বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ইস্তফা দিয়ে সোমবার দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। তবে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে চাননি। পরিবারের পীড়াপীড়িতেই তিনি শেষ পর্যন্ত দেশ ছেড়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমনটা দাবি করেছেন। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন মঙ্গলবার প্রকাশ করেছে এনডিটিভি।
সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করা জয় এনডিটিভিকে বলেন, “তিনি (শেখ হাসিনা) থাকতে চেয়েছিলেন, তিনি কোনোভাবে দেশ ছাড়তে চাননি। তবে আমরা তাকে জোরাজুরি করি যে, এখানে থাকা তার জন্য নিরাপদ না।”
তিনি বলেন, “আমরা তার শারীরিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম, তাই আমরা তাকে দেশ ছাড়তে রাজি করিয়েছি।”
টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ জয় আরও বলেন, “আমি আজ সকালে তার সঙ্গে কথা বলেছি। বাংলাদেশে এখন নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যা আপনারা দেখছেন। তিনি মানসিকভাবে ভালো আছেন, তবে তিনি খুবই হতাশ।
“এটা তার জন্য অত্যন্ত হৃদয়বিদারক, কারণ বাংলাদেশে উন্নত দেশে পরিণত করা ছিল তার স্বপ্ন এবং এর জন্য গত ১৫ বছর ধরে তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে দেশকে নিরাপদ রেখেছেন এবং এতো কিছু করা সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে সরব হওয়া একটি ছোট অংশ, বিরোধীদল, জঙ্গিরা এখন ক্ষমতা দখল করেছে।”
তীব্র ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করে সোমবার দুপুরে ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।
পরে ওইদিনই বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের নিউজ আওয়ার অনুষ্ঠানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ জয় জানান, তার মা আর রাজনীতিতে ফিরবেন না।
তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, তার (শেখ হাসিনা) এখানেই শেষ। আমার পরিবার এবং আমি- আমাদের যথেষ্ট হয়েছে। তার বয়স সত্তরের ঘরে, তার এত পরিশ্রমের পর একটি ছোট্ট অংশ তার বিরুদ্ধে এমন বিক্ষোভ করল …তিনি এতে ‘খুবই হতাশ’ হয়েছেন।”
বিবিসিকে জয় আরও বলেন, তার মা রবিবার থেকেই পদত্যাগের কথা বিবেচনা করছিলেন। অবশেষে পরিবারের কথায় নিজের নিরাপত্তার বিষয়টি তিনি ভেবে দেশ ছেড়েছেন।
এর আগে সোমবার শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবরের মধ্যে সজীব ওয়াজেদ জয় এক ভিডিও বার্তা দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, “ঠিক আছে, শেখ হাসিনার পর আপনাদের কী হবে, সেটা আমারও চিন্তার বিষয় না, আমার পরিবারেরও বিষয় না। আপনারা বুঝবেন।