Beta
মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৪

ঢাবি-জাবিতে ‘হত্যাকাণ্ডের বিচার না হলে’ গাইবেন না সানি

sunny-190924-01
Picture of রুদ্র হক

রুদ্র হক

গানের কথায় আহমেদ হাসান সানি বরাবরই সমাজের প্রতি নিজের দায়বদ্ধতার জানান দিয়েছেন। মানুষের ক্ষয়ে যাওয়া বরাবরই তাকে আক্রান্ত করে। নিজেই নিজের গানের কথা লেখেন এবং সুর করেন। একজন স্বাধীন শিল্পী হিসেবে গেয়ে বেড়ান সেইসব গান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা চারুকলার ছবির হাট, এসব আলো-ছায়াতেই দুপুর অথবা সন্ধ্যায় সানিকে দেখা গেছে গিটার হাতে গান বানাতে। সময় গড়িয়েছে, তারুণ্যের কাছে নিজের গান নিয়ে সফলতার সঙ্গে পৌঁছেছেন তিনি। হয়ে উঠেছেন সময়ের জনপ্রিয় একজন শিল্পী।

দেশের ক্রান্তিকালে কোনো মানবিক সত্তা যেমন চুপ থাকতে পারে না; শিল্পীরাও তেমন সরব হন একটু বেশিই। সানি তার প্রমাণ বরাবরই দিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিল্পী হিসেবে ছিলেন সামনের সারিতে। তৈরি করেছেন গান। সানি মনে করেন, কোনো দলের হয়ে নয়, শিল্পীর কাজ ‘ক্ষমতাকে প্রশ্ন করা’।

এবার শুধু প্রশ্নেই থেমে থাকলেন না সানি।

গতকাল একইদিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের দ্বারা দুটি নৃশংস খুন পুরো জাতির মতো তাকেও নাড়া দিয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সানি জানালেন, দুটি খুনের ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত তিনি আর গাইতে যাবেন না বিশ্ববিদ্যালয় দুটির কোনো আয়োজনে।

গতকাল সানি তার ফেইসবুকে এক পোস্টে লিখেছেন, “এই দুই হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমি আর ঢাবি ও জাবিতে গান করতে বা এমন কোনো কাজে যেতে চাইনা।

“একজন শিল্পী হিসেবে এটা আমার বিবেকের প্রশ্ন। আমি খুনিদের বিচার চাই।”

শুধু তাই নয়, খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় হত্যাকাণ্ড ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও আহত করেছে শিল্পীকে।

তিনি লিখেছেন, “সবগুলো মৃত্যুর জবাব দিতে হবে। পাহাড়ে ঘটা সব অবিচারের বিচার করতে হবে এই বাংলাদেশে।”

এরমধ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিস্কারের ঘোষণাও এসেছে।

এ নিয়ে সকাল সন্ধ্যাকে সানি বলেন, “এ স্ট্যাটাসটা দিয়েছি কেননা সবার মতো আমিও ব্যথিত হয়েছি।

“আমি মনে করি আন্দোলন-সংগ্রামে সংবেদনশীল ছাত্ররা এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয় দুটিতে অনেক কনসার্ট করেছি। আন্দোলন করে করে আজ যে জায়গায় পৌঁছেছি সেখানে এরকম ঘটনা কখনোই মেনে নেয়া যায় না।

“এখন এই যে গ্রেপ্তার চলছে, আমি চাইবো এটার সুষ্ঠু বিচার যেন হয়। কোনভাবেই যেন একে হালকাভাবে না নেয়া হয়।”

‘মব লিঞ্চিং’ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় নিজের ভাবনা সকাল সন্ধ্যার কাছে তুলে ধরলেন এই শিল্পী।

সানি বলেন, “এই যে বারবার মব জাস্টিস হচ্ছে, আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া হচ্ছে, আমি আন্দোলন করছি বলে এটা আমার অধিকার এটা খুবই ভুল।

“আমি চাই বিচার প্রক্রিয়া যেন ঠিকঠাক হয়, কোনো ম্যানিপুলেশান যেন না হয়।”

দীঘিনালায় অগ্নিকাণ্ড ও হত্যার বিচারও চাইলেন এ শিল্পী।

“এটা ভয়ংকর রকম বুক ভেঙে যাওয়ার মতো ঘটনা। ঘটনাটা রাজনৈতিক হলেও মানুষই মরছে, কষ্ট পাচ্ছে।”

সানি বলেন, ”সাম্প্রতিক আন্দোলনে পাহাড়ের মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ ছিল।

“রাজনৈতিক পট পরিবর্তন যেমনই হোক, কেন পাহাড়ের মানুষ অত্যাচারিত হবে, এই যে ১৬ জন মানুষ মারা গেল, ঘরবাড়িতে আগুন দেয়া হল, আমরা কেন ঢাকায় কথা বললাম না?”

“এই বাংলাদেশে এসবের স্থান দেয়া উচিত না, আমরা এগুলো সহ্য করবো না।”

সর্বশেষ গত ১০ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে ‘তলপাথরের চিৎকার’ কনসার্টে গান করেছিলেন সানি।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনজুড়ে গেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা আয়োজনে। এ আন্দোলনে ‘গণদাবি’ শিরোনামে একটি গানও গেয়েছিলেন সানি। সাঈদ জুবেরীর লেখা গানটির সুরও তার।

হালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ফরগেট মি নট’ ওয়েব চলচ্চিত্রে তার গাওয়া ‘কেমনে কী’ গানটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

তার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে আরও আছে ‘আমারে উড়াইয়া দিও’, ‘সব প্লাস্টিকের পুতুল’, ‘মানুষ কেন এরকম’।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত