Beta
বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫

শেখ হাসিনা যেন সম্পর্কে বাধা না হয় : প্রধান উপদেষ্টাকে বিক্রম

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি : পিআইডি
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি : পিআইডি
[publishpress_authors_box]

ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে আশ্রয় দেওয়ায় গত আগস্ট থেকেই বাংলাদেশের একটি বড় অংশের মানুষের মধ্যে ভারতবিদ্বেষ তৈরি হয়।

অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করা হয়েছে।

বিশেষ করে ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ভারত যখন বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা বন্ধ করে দেওয়া, সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা-নির্যাতনের ঘটনায় ভারতের উদ্বেগ, হিন্দু ধর্মীয় নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারসহ নানা কারণে দুই দেশের সম্পর্কে তৈরি হয় উত্তেজনা।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে যখন তৈরি হয়েছে এক ধরনের অস্বস্তি, তখন সফররত ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বললেন, শেখ হাসিনার অবস্থান দুই দেশের সম্পর্কে বাধা হওয়া উচিত নয়।

সোমবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব।

দুজনের এই বৈঠকে কী কী আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনিই সাংবাদিকদের জানান বিক্রম মিশ্রির বক্তব্য, দুই পক্ষ কী নিয়ে আলোচনা করেছেন তাও।

তিনি জানান, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে বসে দেওয়া বিভিন্ন উস্কানিমূলক বক্তব্য ও বিবৃতির বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিক্রম মিশ্রির কাছে উদ্বেগ জানানো হয়।

রিজওয়ানা বলেন, “শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করে যে ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, সেটা সরকার পছন্দ করছে না বলেও জানানো হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবকে। উত্তরে বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার অবস্থান দুই দেশের সম্পর্কে বাধা হওয়া উচিত নয়।”

জুলাই-আগস্টে যে বিপ্লব হয়েছে সে সম্পর্কে ভারত অবগত জানিয়ে রিজওয়ানা বলেন, “বাংলাদেশ নিয়ে যে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে সে বিষয়ে ঢাকার পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। অপপ্রচারের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে যে অপপ্রচার হচ্ছে সে বিষয়ে ভারত সরকার দায়ী নয়। এটি বিভিন্ন সংগঠনের কাজ।”

জনগণকে কেন্দ্রে রেখে সম্পর্ক গড়তে চায় দিল্লি, বার্তা বিক্রমের

রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে এবং জোরদার করতে ভারত ইচ্ছা পোষণ করেছে।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে রিজওয়ানা বলেন, “সংখ্যালঘু বিষয়ে আমরা বলেছি তাদের কোনও সংশয় থাকলে তারা আমাদের দেশে এসে সরেজমিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন মিশনে ভারতীয় উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা ও নানা ধরনের হুমকির বিষয় সম্পর্কে বিক্রম মিশ্রিকে জোরালোভাবে জানানো হয়েছে। বৈঠকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে দুই দেশকে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

এর আগে সকালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব। প্রথমে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ফরেন অফিস কনসালটেশনে (এফওসি) যোগ দেন বিক্রম। এরপর সচিবালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন এবং সেখানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

পরে বিকালে যান প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পর এই প্রথম দিল্লির উচ্চ পর্যায়ের কোনও কর্মকর্তা ঢাকায় এলেন। আর পররাষ্ট্রসচিব হওয়ার পর মিশ্রিরও প্রথম ঢাকা সফর এটি। আজ রাতেই তার দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত