Beta
শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

মেয়ের দ্বিতীয় বিয়েতে ক্ষুব্ধ হয়ে সৌরভকে খুন করেন ইলিয়াস : পুলিশ

ss-saurav murder-4-6-24
[publishpress_authors_box]

মেয়ে ইসরাত জাহান ইভার দ্বিতীয় বিয়ে মানতে পারেননি বাবা ইলিয়াস আলী। তাই তিনি ইভার দ্বিতীয় স্বামী ও ভাতিজা ওমর ফারুক সৌরভকে (২৪) বাসায় ডেকে নিয়ে হত্যা করেন। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে ময়মনসিংহের জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহম্মেদ ভূঁইয়া এ কথা জানিয়েছেন।

রবিবার ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মনতলা ব্রিজের নিচে সুতিয়া নদী থেকে সৌরভের চার খণ্ড দেহাবশেষ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন বিকালে পুলিশ নিহতের পরিচয় শনাক্ত করে।

নিহত সৌরভের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারাটি গ্রামে। তবে তার পরিবার স্থায়ীভাবে ঢাকায় বসবাস করে। সৌরভ ঢাকার গুলশানের বেসরকারি প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ইংরেজি সাহিত্যের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় নিহত সৌরভের বাবা ইউসুফ আলী রবিবার রাতে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। সোমবার রাতে তারাটি গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে সৌরভের দাফন সম্পন্ন করা হয়।

মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে ময়মনসিংহের জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহম্মেদ ভূঁইয়া বলেন, “ইসরাত জাহান ইভা ও ওমর ফারুক সৌরভ আপন চাচাতো ভাই-বোন। তিন বছর আগে কানাডায় অধ্যয়নরত একজনের সঙ্গে ইভার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ইভাকে বাংলাদেশে রেখে তার স্বামী কানাডায় চলে যায়।

“ইভা তখন তার চাচাতো ভাই ওমর ফারুক সৌরভের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়, বিষয়টি উভয়ের পরিবার জানতো। গত ৯ মে ইভা ঢাকায় তার এক বান্ধবীর বাসায় সৌরভকে বিয়ে করে; সেই বিয়ে মেনে নেয়নি ইভার বাবা ইলিয়াস আলী। ক্ষুব্ধ বাবা ইভাকে ১৬ মে কানাডায় পাঠিয়ে দেন।”

পুলিশ সুপার আরও বলেন, “গত শনিবার সৌরভ ইভার প্রথম স্বামীর বাবা চিকিৎসক আমিনুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে ময়মনসিংহ আসেন। সৌরভ আমিনুল ইসলামের কাছে তার বিয়ের বিষয়টি খোলাসা করে সহযোগিতা চান। আমিনুল ইসলাম এ কথা ইলিয়াস আলীকে জানালে সে তার ছেলে মৃদুলকে দিয়ে সৌরভকে বাসায় ডেকে নেন।

“সৌরভ বাসায় গেলে ইলিয়াস আলী (৫৫) ও তার শ্যালক আহাদুজ্জামান ফারুক (৩০) প্রথমেই তাকে মাথায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। এরপর চাপাতি দিয়ে তার দেহ চার খণ্ড করে। এরপর তারা গাঙ্গিনারপাড় থেকে একটি নতুন লাগেজ কিনে তাতে খণ্ডিত মরদেহ ভরে নদীতে ফেলে দেয়।”

ঘটনার পরই ইলিয়াস আলী ও তার পুরো পরিবার পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই ঘটনায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ সোমবার ফারুককে ঢাকা থেকে এবং ইলিয়াস আলীকে ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী উপজেলা ধোবাউড়া থেকে গ্রেপ্তার করে। এই ঘটনায় সৌরভের দেহ বহনকারী প্রাইভেটকারসহ চালক আব্দুল হান্নানকেও (৬৫) গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, “সৌরভের পরিচয় যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শনাক্ত করতে না পারে, সেজন্য ইলিয়াস আলী সৌরভের হাতের আঙুল নষ্ট করে দেন। লাগেজ কেনার সূত্র ধরে অপরাধীদের শনাক্ত করা হয়েছে, তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সৌরভের বাবা ইউসুফ আলী বলেন, “ইলিয়াস আলী আমার ছোট ভাই; তাকে আমি বাবার স্নেহ দিয়ে বড় করেছি। আজকে আমার ছেলেকে চার খণ্ডে হত্যা করে সে তার প্রতিদান দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।”

ইলিয়াস আলী ময়মনসিংহ নগরীর গোহাইলকান্দি একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। তিনি সেনবাহিনীর নায়েক পদ থেকে অবসরে যান। আর বড় ভাই ইউসুফ আলী পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। তিনি ডাক বিভাগে কর্মরত রয়েছেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত