আলো ঝলমলে ক্যারিয়ার সাকিব আল হাসানের। তামিম ইকবালের মতে টেস্টে সর্বকালের সেরা পাঁচ অলরাউন্ডারদের একজন তিনি। সেই সাকিবের শেষটা হলো বিবর্ণ আর হতাশার।
কানপুর টেস্টের আগে সাকিব বলেছেন, গত বিশ্বকাপেই শেষ টি-টোয়েন্টি খেলে ফেলেছেন তিনি। আর মিরপুরে খেলতে না পারলে কানপুরই হবে তার শেষ টেস্ট। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বক্তব্যে স্পষ্ট, দেশে ফিরলে সাকিবের শতভাগ নিরাপত্তার দায়িত্ব তারা নেবেন না।
তাই বলাই যায় যে, জীবনের শেষ টেস্টও খেলে ফেললেন সাকিব।
এজন্যই হয়ত বন্ধু সাকিবকে ব্যাট উপহার দিয়েছেন বিরাট কোহলি। ম্যাচ শেষে ভারতীয় এই কিংবদন্তি নিজের অটোগ্রাফ দেওয়া ব্যাট উপহার দিয়ে আড্ডায় মেতেছিলেন সাকিবের সঙ্গে। সাকিবের কাঁধে হাত রেখে খোশমেজাজে গল্প করতে দেখা যায় দুজনকে। সাকিবও ছিলেন হাসিখুশি মেজাজে। সাকিবকে ব্যাট উপহার দিয়েছেন ঋষভ পন্তও।
ম্যাচশেষে ভারত সফরে যাওয়া বাংলাদেশি সাংবাদিকরাও সাকিবকে অভিনন্দন জানান ফুল ও স্মারক উপহার দিয়ে।
শেষ ইনিংসে অবশ্য সাকিব আউট হয়েছেন শূন্য রানে। মঙ্গলবার রবীন্দ্র জাদেজাকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল এই ক্রিকেটার। তাই শেষটা হলো ক্রিকেট কিংবদন্তি ডন ব্র্যাডম্যানের মতোই। ১৯৪৮ সালে ওভালে শেষ ইনিংসে শূন্য রানে এরিক হোলিসের বলে বোল্ড হয়েছিলেন তিনি। অথচ এই ম্যাচে আর চার রান করলে টেস্টে তার গড় হতো ১০০।
জনশ্রুতি আছে, শেষ ম্যাচে আবেগে চোখ ভিজে যাওয়ায় বলটা দেখতে পাননি ব্র্যাডম্যান।
সাকিব আল হাসান অবশ্য চোখের সমস্যা নিয়েই খেলছেন গত ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকে। এই সিরিজেও ব্যাট করেছেন হেলমেটের ফিতা কামড়ে। তবে সফল হননি ব্যাট হাতে। আর শেষটা তো হলো ব্র্যাডম্যানের মতোই শূন্য রানে।
৭১ টেস্টে সাকিবের রান ৪ হাজার ৬০৯, গড় ৩৭ দশমিক ৭৭ আর সেঞ্চুরি পাঁচটি। বল হাতে তিনি নিয়েছেন ২৪৬ উইকেট। ১২৯ টি-টোয়েন্টিতে ২ হাজার ৫৫১ রানের পাশাপাশি সাকিব নিয়েছেন ১৪৯ উইকেট।
শুধু টেস্ট নয় টি-টোয়েন্টিতেও শেষ ইনিংসে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন সাকিব! আফগানিস্তানের বিপক্ষে গত বিশ্বকাপে শেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি। কিংসটাউনের সেই ম্যাচে নাভিন উল হকের প্রথম বলেই শূন্য রানে বোল্ড হন সাকিব! অর্থাৎ দুই ফরম্যাটে ‘ব্র্যাডম্যানীয় সমাপ্তি’ই হলো তার!