২৭ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অবিস্মরণীয় এই জয় এসেছে এক তরুণ পেসারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে। গত কয়েকদিন ধরে ক্রিকেট বিশ্বে শুধু একটাই নাম- শামার জোসেফ। গ্যাবায় অবিশ্বাস্য বোলিংয়ের পুরস্কার হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের (সিডব্লিউআই) কেন্দ্রীয় চুক্তি পেয়ে গেছেন তিনি। এবার তার ‘প্রতিশ্রুতি’ রাখার পালা!
অস্ট্রেলিয়া সিরিজেই টেস্টে অভিষেক হয়েছে শামারের। অভিষেকেই পেয়েছিলেন ৫ উইকেট। পরের ম্যাচে সেটিকেও ছাড়িয়ে যান। ব্যাটিংয়ের সময় মিচেল স্টার্কের বলে আঙুল ফেটে গিয়েছিল, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়ায় দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে বল করতে পারেননি তিনি। অস্ট্রেলিয়ার জয় তখন সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল। কিন্তু চিকিৎসা শেষে মাঠে ফিরেই বল হাতে জাদু দেখালেন। গ্যাবার দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেট নিয়ে শামার নাটকীয় জয় এনে দেন ক্যারিবিয়ানদের।
CWI upgrades Shamar Joseph's current Franchise contract to a CWI International retainer contract in recognition of his outstanding performance in the historic victory vs. Australia at The Gabba.
— Windies Cricket (@windiescricket) February 1, 2024
Full Details⬇️ https://t.co/TYht0rDd3k
২৭ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতে আনন্দে চোখের জল গড়িয়েছে ব্রায়ান লারার। সকাল সন্ধ্যায় দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে দেশটির কিংবদন্তি পেসার কার্টলি অ্যামব্রোস বলেছেন, শামারের মধ্যে তিনি আরেক কিংবদন্তি পেসার ম্যালকম মার্শালের ছায়া দেখছেন। সেই শামার এবার পেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের কেন্দ্রীয় চুক্তি।
সিডব্লিউআই এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, “তার (শামার) সম্ভাবনাময় প্রতিভার অবশ্যই স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন। অস্ট্রেলিয়ায় ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের পুরস্কার নয় এটি, বরং এটা তিনি অর্জন করেছেন।”
কেন্দ্রীয় চুক্তিতে জায়গা পেলেন ২৪ বছর বয়সী তরুণ। এবার কি তিনি তার কথা রাখতে পারবেন? ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা ক্রিকেটারদের কেউই বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকতে চান না। কারণটা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে। চুক্তিতে থাকলে জাতীয় দলের ম্যাচ খেলতেই হবে, বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেট।
শামার অবশ্য চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগেই জানিয়েছিলেন, তার কাছে সবার আগে প্রাধান্য পাবে টেস্ট ক্রিকেট। পৃথিবীর যে প্রান্তেই খেলা থাকুক, সব ছেড়ে খেলবেন জাতীয় দলের ম্যাচ। গ্যাবায় ইতিহাস গড়ার পর এক সাক্ষাৎকারে শামার বলেছিলেন, “আমি এটা বলতে ভয় পাই না। একটা সময় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আমার চারপাশে থাকবে। টেস্ট ক্রিকেটও থাকবে। তবে আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমার সামনে যত টাকাই রাখা হোক না কেন, আমি সবসময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলার জন্য অ্যাভেইলেবল থাকব।”
ক্যারিবিয়ান কোনও ক্রিকেটার তারকাখ্যাতি পেলেই মজেন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে। বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্রভাবে জাতীয় দলের জন্য সময় বের করতে পারেন না তারা। শামার নিজেও তো জড়িয়ে গেছেন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে। চোটের কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি-টোয়েন্টি থেকে ছিটকে গেছেন। তবে বদলি হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন পিএসএলে। যদিও পিএসএলের সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোনও টেস্ট সিরিজ নেই।
সামনে হয়তো আরও অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ডাক পড়বে তার। হঠাৎই প্রচারের আলোয় চলে আসা শামার ওই পরিস্থিতি সামলে কতটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের থাকবেন, সেটাই দেখার!