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের এই দুই প্রভাবশালী।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ পান ঢাকা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও শিল্পপতি সালমান ফজলুর রহমান ওরফে সালমান এফ রহমান। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পরও তাকে একই পদে বহাল রাখা হয়।
এর আগে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা) আসন থেকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আনিসুল হক। সেবছরই তিনি পান আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব। পরে একাদশ ও দ্বাদশ সংসদেও তিনি একই দায়িত্বে ছিলেন।
তীব্র ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। সঙ্গে ছিলেন তার বোন শেখ রেহানাও।
এই খবর ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন স্থানে থানায় হামলা-ভাঙচুর ও হত্যার ঘটনা ঘটে। গণভবন, ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনায় চালানো হয় হামলা-লুটপাট। ভেঙে ফেলা দেশের বেশিরভাগ এলাকায় নির্মিত শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষ্কর্য, ম্যুরাল। হামলার শিকার হন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ।
সেই দিন থেকে আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে দ্বাদশ সংসদের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। ৫ আগস্টের পর তাদের কাউকেই প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
এর মধ্যেই দেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় আটক হন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সবশেষ সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের গ্রেপ্তারের খবর আসে।