Beta
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫

নির্বাচন করলে আবার জেতার আশায় সাকিব, খেলতে চান আরও এক বছর

sh7
[publishpress_authors_box]

বাংলাদেশ ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র সাকিব আল হাসান। ক্যারিয়ারের গোধূলি বেলায় সেই নক্ষত্রে লেগেছে গ্রহণ। দেশের হয়ে

সাকিব সর্বশেষ খেলেছেন গত বছর সেপ্টেম্বরে ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের সেই ভারত সফরে তিনি জানিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি আর খেলবেন না। পাশাপাশি অক্টোবরে মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেট ছাড়ারও ঘোষণা দেন। আর ওয়ানডেতে ছাড়তে চেয়েছিলেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর।

রাজনৈতিক কারণে কোনো ইচ্ছাই পূরণ হয়নি সাকিবের। তবে এখনও দেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখেন সাকিব। একটি ইংরেজি দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাকিব বললেন, ‘‘ হ্যাঁ, আমি সংসদ সদস্য ছিলাম কিন্তু এখন তো আর নেই এবং কোনো দলে কোনো রাজনৈতিক পদও নেই। যে কাজটি আমি ১৮ থেকে ২০ বছর ধরে করছি, সেটা থামিয়ে দেওয়াটা কি আপত্তিকর নয় (ক্রিকেট খেলা)? আমি এখনো বাংলাদেশের হয়ে খেলে ভালোভাবে ক্যারিয়ার শেষ করতে চাই। যদি সুযোগ থাকে আমি এক সিরিজ, দুই সিরিজ নাকি আরও এক বছর খেলব, সেই পরিকল্পনা করতে চাই।’’

সুযোগের জন্য বসে নেই সাকিব। যোগাযোগ করছেন বিসিবিসহ সরকারের উচ্চপর্যায়েও, ‘‘দেশের হয়ে খেলাই আমার সবচেয়ে বড় ইচ্ছা এবং সে জন্য আমি নিজের সবকিছু দিয়ে দিতে রাজি। এটাই আমার স্বপ্ন এবং সেটা পূরণ করতে আমি সবকিছুই করছি—ক্রীড়া উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টা এবং বিসিবি সভাপতির সঙ্গে কথা বলছি।’’

রাজনীতির সাকিব নাকি মাঠের সাকিব, কোনটা দিয়ে মূল্যায়ন করা হবে-তা নিয়ে জানালেন, ‘‘গত ১৮ বছর নাকি সর্বশেষ ৬ মাস, কোনটা দেখে আমাকে বিচার করবেন, তা আপনাদের ইচ্ছা। আমি মনে করি, বাংলাদেশের হয়ে খেলার সুযোগটা আমার প্রাপ্য এবং বেশির ভাগ মানুষই চায় আমি দেশের হয়ে খেলে অবসর নিই এবং আরও কিছুদিন চালিয়ে যাই। আমার বিশ্বাস, আরও এক-দুই বছর খেলতে পারব।’’

অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে সাকিবের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে হত্যা মামলা। সামনে এসেছে তাঁর দুর্নীতির খবরও। তবে রাজনীতিতে যোগ দেওয়াটাকে ভুল হিসেবে মানছেন না সাকিব, ‘‘রাজনীতিতে যোগ দেওয়া যদি আমার জন্য ভুল হয়ে থাকে, তবে ভবিষ্যতে যে কেউ রাজনীতিতে যোগ দিলে সেটাও ভুলই হবে। ডাক্তার, ব্যারিস্টার, ব্যবসায়ী—যে কেউ রাজনীতিতে যোগ দিলেই ভুল হতে পারে। রাজনীতিতে যোগ দেওয়া যেকোনো নাগরিকের অধিকার এবং যে কেউ তা করতে পারে। মানুষ আপনাকে ভোট দেবে কি দেবে না, সেটা তাদের ব্যাপার। আমি যখন যোগ দিয়েছিলাম, তখন আমি সঠিক ছিলাম বলে মনে করি এবং আমি এখনো বিশ্বাস করি যে আমি সঠিক ছিলাম। কারণ, আমার উদ্দেশ্য ছিল মাগুরার মানুষের জন্য কাজ করা।’’

আবারও নির্বাচন করলে জেতার আত্মবিশ্বাস জানালেন সাকিব, ‘‘আমার নির্বাচনী এলাকায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে বলে বিশ্বাস করি আমি। আর আমি মনে করি না যে আমি যদি আবার দাঁড়াই, তবে অন্য কেউ জিতবে। যখন আমি নির্বাচনে দাঁড়াই, তখন আমি মাগুরার মানুষের সেবা করার সুযোগ চেয়েছিলাম। মানুষ আমাকে সেই সুযোগ দিয়েছিল।’’

সাকিব আরও যোগ করেন, ‘‘অনেকে বলতে পারে আমার রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না। যারা এসব বলছে, তাদের বেশির ভাগই আমার এলাকার ভোটার নয়। মাগুরার ভোটাররা ভিন্নভাবে চিন্তা করে। আমি এখনো বিশ্বাস করি, যদি আজ আবার নির্বাচনে অংশ নিই, তবে মাগুরার মানুষ আমাকেই আবার ভোট দেবে। কারণ, তারা বিশ্বাস করে আমি তাদের জন্য কিছু করতে পারব। এটা আমার বিশ্বাস আর এ জন্যই রাজনীতিতে এসেছি।’’

সাকিব স্মরণ করিয়ে দিলেন সিস্টেমের কথাও, ‘‘যদি কেউ উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে চায়, তবে সিস্টেমের ভেতরে আসতে হবে। কারণ, সিস্টেমের অংশ না হয়ে আপনি সেটাকে কীভাবে বদলাবেন? যেসব মানুষ এখন দেশ চালাচ্ছে, তারা যদি সিস্টেমের বাইরে থাকত, তাহলে তারা যে পরিবর্তনগুলো চেয়েছিল তা কি আনতে পারত?’’

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় নীরব ভূমিকার জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন সাকিব । তখন তখন সাকিবকে দেখা গিয়েছিল কানাডায় সাফারি পার্কে ঘুরতে। সেই ছবি ফেইসবুকে দিয়েছিলেন সাকিবের স্ত্রী শিশির।

এর ব্যাখ্যায় সাকিব বললেন, ‘‘ছবিটি কানাডায় তোলা। আমি নিজে এটি পোস্ট করিনি। তবুও, আমি এর দায়ভার নিচ্ছি। এটা একটা পূর্বপরিকল্পিত পারিবারিক ভ্রমণ ছিল। এখন বুঝতে পারছি, হ্যাঁ, একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে আমার আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল। আমি এটা স্বীকার করছি।’’

 ছবিটার এত তীব্র প্রতিক্রিয়া হবে সেটা বুঝতে পারেননি সাকিবও, ‘‘আমি ভাবিনি এটা এত ছড়িয়ে পড়বে। প্রতিক্রিয়া শুরু হওয়ার পর, আমি বুঝতে পেরেছিলাম পরিস্থিতি কতটা গুরুতর। অনেকে আমাকে বলেছে, ওই সময়ে ওই ছবি দেখে তারা কষ্ট পেয়েছে। এখন বুঝতে পারছি, ওটা একটা ভুল ছিল। এমনকি অন্যরাও একই রকম জিনিস পোস্ট করলেও, আমারটা বেশি মনোযোগ পেয়েছে। এটা হয়তো আমি বলেই হয়েছে।’’

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত