ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুলের প্রথম শ্রেণীর ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
ভর্তি বাতিল থাকা শিক্ষার্থীদের আপিলের আবেদন খারিজ করে রবিবার এ আদেশ দেয় প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
এ আদেশের ফলে ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল থাকল বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম। আর রিট আবেদনকারী অভিভাবকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মনজুরুল হক ও ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান।
রাফিউল সাংবাদিকদের বলেন, “হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুটি আবেদন ছিল। আবেদন দুটির শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আজকে ডিসমিস (খারিজ) করে দেন। এরফলে ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলই থাকল। তবে অপেক্ষমাণ থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে নতুন ভর্তির সুযোগ পাবে। আর যাদের ভর্তি বাতিল হল, তারা আর ভর্তি হতে পারবে না।”
গত ২১ মে ভিকারুননিসা স্কুলের প্রথম শ্রেণীর ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে রায় দিয়েছিল হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অপেক্ষায় থাকা শিক্ষার্থীদের ১৫ দিনের মধ্যে ভর্তি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
রায়ে ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের অনলাইন সিস্টেমে বা ভর্তির ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম ছিল কি না, তা তদন্তের নির্দেশ দিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয় বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায় বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীরা। রবিবারের আদেশের মধ্য দিয়ে এর চূড়ান্ত নিষ্পত্তি ঘটল।
এর শুরুটা হয়েছিল গত ১৪ জানুয়ারি, রাজধানীর নামি এই স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের নিয়ম না মানার অভিযোগ এনে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি-ইচ্ছুক দুই শিক্ষার্থীর মায়ের রিট আবেদন থেকে।
ওই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়। হাইকোর্টের আদেশে ২৮ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) একটি স্মারক হাইকোর্টে উপস্থাপন করে।
তাতে ভিকারুননিসার চারটি শাখায় ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে বিধিবহির্ভূতভাবে ভর্তি হওয়া ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে জরুরি ভিত্তিতে মাউশিকে অবহিত করতে বলা হয়।
সেদিন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট মাউশির ওই সিদ্ধান্ত (স্মারক) বাস্তবায়ন (কমপ্লায়েন্স) বিষয়ে হলফনামা আকারে ভিকারুননিসার অধ্যক্ষকে ৬ মার্চের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়।
মাউশির নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণির ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে বলে আদালতকে জানায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। এরপরে হাইকোর্ট ১৬৯ শিক্ষার্থীর শূন্য আসনে অপেক্ষমান তালিকা থেকে ভর্তির নির্দেশ দিয়েছিল।
এরপর বিষয়টি আপিল বিভাগে গেলে সর্বোচ্চ আদালত ওই শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা জারি করে দুই মাসের মধ্যে হাইকোর্টকে এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেয়। সেই আদেশের ধারাবাহিকতায় রুল শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করেছিল হাইকোর্ট। আর সেটাই বহাল থাকল।
