Beta
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

শেখ হাসিনার জন্য নতুন উপাধি নিয়ে দেশে ফিরলেন শফিক রেহমান

শফিক রেহমান।
দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে শফিক রেহমান।
[publishpress_authors_box]

শেখ হাসিনার আমলে মামলায় জড়িয়ে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছিল সাংবাদিক শফিক রেহমানকে, জামিনে মুক্তি পেয়ে ছেড়েছিলেন দেশ। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর ফিরেছেন তিনি, সঙ্গে পতিত শাসকের একটি উপাধিও দিয়েছেন।

ছয় বছর পর রবিবার দেশে ফিরে শাহজালাল বিমানবন্দরে শফিক রেহমান সাংবাদিকদের বলেন, “দেশে ফিরে শেখ হাসিনাকে খুব অনুভব করছি। তার পিতা ও তাকে উপাধি দিয়েছি। একজন বীর পলাতক শ্রেষ্ঠ, আরেকজন বীর পলাতক উত্তম।”

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তার ছেলে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সজীব ওয়াজদে জয়কে অপহরণ করে হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে ২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল ঢাকার ইস্কাটন গার্ডেনের বাসা থেকে শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ২০১৮ সালে তিনি যুক্তরাজ্যে চলে যান।

দেশে ফেরার সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী তালেয়া রেহমান এবং বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান ভুঁইয়া মিল্টন। জয়কে অপহরণের ষড়যন্ত্রের এই মামলায় মিল্টনও আসামি।

তাদের শুভেচ্ছা জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক ও বিএনপির নেতা।

সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, সরদার ফরিদ আহমেদ, তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু, আলফাজ আনাম, মাহবুব আলম, শাহীন চৌধুরী, ফেরদৌস মামুন, সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ। বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন শামীমুর রহমান শামীম, মোস্তাফা-ই জামান সেলিম, সানোয়ার আলম।

‘শফিক রেহমান প্রত্যাবর্তন কমিটি’র সজীব ওনাসিস, জাহিদুল ইসলাম রনি, রাজীব আহসান চৌধুরী পাপ্পু, হাসানুর রহমানও ছিলেন বিমানবন্দরে।

যে আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে, সেই আন্দোলন দমনে তার সরকারের দমন-পীড়নে কয়েকশ মানুষ নিহত হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সেই বিচারের উদ্যোগ এরই মধ্যে নিয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

সবাইকে ‘বিজয়ের শুভেচ্ছা’ জানিয়ে শফিক রেহমান বলেন, “আমি তার মৃত্যুদণ্ড চাই না। আমি মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে।

“ব্যক্তি পূজা বন্ধ করুন। ব্যক্তি পূজা ইসলাম ধর্মের বিরোধী। দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”

দর্শন শাস্ত্রের পণ্ডিত অধ্যাপক সাঈদুর রহমানের ছেলে শফিক রেহমান সাংবাদিকতার জন্য এইচ এম এরশাদের সামরিক শাসনামলে একবার দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন।

তখন সাপ্তাহিক পত্রিকা হিসাবে যায়যায়দিন সম্পাদনা করতেন তিনি। ওই পত্রিকার মাধ্যমে বাংলাদেশে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস পালনে তার ছিল প্রধান ভূমিকা।

পরে যায়যায়দিন দৈনিক আকারে তিনি বের করেছিলেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে। তবে বিএনপি সরকারের বিদায়ের পর ওই পত্রিকা তার হাতছাড়া হয়ে যায়। পরে তিনি মৌচাকে ঢিল নামে একটি পত্রিকা করে করে আসছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রে থাকা জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে ঢাকার পল্টন থানায় ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট মামলাটি করেছিলেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান। পরে শফিক রেহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় আদালতে।

অন্য আসামিরা হলেন- আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন, জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, তার ছেলে রিজভী আহাম্মেদ সিজার।

মামলায় শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়। মিল্টনের বিরুদ্ধে আনা হয় অর্থায়নের অভিযোগ। রিজভীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইয়ের কাছ থেকে সজীব ওয়াজেদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের অভিযোগ আনা হয়।

মিল্টন শনিবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুক্তরাজ্যে যান। এরপর শফিক রেহমানের সঙ্গে দেশে ফিরলেন তিনি। 

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত