কক্সবাজারে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতকে সব শ্রেণি, পেশা, ধর্ম ও লিঙ্গের মানুষের জন্য সমানভাবে নিরাপদ করার দাবিতে আয়োজন করা হয়েছিল ‘সমুদ্র সন্ধ্যা’র।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা বাজতেই সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকায় শুরু হয় এই আয়োজন।
গান ও আড্ডায় যোগ দিতে ধীরে ধীরে আসতে শুরু করেন কক্সবাজারের সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীদের পাশাপাশি নানা শ্রেনি-পেশার মানুষ।
সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ আয়োজন। এর ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি’, ‘মুক্তির মন্দিরে সোপান তলে’ সহ বেশকিছু গানে কণ্ঠ মেলার উপস্থিত সবাই। ছিল একক সংগীত পরিবেশনাও।
সবার মুখে ছিল নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ এবং পর্যটনের জন্য নিরাপদ সৈকতের দাবি।
সম্প্রতি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কয়েকজন নারী পর্যটককে হেনস্তার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, রাতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের চেয়ারে একা বসে থাকা এক তরুণীকে লাঠি হাতে ঘিরে ধরেছেন চার যুবক। তারা প্রথমে ওই তরুণীর পরিচয় এবং কেন রাতে একা সৈকতে অবস্থান করছেন জানতে চান। ‘তরুণীটি’ ঘুরতে আসার কথা জানালে তারা সন্তুষ্ট হননি।
এক পর্যায়ে যুবকরা সৈকতের সামাজিক পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ তুলে ওই তরুণীকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন।
আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, আরেক তরুণীকে ঘিরে রয়েছে কিছু মানুষ। তাদের মধ্যে লাঠি হাতে আছেন কয়েকজন যুবক।
ওই যুবকদের মধ্যে একজন লাঠি দেখিয়ে ওই তরুণীকে নির্দেশ দিচ্ছিলেন কান ধরে উঠবস করতে। পরে ভয়ার্ত ওই ‘তরুণী’ উঠবস করতে থাকলে ঘিরে থাকা লোকজনকে অশ্লীল মন্তব্য করতে শোনা গেছে ভিডিওতে।
আরেকটি ভিডিওতে সৈকতের ট্যুরিস্ট পুলিশ বক্সে কয়েকজন যুবকের সঙ্গে ভুক্তভোগী এক তরুণীসহ আরও একজনকে দেখা যায়।
এসব ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তৎপর হয় পুলিশ। ভিডিও দেখে অভিযুক্ত ফারুকুলকে শনাক্ত করার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এব্যাপারে মামলাও হয়েছে। এরই মধ্যে ফারুকুলকে পুলিশ একদিনের রিমান্ডেও নিয়েছে।
মূলত নারী হেনস্তার এসব ঘটনার প্রতিবাদেই আয়োজন করা হয় সমুদ্র সন্ধ্যা।