যুক্তরাষ্ট্রে ৫ নভেম্বরের নির্বাচন ঘিরে সহিংসতার আশঙ্কায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত কর্মীদের দেওয়া হয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষণ।
বিশেষজ্ঞরা কয়েকদিন আগে সতর্ক করে বলেছেন, হেরে গেলে ২০২০ সালের মতো এবারও ভোটের পর সহিংসতায় জড়াতে পারে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা। তারা এবার ভোট চলাকালে ব্যালট বাক্স পাহারা দেবে, এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে ভোট কেন্দ্রগুলোতে সহিংসতার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
তার ওপর ভোটের ফল যাই হোক না কেন, গতবারের মতো ট্রাম্প এবার কোনও ঝামেলা করবেন না, সে বিষয়ে কোনও প্রতিশ্রুতি দেননি। কোনও প্রমাণ ছাড়া তিনি বলছেন, ডেমোক্রেটরা তার প্রতিপক্ষ কমলা হ্যারিসকে ক্ষমতায় বসাতে ‘এবারও জালিয়াতি’ করবে।
২০২০ সালের নির্বাচনে প্রতিপক্ষ ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে হার স্বীকার করতে চাননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভোটে কারচুপি হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে সমর্থকদের উত্তেজিত করেন তিনি। কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে মামলাও ঠুকে বসেন। অথচ সেবছরের নির্বাচনে ভোটে কারচুপির অভিযোগের পক্ষে শেষ পর্যন্ত কোনও প্রমাণ হাজির করতে পারেননি রিপাবলিকান পার্টির এই বর্ষীয়ান নেতা।
ওয়াশিংটন ডিসিতে কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি অধিবেশন চলাকালে যে ভয়াবহ তাণ্ডব চালায় ট্রাম্পের সমর্থকরা, তার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছিল দু’ মাস আগে।
আগের বছরের নভেম্বরে শুরুতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফল ঘোষণায় ট্রাম্প সমর্থকরা যখন দেখলেন, তাদের নেতা হেরে যাচ্ছেন, তখন তারা বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় হামলা হয় ক্যাপিটল হিলে।
এবার যাতে এ ধরনের কোনও পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেজন্য আগে থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ভোটগ্রহণের সময় কোনও ধরনের আক্রমণাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা কীভাবে সামাল দেওয়া যাবে, এ নিয়ে ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। পাশাপাশি ভোট চলাকালে কেউ গুলি চালালে, সেক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে তাদের মহড়া দেওয়া হয়েছে। আগে থেকে সম্ভাব্য হুমকি চিহ্নিত করার প্রশিক্ষণও তারা নিয়েছেন।
এছাড়া ভোটকেন্দ্রগুলোতে রাখা হয়েছে বুলেটপ্রুফ কাচ ও স্টিলের দরজা। ওয়াশিংটন ডিসির নিরাপত্তা নিয়ে সেখানকার পুলিশ প্রধান পামেলা স্মিথ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে জানান, ভোটের সময় তিন হাজারের বেশি পুলিশ কর্মকর্তা ১২ ঘণ্টা করে দায়িত্বে থাকবেন।
সম্ভাব্য হুমকি বিবেচনায় নিয়ে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত অ্যারিজোনার ম্যারিকোপা কাউন্টিতেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালের ৩ নভেম্বর এই কাউন্টির কেন্দ্রীয় তথ্য সংগ্রহ কেন্দ্রের বাইরে বিপুল সংখ্যক মানুষ ভিড় করেছিল। ভেতরে তখন চলছিল ভোটগণনা। তাদের হট্টগোলের কারণে কর্মীদের ভোটগণনা করতে সমস্যা হচ্ছিল। এবার এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।