Beta
শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪

কোটা : আদালতে শুনানির অপেক্ষা, শাহবাগে দুই পক্ষই

মিছিল নিয়ে সকালে শাহবাগে গিয়ে অবস্থান নিয়েছে কোটাবিরোধীরা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
মিছিল নিয়ে সকালে শাহবাগে গিয়ে অবস্থান নিয়েছে কোটাবিরোধীরা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানির জন্য বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

বুধবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ সময় নির্ধারণ করে দেন। শুনানি শেষে আদেশ দেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

এদিকে, মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকার শাহবাগে অবস্থান নিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ও বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। অন্যদিকে কোটাবিরোধীরাও সকাল পৌনে ১১টার দিকে মিছিল নিয়ে সেখানে গিয়ে অবস্থান নিয়েছে।

সকাল পৌনে ১১টার দিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ও বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের দাবিতে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের বিপরীত পাশে রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে। একই সময়ে রাস্তার বিপরীত পাশে অবস্থান করতে দেখা গেছে কোটাবিরোধীদের।

এর আগে বুধবার সকালে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আবেদনটি আপিল বিভাগের তালিকায় এলে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, “হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে একটি আবেদন করা আছে। গতকাল (মঙ্গলবার) একটি আবেদন হয়েছে। দুটি আবেদন যেন এক সঙ্গে শুনানি করা হয়। এখনও রায়ের কপি আমরা পাইনি।” 

এ সময় রিটকারীদের পক্ষের আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী আদালতের কাছে শুনানির জন্য সময় চান। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, “হাইকোর্টের রায় তো আপনাদের পক্ষেই আছে। তাহলে আপনারা চুপ থাকেন। দেখেন আদালত কি করে।”

পরে বেলা সাড়ে ১১টায় শুনানি ও আদেশের জন্য সময় নির্ধারণ করে দেয় আপিল বিভাগ।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পাশাপাশি আইনি লড়াইয়ে যুক্ত হতে ঢাবির দুই শিক্ষার্থী আবেদন করেন। চেম্বার আদালতের অনুমতি নিয়ে মঙ্গলবার এ আবেদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভুইয়া ও উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান। এ আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ও বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ শাহবাগে অবস্থান নিয়েছে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা

মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের এক রিটের শুনানি শেষে গত ৫ জুন কোটা পুনর্বহাল করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেয়। পরে রাষ্ট্রপক্ষ রায়টি স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত গত ৯ জুন এ আবেদনটি শুনানির জন্য ৪ জুলাই নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। গত ৪ জুলাই হাইকোর্টের রায় স্থগিত না করে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল দায়ের করতে বলে সর্বোচ্চ আদালত।

২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতি বাতিল করার আগ পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষণ করা হতো। এরমধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ছিল ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ কোটা।

এই কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ছয় বছর আগে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন গড়ে তোলেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। সে সময় এ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন নুরুল হক নুরসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে ২০১৮ সালের ২ জুন একটি কমিটি করে সরকার। এই কমিটি সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোনও কোটা না রেখে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নিয়ম চালু করতে ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ জমা দেয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার পর ৩ অক্টোবর তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হলে সেখানে কোটা বাতিলের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। পরদিন ৪ অক্টোবর কোটা পদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করেন জনপ্রশাসন সচিব।

প্রায় ছয় বছর পর এক রিটের প্রেক্ষিতে গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা সেই পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। তবে হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করলেও সেই পরিপত্র পুনর্বহালসহ কয়েকটি দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা আন্দোলনে নামেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত