Beta
মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

এস আলমের অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্তে রইল না বাধ্যবাধকতা

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম।
এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম।
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুরসহ বিদেশে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছে আপিল বিভাগ। সোমবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

হাইকোর্টের আদেশ বাতিল চেয়ে সাইফুল আলম ও তার স্ত্রীর করা লিভ টু আপিলের শুনানি শেষে এ আদেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। তবে আদালত বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট চাইলে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে পারবে।

আদালতে এস আলমের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও মোহাম্মদ (এম) সাঈদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান এবং রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক ‍সুমন।  

আদেশের বিষয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন সাংবাদিকদের বলেন, এস আলমের অর্থপাচারের বিষয়টি অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

তিনি বলেন, তবে সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট মনে করলে এ বিষয়ে তারা অনুসন্ধান করতে পারবে।

গত বছরের ৪ আগস্ট একটি ইংরেজি দৈনিকে এস আলমের বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তর নিয়ে ‘এস আলম’স আলাদিন’স ল্যাম্প’ (বাংলা সংস্করণে ‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’) শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এরপর ৬ আগস্ট পত্রিকাটির সেই প্রতিবেদনের বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। হাইকোর্ট বিষয়টি শুনানি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন এবং অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দেন।

পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন আলম দম্পতি।

গত ২৩ আগস্ট চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হাইকোর্টের আদেশের উপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে, শুনানি শেষে আদালত হাইকোর্টের রুলটি খারিজ করে দেন। এর ফলে অর্থপাচারের অনুসন্ধানের নির্দেশনা আর রইল না।  

অর্থপাচারে নিয়ে পত্রিকার প্রতিবেদনে যা ছিল

প্রতিবেদনে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে কমপক্ষে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। যদিও বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত কোনও অনুমতি তিনি নেননি।

বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের বাইরে বিনিয়োগের জন্য এ পর্যন্ত ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিলেও চট্টগ্রামভিত্তিক বিশাল এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম সেই তালিকায় নেই। কাগজপত্রে আরও দেখা যায়, গত এক দশকে সিঙ্গাপুরে এস আলম অন্তত দুটি হোটেল, দুটি বাড়ি, একটি বাণিজ্যিক স্পেস ও অন্যান্য যে সম্পদ কিনেছেন সেখানেও বিভিন্ন উপায়ে কাগজপত্র থেকে তার নাম সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নথি অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশ থেকে ৪০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে বিনিয়োগের জন্য নেওয়া হয়েছে।

তবে এই পরিমাণ অর্থ ২০০৯ সালের পর সিঙ্গাপুরে এস আলমের কেবল দুটি হোটেল ও একটি বাণিজ্যিক স্পেস কেনা ৪১১ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের দশ ভাগের এক ভাগ মাত্র।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নথিতে আরও দেখা যায়, এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বৈধ উপায়ে সিঙ্গাপুরে ১ লাখ ৭ হাজার মার্কিন ডলার পাঠিয়েছে, যার মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানও এস আলমের মালিকানাধীন নয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত