ক্রিকেটের ২২ গজে নয় মাঠের বাইরের আলোচনায় গত কয়েক দিন সরব শোয়েব মালিক। ২০ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের বিবাহ বিচ্ছেদের খবরটা নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানি তারকা। তাকে নিয়ে যখন নেতিবাচক আলোচনা চলছে তখন তিনি ব্যস্ত মিরপুরে বিপিএলে। এবারের মৌসুমে খেলছেন ফরচুন বরিশালের হয়ে।
বুধবার সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার যদিও পারিবারিক জীবন নিয়ে কোনও কথা বলেননি। তবে ক্রিকেট নিয়ে দিয়েছেন নানা রকম প্রশ্নের উত্তর।
প্রশ্ন: বিপিএল নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কি?
শোয়েব মালিক : প্রত্যাশার কথা যদি বলেন তাহলে খুব সাধারণ সেটা। আর তা হলো দলের জন্য ভালো কিছু করা। যেটা আমি করার চেষ্টা করছি।
হ্যাঁ, অবশ্যই শুরুর দিকের ম্যাচগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ যেখানে আপনি দল হিসেবে খেলতে চাইবেন এবং পয়েন্ট পেতে চাইবেন। টুর্নামেন্ট যত এগিয়ে যাবে ততই আপনার কাছে কিছু না কিছু থাকবে। আমাদের লক্ষ্যটা একই।
প্রশ্ন: মিরপুরের উইকেটে তো অনেক ম্যাচ খেলেছেন। এই উইকেট নিয়ে আপনার ভাবনার কথা যদি জানতে চাই কি বলবেন?
শোয়েব মালিক : এখানে ব্যাটিং করা সহজ নয়। এখানে খেলার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে ব্যাটার, বোলার এবং স্পিনার হিসেবে উইকেট বুঝতে পারা। আপনার জন্য পরিকল্পনা করবেন, দল হিসেবেও পরিকল্পনা করবেন। ভালো উপায় বললে যখন মিরপুরের উইকেটে খেলবেন তখন ভালো করে বুঝতে হবে এবং ঠিকভাবে খেলা। আমরা আসলে এটাই করছি।
প্রশ্ন: কদিন আগে ১৩ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। এতটা পথ পেরিয়ে আসার অভিজ্ঞতা কেমন?
শোয়েব মালিক : যখন থেকে সুযোগ পেয়েছে তখন থেকে প্রতিটা রানই আমার জন্য স্মরণীয়। আমি যেখানেই খেলি না কেন সেখানকার কোচিং স্টাফ, আমার সঙ্গে খেলা ক্রিকেটার এবং আমি যাদের সঙ্গে খেলেছি তাদের সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই। আমার মনে হয় এসবই আমার জন্য স্মরণীয় স্মৃতি, বিশেষ মুহূর্ত। আমি এখনও ক্রিকেট খেলা উপভোগ করছি। এজন্যই আমি এখনও মাঠের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ফিল্ডিং করছি।
প্রশ্ন: বিশ্ব জুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগের মেলা। বিপিএলের সঙ্গে অন্যদের পার্থক্যটা কোথায়?
শোয়েব মালিক : দেখুন, প্রতিটি লিগের আলাদা আলাদা বিশেষত্ব আছে। আমার মনে হয় আপনি যখন পুরো দুনিয়ায় খেলবেন তখন এমন কন্ডিশনে খেলতে পারাটা দারুণ ব্যাপার। আপনি যখনই আপনার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পান না কেন তার পেছনে এমন কন্ডিশনে খেলার একটা কারণ থাকে। প্রতিটি সুযোগই আমার কাছে বিশেষ যা আমি লুফে নিতে মুখিয়ে থাকি। একটা লিগের সঙ্গে অন্য লিগের তুলনা করে মন্তব্য দেওয়াটা ভালো কাজ বলে মনে হয় না।
প্রতিটি লিগেরই নিজস্বতা আছে, বিশেষত্ব আছে। বিপিএলেরও বিশেষত্ব আছে। এখানকার দর্শকরা খুবই উচ্ছ্বসিত এবং সবাই মাঠে এসে তাদের দলকে সমর্থন দেয়। এটা এমন ব্যাপার যা প্রতিটি লিগ কিংবা প্রতিটি আয়োজকই একটা লিগ থেকে চায়।
প্রশ্ন : অনেক তরুণ ক্রিকেটারই আপনার খেলা পছন্দ করে। তাদের জন্য কি বলবেন?
শোয়েব মালিক : এখানে ভালো একটা সুযোগ খেলার। সুযোগটা দুহাত ভরে নিয়েছি এবং শেখার কোনও শেষ নেই। তাদের জন্য আমার বার্তাটা একেবারে সহজ। খেলো, নিজেকে প্রকাশ করো এবং যেখানেই সুযোগ পাও না কেন সেখান থেকে শেখো।
প্রশ্ন: আগামী ফেব্রুয়ারিতে ৪২ এ পা দেবেন। এই বয়সেও সাফল্যের রহস্য কি?
শোয়েব মালিক : দেখুন, এটা এমন একটা জিনিস যখন আমি ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দেব তখনও নিজেকে ফিট দেখতে চাইবো। এটাই আমার লক্ষ্য। আমি সবসময় জিমে যাই এবং যখনই সুযোগ পাই তখনই অনুশীলন করি। সেটা ইনডোরে হোক কিংবা আউটডোরে। আমি এটা সবসময় নিশ্চিত করি আমি কঠোর পরিশ্রম করছি। তাতে কি হয় আমার অনেক হতাশা বের করে নিয়ে যায়। জীবনে উত্থান-পতন থাকবেই। আমি যখনই অনুশীলন করি তখন সেটা আমার মাঝে শক্তির সঞ্চার করে।
প্রশ্ন: ক্রিকেটার তামিমকে তো অনেক বছরই দেখেছেন। তার অধীনে এবার খেলছেন। অধিনায়ক হিসেবে তামিমকে কত দেবেন?
শোয়েব মালিক : সে একজন দুর্দান্ত ক্রিকেটার এবং জাতীয় দলের হয়ে অনেক অর্জন। যেখানেই খেলে খুব ধারাবাহিক এবং সে অসাধারণ ক্রিকেটার। এটা বলতেই হবে সে বাংলাদেশের সুপারস্টার। বাংলাদেশের অনেক ম্যাচ জিতিয়েছে। আমাদের সৌভাগ্য তার মতো একজনকে অধিনায়ক হিসেবে পাওয়া। সে আমার পুরোনো বন্ধু এবং দারুণ মনের মানুষও।