সাতক্ষীরায় গত বছর নারী ফুটবল লিগ খেলতে গিয়েছিলেন জাতীয় দলের কয়েকজন ফুটবলার। যে দলে ছিলেন সদ্য সাফজয়ী দলের স্ট্রাইকার তহুরা খাতুন। তখন এক খুদে ভক্তের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল ময়মনসিংহের এই ফুটবলারের। বাফুফে ভবনে শনিবার তহুরাকে দেখতে প্রায় ঘন্টা তিনেক অপেক্ষা করে সেই কিশোর।
এরপর ওই কিশোরকে একটি ফুটবল ও বাংলাদেশ দলের জার্সি উপহার দেন তহুরা।
পুরো ঘটনার বিবরণ তিনি এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তুলে ধরেন।
তহুরা লিখেছেন, “গত বছর সাতক্ষীরায় খেলতে গিয়েছিলাম আমরা কয়েকজন। আমার খেলা শেষে একটি ছেলে এসে আমাকে বলেছিল আপু আপনি অনেক ভালো খেলেন।
আমি বলছিলাম তুমি কি করো ভাইয়া?
কিছু করি না আপু। আমার বাবা নেই। তো পড়াশোনা করতে পারি না। তাই মাস্ক বিক্রি করে সংসার চালাই।
বাসায় কে কে আছে?
মা ও ছোট বোন আছে।
ওই কিশোরের হাতে একটা মাস্কের প্যাকেট ছিল। আমাকে বলে আপু একটা মাস্ক কিনবেন?
আমি মাস্ক নেই নাই, পুরো প্যাকেটের টাকাটা দিয়েছিলাম।
আমার ঠিকানাটা দিয়ে এসেছিলাম ওকে সাতক্ষীরায়। এরপর এ বছর আগস্টে ঢাকায় আসে আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য। তখন আমি বাড়িতে ছিলাম, যে কারণে দেখা করতে পারিনি।
গতকাল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নিচে তিন ঘন্টা বসে ছিল শুধু আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য। আমি জানিনা ও এসেছে। পরে সানজিদা আপা (সানজিদা আক্তার) এসে বলছে তোমার সঙ্গে দেখা করার জন্য একটা ছোট ছেলে এসে বসে আছে।
নিচে গিয়ে দেখি ওই পিচ্চি। আমাকে দেখে বলে, আসসালামু আলাইকুম। আপু কেমন আছেন?
ভালো। তুমি কেমন আছো?
ভালো? বলে হাসতে থাকে আমাকে দেখে।
বলে, আপু আপনার জন্য বসে আছি কখন থেকে।
কিসের জন্য এসেছো?
এত দূরে থেকে আপু মিরপুরে এসেছি। আম্মুর অপারেশন। এক ফাঁকে আপনাকে দেখতে এসেছি আপু।
এখন কি করো তুমি ভাইয়া?
বাদাম বিক্রি করি আপু।
আম্মুর অপারেশন, আপু খুব টেনশন এ আছি আপু।
কিভাবে টাকা জোগাড় করবো সকালে আপু?
আম্মু অন্যের বাড়ি কাজ করে, আমি বাদাম বিক্রি করে
২০ হাজার টাকা জোগাড় করছি।
আরও ৫ হাজার টাকা লাগবে আপু।
তোমার টাকা লাগবে? না আপু।
আপনাকে দেখেছি এতেই আমি অনেক খুশি।
আমার টাকা লাগবে না আপু।
তুমি আমার ভক্ত, আমিও তোমার ভক্ত।
তোমার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে আমাদের।
এরপর সে অনেক খুশি হয়ে ফিরে গেছে। “