দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে সাকিব আল হাসানকে খেলানোর দাবি নিয়ে তার ভক্তরা আন্দোলন করছিলেন। হঠাৎ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে কয়েকজন লাঠি হাতে ছুটে এলেন। সাকিব সমর্থকদের ওপর আঘাত করে ছত্রভঙ্গ করতে চাইলেন। তারা সাকিব বিরোধী কিনা তা জানা যায়নি। তবে এমন কান্ডে টেস্টের আগেরদিন মিরপুরের নিরাপত্তা নিয়ে জোড় প্রশ্ন উঠল।
ঘটনা বেলা আড়াইটার। শনিবারই একদল সাকিব ভক্ত মিরপুর স্টেডিয়ামের ২ নম্বর গেটের সামনে আন্দোলন করেছিলেন। সেদিন ২০-২৫ জনের মতো সমর্থক ছিলেন। রবিবার তারা সংখ্যায় বেড়ে ১০০ জনের মতো আসেন। তবে এদিন তাদেরকে মিরপুরের ১ নম্বর গেটের বিপরীত দিকের রাস্তায় আটকে দেয় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা।
দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলছিল ৩০ মিনিটের মতো। একটা সময় আন্দোলনকারীরা একটু পেছনের দিকে সরে যান। ঠিক ওই সময় প্রশিকা মোড়ের দিক থেকে তিন-চারজন ব্যক্তি লাঠি হাতে ছুটে আসেন। আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করতে থাকেন। সবাই আহত হওয়া থেকে বাঁচার জন্য মিরপুরের ২ নম্বর গেটের দিকে ছুটে যান। কিন্তু সেদিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে প্রতিহত করেন।
সেনাবাহিনীর সদস্যরা এর আগ পর্যন্ত নিজেদের জায়গায় দাঁড়িয়েছিলেন। ২ নম্বর গেটের দিকে যে কারও যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা ছিল। সেটাই লক্ষ্য রাখছিলেন তারা। কিন্তু আন্দোলনকারীরা ধাওয়া খেয়ে ২ নম্বর গেটের দিকে ছুটলে তাদের প্রতিহত করতে হয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের। তারা সাকিব ভক্তদের ১ নম্বর গেট হয়ে প্রশিকা মোড়ের দিকে যেতে বলেন।
এ সময় সেনাবাহিনীর ওপর চড়াও হন একজন সাকিব ভক্ত। মাহফুজা নামের ওই ভক্ত এক সেনাবাহিনী সদস্যকে বলছিলেন, “এই লোকরা কোথা থেকে এসে আমাদের মারতে চাইলো তখন আপনারা কিছু বললেন না। আমাদের চলে যেতে বলছেন কেন? আপনারা এতক্ষণ কি করলেন?”
আন্দোলনে থাকা সাকিব ভক্তরা অনেকে মিরপুরেই সাকিবের অবসর দেখার দাবি তোলেন। আবার অনেকে চট্টগ্রাম টেস্টে সাকিবকে এনে যেন শেষ টেস্ট খেলানো হয় সেই দাবি তোলেন। পাশাপাশি বিসিবির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের পদত্যাগ দাবি করেন তারা। পরবর্তীতে বিকেল ৪টার দিকে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সাকিব ভক্তদের স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে সফল হন।
তবে চিন্তার বিষয় বেলা ৩টার দিকে সাকিব ভক্তদের আন্দোলন চলাকালীন অনুশীলন শেষ করে টিম হোটেলে ফিরছিল দক্ষিণ আফ্রিকা দল। ক্রিকেটারদের অনেককেই দেখা যায় আন্দোলনকারীদের ছবি-ভিডিও তুলছিলেন নিজেদের ফোনে। সোমবার টেস্টের আগে বাংলাদেশে কোন বিদেশি দলের এমন ঘটনার সাক্ষী হওয়া এই প্রথম। এতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভাবমূর্তি একরকম ক্ষুণ্ন হয়েই গেল।