দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনে মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
সোমবার ঢাকা মহানগর জেষ্ঠ্য বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
আরও যাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তারা হলো- সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের ওরফে হিরু, কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজি ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব গত বছরের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হয়ে রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছিলেন। এর আগে থেকে নানা ব্যবসায়ও জড়িয়ে ছিলেন তিনি।
গত বছরের আগস্টে সরকার পতনের সময় দেশের বাইরে ছিলেন সাকিব; সেই থেকে আর দেশে ফেরেননি তিনি। এর মধ্যে অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের মামলায়ও আসামি করা হয় তাকে।
গত মার্চে চেক প্রতারণার এক মামলায় তার সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেয় আদালত। রাজনীতিক ক্ষমতায় পালাবদলে সাকিব চাপে পড়ার পর গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর সাকিব আল হাসান এগ্রো ফার্মের মালিক হিসাবে তার বিরুদ্ধে চেক প্রতারণার মামলাটি করে আইএফআইসি ব্যাংক।
সেই মামলায় সমন জারির পরও আদালতে হাজির না হওয়ায় গত ১৮ ডিসেম্বর আদালত সাকিবের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।
যাদের আবেদনে আদালত দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে, সেই দুদকের আইনজীবীরা বলছেন, তাদের অবস্থান আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত নয় বলে তারা এই আবেদন করেন।
সোমবার দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদনটি করেন।
আবেদনে বলা হয়, সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক আবুল খায়েরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে সরকারি বিধিবিধান ও পুঁজিবাজার আইন লঙ্ঘন করে শত শত কোটি টাকা পুঁজিবাজার বিনিয়োগসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। গোপন সূত্রে জানা যায়, অভিযোগসংশ্লিষ্টরা অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশযাত্রা ঠেকানো একান্ত আবশ্যক।
ক্রিকেটার সাকিব নানা ব্যবসায় জড়িত থাকলেও তার সম্পদের পরিমাণ কত, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সময় সাকিব তার সম্পদের যে বিবরণ দিয়েছিলেন, তাতে দেখা যায় তার বার্ষিক গড় আয় ৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদ হিসাবে ব্যাংকে তার জমানো অর্থের পরিমাণ ১১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এছাড়া ২৪ হাজার ২৬১ ডলার বৈদেশিক মুদ্রাও তার হাতে রয়েছে।
পুঁজিবাজারে ৪৩ কোটি ৬৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৭৪ টাকা বিনিয়োগ থাকার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। ২৫ ভরি সোনা এবং আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী মিলিয়ে ১৩ লাখ টাকার সম্পত্তির কথাও তিনি জানিয়েছিলেন।
পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংকে ৩১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ঋণের তথ্যও নির্বাচন কমিশনকে দিয়েছিলেন এই ক্রিকেটার-ব্যবসায়ী।