বিপিএলে ঢাকায় প্রথম পর্বের ম্যাচে মিরপুর স্টেডিয়ামে “দুয়ো” শুনতে হয়েছিল সাকিব আল হাসানকে। গ্যালারি থেকে তিনি একই শব্দ শুনেছেন সিলেটেও। তখন রান ছিল না সাকিবের ব্যাটে। ঢাকায় দ্বিতীয় পর্বে এসে প্রথম ম্যাচেই রান করেন। এবার তার হয়ে সমর্থকদের “দুয়ো” ধ্বনির জবাবে রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক নুরুল হাসান বলেছেন, ‘‘আমরা অকৃতজ্ঞ।”
সমর্থকদের সাকিবকে দুয়ো দেওয়ার কারণ অবশ্য শুধুই বাজে পারফরমেন্স নয়। বিশ্বকাপ থেকেই নানা কারণে নেতিবাচক আলোচনায় ছিলেন বাংলাদেশ অলরাউন্ডার। সমর্থকরা সেসবের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন গ্যালারি থেকে।
এরপর বিপিএলের এই আসরে ব্যাট হাতে রান পাচ্ছিলেন না সাকিব। তবে বল হাতে উইকেট নিচ্ছেন নিয়মিত। দুর্দান্ত ঢাকাকে ৬০ রানে হারিয়ে তালিকার শীর্ষে উঠে আসার দিনে সাকিব ম্যাচ সেরা হয়েছেন অলরাউন্ড পারফরম করে।
সাকিবের স্বস্তির পারফরম্যান্সের পর ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান জানিয়েছেন, ‘‘দেখেন, আমদের ক্রিকেট এই জায়গায় আসার পেছনে সাকিব ভাইয়ের অনেক বেশি অবদান রয়েছে। আমার কাছে মনে হয় আমরা খুবই বেশি অকৃতজ্ঞ। সবকিছু খুব তাড়াতাড়ি ভুলে যাই। অনেক সময় মাঠে যে ধরনের ঘটনা (ইনসিডেন্ট) ঘটে, এটা আসলে আমাদের ক্ষেত্রে হলে অনেক সময় মানা যায় কিন্তু তার ক্ষেত্রে এটা গ্রহণযোগ্য নয়।”তিনি বলতে চেয়েছেন, দর্শকদের ওই “দুয়ো” ধ্বনি সাকিব আল হাসানের প্রাপ্য নয়।
টুর্নামেন্টের মাঝপথে অলরাউন্ড সাকিবকে ফিরে পেয়ে নির্ভার হয়েছেন অধিনায়ক সোহান, ‘‘সাকিব ভাইয়ের আজকের পারফরমেন্সের জন্য অনেক খুশি, এটা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক। উনি যেভাবে নিজেকে তৈরি করেছিলেন, ফিরে আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন… এরপর তাকে এভাবে খেলতে দেখে আমিও নির্ভার হয়েছি।”
সিলেটে দুই ম্যাচের একটিতে লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করেছিলেন সাকিব। অন্য ম্যাচে ব্যাট করতেই নামেননি। তবে মঙ্গলবার আবার নিজের ব্যাটিং পজিশনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিজেই নিয়েছেন বলে জানান সোহান, ‘‘পুরো টিম ম্যানেজমেন্ট তাকে সমর্থন করছে। এরকম একটা ইনজুরিতে বা কঠিন সময়ে থাকলে ক্রিকেটারদের অনুপ্রেরণার দরকার হয়। সর্বশেষ অনুশীলনে তিনি বলেছেন তিনে ব্যাট করতে চাওয়ার কথা।” এদিন তিন নম্বরে নেমে ব্যাট হাতে তিনি ৩৪ রান করেছেন ২০ বলে।
দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে একটি ম্যাচ পার করে সাকিব নিজেও নির্ভার। মানসিক চাপ কাটানোর একটা উপায় যে পেয়েছেন তা ম্যাচ শেষে সাকিবের কথাতেই স্পষ্ট, ‘‘আমি চেয়েছিলাম উইকেটে কিছু সময় কাটাতে। এটা দরকার ছিল। আমাকে ম্যাচ অনুশীলন গুলোই সহযোগিতা করেছে। আমার মনে হয় এরকম আর কয়েকটা ম্যাচ যদি পেয়ে যাই তবে আমার পুরো আত্মবিশ্বাস ফিরে আসবে।”
ঢাকাকে বড় ব্যাবধানে হারানোর ম্যাচে রংপুর আগে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ১৭৫ রান করে। জবাবে ঢাকা ১৮ ওভারে মাত্র ১১৫ রানে অলআউট হয়। ঢাকার হয়ে সর্বোচ্চ ৩১ বলে ৪৪ রান করেন নাঈম শেখ। সাকিবের তিন উইকেট ছাড়া ২টি করে উইকেট নেন মেহেদি হাসান, সালমান ইরশাদ ও হাসান মাহমুদ।