Beta
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

অবৈধ অস্ত্র নিয়ে চলতেন মেডিকেলের সেই শিক্ষক

শিক্ষক রায়হান শরীফ।
শিক্ষক রায়হান শরীফ।
[publishpress_authors_box]

যে আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে নিয়ে চলতেন, শিক্ষার্থীদের ভয় দেখাতেন সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক রায়হান শরীফ, তা বৈধ নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সোমবার এক শিক্ষার্থীকে গুলি করার পর গ্রেপ্তার হয়ে এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন রায়হান। তারা বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে।

রায়হান সিরাজগঞ্জ সদরের কালীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক তিনি।

রায়হান আগে থেকে একটি পিস্তল বহন করতেন বলে কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন। তিনি ওই অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখাতেন বলেও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

সোমবার বিকালে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করার পর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ গিয়ে অস্ত্রসহ তাকে থানা নিয়ে আসে।  

সিরাজগঞ্জ সদর থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম মঙ্গলবার জানান, ডা. রায়হান শরীফের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি অবৈধ।

“অস্ত্রটির গায়ে ‘ইউএসএ’ লেখা রয়েছে। তার মানে ধরা যায়, এটি একটি বিদেশি অস্ত্র। অবৈধ পিস্তল ব্যবহার করায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেছে পুলিশ।”

রায়হানের কাছ থেকে একাধিক গুলি ও ম্যাগাজিন পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের প্রতি তার ঝোঁক রয়েছে বলে জানান এক পুলিশ কর্মকর্তা।

এদিকে আহত শিক্ষার্থী আরাফাতের বাবা আবদুল্লাহ আল আমিন শিক্ষক রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে আরেকটি মামলা করেছেন বলে ওসি জানান। দুটি মামলাই হয়েছে সোমবার রাতে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, রায়হান শরীফ সব সময় ব্যাগে অস্ত্র ও ছোরা নিয়ে ক্লাসে এসে অস্ত্র টেবিলের ওপর রেখে পড়াতেন। শিক্ষার্থীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ক্লাসে না আসতে বললে তিনি তাদের ভয়ভীতি ও গুলি করে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন।

সোমবার একটি পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষার্থীদের বকাবকি করার এক পর্যায়ে ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে রায়হান শিক্ষার্থী আরাফাতকে গুলি করেন বলে মামলায় বলা হয়।

“সহপাঠীরা আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যেতে চাইলে আসামি অস্ত্র উঁচু করে সবাইকে ভয় দেখিয়ে বলে, ‘তোরা যদি ওকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যাস তাহলে তোদের সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলব’।”

সরকারি এই মেডিকেল কলেজটির অধ্যক্ষ মো. আমিরুল হোসেন আগের দিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, শিক্ষক রায়হান অস্ত্র নিয়ে চলতেন বলে তারা জানতেন।

মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুস সাকিব উচ্ছ্বাসও বলেছিলেন, “এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে এর আগেও গুলি করার অভিযোগ আছে। তিনি শিক্ষার্থীদের হলে গিয়েও অস্ত্র প্রদর্শন করেন। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে এর আগে জানানো হলেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।”

সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল জানিয়েছেন, দুটি মামলায় শিক্ষক রায়হান শরীফকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে এই ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজকে। বাকি দুই সদস্য হলেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন মাতুব্বর, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ উপসচিব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।

কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত