মাশরাফি বিন মর্তুজা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি স্থানীয় খেলোয়াড়দের কাছেও ভীষণ শ্রদ্ধেয়। খারাপ সময়ে পাশে দাঁড়িয়ে সতীর্থের সেরাটা আদায় করা বা বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করায় জুড়ি মেলা ভার তার। সবার শ্রদ্ধেয় সেই মাশরাফিকে ২০১৭ সালের বিপিএলে স্লেজিং করে বসেছিলেন শুভাশিষ রায়। এই পেসার বল ছোড়ার একটা ভঙ্গি করে জড়িয়েছিলেন কথার লড়াইয়ে।
বাংলাদেশের হয়ে ৪টি টেস্টে ৯ উইকেট আর একমাত্র ওয়ানডেতে ১ উইকেট নেওয়া ফাস্ট বোলার শুভাশিষ রায় তখন থেকেই ক্রিকেটের বাইরে। মাঝখানে ২০১৯ সালের অক্টোবরে জাতীয় লিগে খেলেছিলেন একটা ম্যাচ। এরপর ৫ বছর ক্রিকেটের বাইরে শুভাশিষ। গুঞ্জন ছড়ায়, মাশরাফি বিন মর্তুজাকে স্লেজিং করার মূল্য দিতে হয়েছে তাকে! মাশরাফির জন্য কোন ক্লাব বা ফ্র্যাঞ্চাইজি দলে নিত না শুভাশিষকে।
প্রায় ৫ বছর পর আজ (বৃহস্পতিবার) মিরপুরে অনুশীলনে এসেছিলেন সেই শুভাশিষ। একা অনুশীলন করেন কিছুক্ষণ। তাকে দেখেই ছুটে যান নির্বাচক হান্নান সরকার। এরপর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলে অবধারাতিভাবে আসে ওই মাশরাফি প্রসঙ্গ।
জবাবে হাসতে হাসতেই শুভাশিষ বললেন, ‘‘মাশরাফি ভাই হয়তো আমাকে স্লেজিং করেছেন, আমি উনাকে উল্টো স্লেজিং করেছি। অবশ্য ম্যাচটা আমরাই জিতেছি। তাই এগুলো নিয়ে জনগণ অনেক কিছুই মনে করতে পারে। ভিতরে ক্রিকেটাররা আমরা কে কেমন, সবাই জানে। মাঠের বাইরে বন্ধু-বড় ভাই যাই হোক, মাঠে প্রতিপক্ষ মানে প্রতিপক্ষ। তাই ওটা কোন কারণ না।’’
মাশরাফি ইস্যু নয়, ইনজুরির জন্যই এতদিন মাঠের বাইরে থাকার কথা জানালেন শুভাশিষ। পাশাপাশি জানালেন আবারও খেলায় ফেরার প্রত্যয়, ‘‘ মাঠের বাইরে আমরা একরকম, আর মাঠে ঢুকলে বড় ভাই বা টিমম্যাট-এগুলো দেখার সুযোগ নাই। মাশরাফি ভাইয়ের সঙ্গে ২০১০ সাল থেকে খেলি। কীভাবে স্লেজিং করে, কি করে না করে এগুলো ভালোভাবে জানি। স্লেজিং পার্ট অব গেম। আসলে ইনজুরির জন্য এতদিন মাঠের বাইরে ছিলাম। আমি কাজ করছি। ইচ্ছা আছে এ বছর ঘরোয়া ক্রিকেট খেলব। পারফর্ম করতে পারলে খেলব, না হলে তো কিছু করার নেই।’’
২০১৭ সালের বিপিএলে মাশরাফি ছিলেন রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক আর শুভাশিষ খেলতেন চিটাগাং ভাইকিংসে। সিলেট পর্বের ম্যাচে ১৭তম ওভারের চতুর্থ বলটা ইয়র্কার দিয়েই মাশরাফির দিকে বল ছোড়ার একটা ভঙ্গি করেছিলেন তিনি। মাশরাফি কিছু একটা বলে বোলিং প্রান্তে ফিরে যাওয়ার ইশারা করেছিলেন তাকে। শুভাশিষ তাতে আরও তেতে যান। পিচের মধ্যেই কথার লড়াই শুরু হয় মাশরাফি-শুভাশিষের।
ওই বিতণ্ডায় চিটাগংয়ের লেগ স্পিনার তানভীর হায়দার এগিয়ে গিয়ে শান্ত করেন শুভাশিষকে। মাশরাফিকে সামলাতে এগিয়ে এসেছিলেন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা। দৃশ্যটা ছিল ভীষণ অপ্রত্যাশিত।
এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তখন মাশরাফি বলেছিলেন, ‘‘ক্রিকেটে এটা হয়ে থাকে। ওর জায়গা থেকে মনে করি ও ঠিক আছে। আমার হয়তো বা আরেকটু মাথা ঠান্ডা রাখা উচিত ছিল। সে আমার ছোট।’’