একটা সময় বিষয়টি বাংলাদেশের ক্রিকেটে ‘ওপেন সিক্রেট’ ছিল। বিসিবির সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সংবাদ মাধ্যমে সেটি প্রকাশ্যে আনলে পুরোপুরি ‘ওপেন’ হয়ে যায়। একসময়কার ঘনিষ্ঠ বন্ধু সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের সম্পর্কে এতটাই তিক্ততা ছড়িয়েছে যে, দুজনের মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ! কিন্তু এই তিক্ততা না থাকলে বাংলাদেশের ক্রিকেট লাভবান হতো বলেই জানিয়েছেন তামিম।
এই মুহূর্তে ভারত সফরে রয়েছে বাংলাদেশ দল। খেলোয়াড় হিসেবে না হলেও বিশেষ ভূমিকায় এই সিরিজে রয়েছেন তামিম। বিসিসিআইয়ের আমন্ত্রণে ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের ওপেনারকে। কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে বিশ্লেষকের ভূমিকাতেও সামনে এসেছেন। তারই ধারাবাহিকায় ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম স্পোর্টস্টারে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তামিম। সেখানেই তিনি সাকিবের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে কথা বলেছেন।
তামিমের কাছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমটির প্রশ্ন ছিল এমন- আপনি কি মনে করেন সাকিবের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক তিক্ত না হলে বাংলাদেশ ক্রিকেট আরও লাভবান হতো? বাঁহাতি ওপেনার সময়ক্ষেপণ না করে সরাসরি বলেছেন, “হ্যাঁ, অবশ্যই- কোনও সন্দেহ ছাড়াই! আমি বিশ্বাস করি, আমাদের সম্পর্ক যদি দীর্ঘস্থায়ী হতো, তাহলে তা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য গেম-চেঞ্জার হতে পারতো।”
সঙ্গে যোগ করেছেন, “আমরা দুজনই দেশের জন্য ভালো কিছু করেছি। আমি মনে করি, আমাদের দুজনেরই ইতিবাচক মানসিকতা আছে এবং আমরা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য সেরাটা চাই।”
টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব। ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হতে যাওয়া দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শেষে লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় বলবেন। আর গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছেন এই ফরম্যাটের সবশেষ ম্যাচ।
সাকিবের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন থাকলেও জাতীয় দলের সতীর্থকে প্রাপ্য সম্মানটাই দিচ্ছেন তামিম। বাঁহাতি ওপেনারের চোখে সাকিব ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সুপারস্টার’।
তামিম বলেছেন, “সম্পর্ক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এটা নিশ্চিত করা যে, একে অন্যের ক্ষতি করছেন কিনা। কারণ শেষ পর্যন্ত দুজনই তো দেশের জন্য খেলছেন। আমি কখনোই মিডিয়ায় বা প্রকাশ্যে ওকে (সাকিব) কিংবা অন্য কাউকে দোষারোপ করিনি (২০২৩ সালের বিশ্বকাপ খেলতে না পেরে)।”
এরপরই সাকিবের প্রশংসা ঝরল তামিমের কণ্ঠে, “আমি সত্যিকার অর্থে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের জন্য সাকিব যা করেছে তা সত্যিই অসাধারণ। আপনার সঙ্গে ওর ভালো সম্পর্ক থাকুক বা না থাকুক, আপনি এটি অস্বীকার করতে পারবেন না। ও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সুপারস্টার।”
ভারতের প্রধান কোচ এখন গৌতম গম্ভীর, শ্রীলঙ্কাযর সনাৎ জয়াসুরিয়া। তামিম ইকবালের মতে, বাংলাদেশে এমনটা হওয়া খুব কঠিন, ‘‘আমার মনে হয় না, বাংলাদেশের কারও প্রধান কোচ হওয়ার সামর্থ্য আছে। বর্তমানে দুই অথবা তিনজন আছেন, যাঁরা সহকারী কোচ হওয়ার উপযুক্ত। তবে আমার মনে হয় না, কেউ প্রধান কোচ হওয়ার মতো উপযুক্ত।’’