Beta
শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪

দুঃসময় ভুলে নতুন সময়ে চোখ শান্তর

ট্রফি
Picture of ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্রীড়া প্রতিবেদক

আর্জেন্টিনার আরেকটি কোপা আমেরিকা জয়ের মুহুর্তের সকাল ছিল ৩০ জুলাই। নানা পেশার মানুষের জয়োল্লাসে মেতেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বর। সেদিন বিকেলেই ছাত্রলীগের হামলায় রক্তঝড়ে সাধারণ ছাত্রদের। সেই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত টানা উত্তাল সময় পার করেছে বাংলাদেশ।

একমাত্র খেলাই পারে দেশের মানুষকে এক চিলতে আনন্দ দিতে, সবকিছু শান্ত রাখতে। নাজমুল হোসেন শান্তও সেরকম কিছু ভাবছেন। দেশের মানুষকে শান্তির পরশ দিতে চাইছেন ক্রিকেট দিয়ে। সবাইকে এক করতে চাইছেন আর্জেন্টিনার কোপা জয়ের দিনের মতো করে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর লম্বা বিরতি দিয়ে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের মাধ্যমে মাঠে ফিরছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। শান্তদের জন্য টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলতি চক্রের তৃতীয় সিরিজ এটি। যেখানে ৪ ম্যাচে ১ জয় ও ৩ হার থেকে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার আটে বাংলাদেশ। পাকিস্তান ৫ ম্যাচে ২ জয় ও ৩ হারে ২২ পয়েন্ট নিয়ে আছে ছয়ে।

এই সিরিজে নামার আগের অতীত ভুলতে চাইলেন শান্ত, “গত বেশ কয়েকদিন আমাদের খুবই কঠিন সময় গিয়েছে। খুবই দুঃখজনক। সবাই খুবই কষ্ট করেছে। যেটা আমরা কেউই আশা করি না। যেটা হয়ে গেছে, ওটা নিয়ে এখন আর পড়ে থাকার কোনো অবস্থান নেই। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ক্রিকেটার হিসেবে আমরা চাই যে, আমাদের খেলাগুলো ঠিকভাবে হোক।”

বাংলাদেশে এখন নতুন সময় চলছে। কঠিন সময় ভুলে নতুন মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামবেন ক্রিকেটাররাও। সেই ধারাবাহিকতায় এবার পাকিস্তানে নিজেদের নতুন করে আবিষ্কার করতে চাইছেন শান্ত। পাকিস্তানে বাংলাদেশের জন্য ক্রিকেট থেকে সুখকর কিছুই নেই। দেশটিতে সব ফরম্যাট মিলিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ২০ ম্যাচ খেলে হার জুটেছে ২০টিতেই।

তবুও নতুন আশা রাখছেন শান্ত। তার কারণ এবারের দলে ভারসাম্য বেশি। সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক বলেছেন, “প্রস্তুতির দিক থেকে এবার আমরা ভালো প্রস্তুতি নিতে পেরেছি। প্রত্যেক ক্রিকেটার বিশ্বাস করে, বিশেষ করে এবার ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমরা ভালো করব। পাশাপাশি টেস্ট জেতার জন্য বোলিংটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, দল হিসেবে এবার খুব ভালো সুযোগ আছে আমাদের।”

পাকিস্তানের পিচগুলো বরাবরই ব্যাটারদের সুবিধা দেয়। সমান সুবিধা পেয়ে থাকেন পেসাররা। তাই টেস্ট শুরুর দুই দিন আগে বিশেষজ্ঞ স্পিনারহীন একাদশ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। টেস্টে যা একরকম চমক। বাংলাদেশ অবশ্যই সেই পথে হাঁটবে না। দলে সাকিব আল হাসান ছাড়াও তাইজুল ইসলাম ও মেহেদি হাসান মিরাজের মতো বিশেষজ্ঞ স্পিনার আছে। তবে কম্বিনেশন বিবেচনায় এই টেস্টে তিন পেসার খেলানোর জন্য বাদ পড়তে পারেন তাইজুল।

ব্যাটিংটা বরাবরই বাংলাদেশের জন্য চিন্তার কারণ। পাকিস্তানের পিচ বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিলেও নাজমুল শান্তরা কতটা হাত মেলালেন সেই প্রশ্ন থাকছেই। তার ওপর ইনফর্ম ওপেনার মাহমুদুল হাসানের ইনজুরি এবং প্রথম টেস্ট থেকে ছিটকে পড়া দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে শান্তদের। ডানহাতি ব্যাকআপ ওপেনার না থাকায় সুযোগ পেতে পারেন বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম।

জয় থাকুক বা না থাকুক ব্যাটিং নিয়ে চিন্তা থাকছেই। শান্ত জানিয়েছেন, “আলাদা করে কিছু করতে চাই না। সবাই জানে, আমাদের ব্যাটিংটা কয়েক দিন ধরে ভালো হচ্ছে না। সবশেষ টেস্ট সিরিজটাও আমরা ওরকমভাবে ভালো করিনি। তবে এবার প্রস্তুতি ভালো হয়েছে, তাই ভালো আশা করছি।”

বাংলাদেশের ব্যাটিং দুঃখ বাড়িয়ে দিতে চায় পাকিস্তান। চার পেসারের বোলিং আক্রমণ সাজিয়ে কামান নিয়ে আঘাত করতে বসে আছে তারা। সাবেক অজি পেসার জেসন গিলেস্পি এখন দলটির কোচ। তাই পেসারদের নিয়ে আক্রমণ সাজানোর রসায়নটা স্পষ্ট।

অবশ্য পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ বলছেন পূর্ণ পয়েন্ট নিশ্চিত করতেই এমন রণ কৌশল, “কিছু বিষয়ের জন্য আমরা চার পেসার খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অবস্থান। যে ভাবেই হোক হোম সিরিজ জিততেই হবে আমাদের। যে জায়গাটায় আমাদের শক্তি সেখানে গুরুত্ব দিতে চেয়েছি। এরপর হচ্ছে কন্ডিশন, যা পেস সহায়ক। এবং আমাদের টিম কম্বিনেশনেও তাকাতে হয়েছে।”

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে পাকিস্তানে। এর আগে খুলনায় এক টেস্টে পাকিস্তানের সঙ্গে ড্র ছাড়া এই ফরম্যাটে দলটির বিপক্ষে আর সাফল্য নেই। তবে গত দুটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ সিরিজের তুলনায় এবার বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়েছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করে।

সেই আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়ে পাকিস্তান থেকে পয়েন্ট ছিনিয়ে আনতে চায় বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত