Beta
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫

ভরা শীতেও তুষারহীন কাশ্মীর

তুষারশূন্য কাশ্মীরের চিত্র। ছবি : আলজাজিরা
তুষারশূন্য কাশ্মীরের চিত্র। ছবি : আলজাজিরা
[publishpress_authors_box]

ভূ-স্বর্গ খ্যাত ভারতের উত্তর-পশ্চিমের অঞ্চল কাশ্মীর। এখানে শীতকাল মানেই দিগন্তজুড়ে বিছিয়ে থাকা তুষার। দৃষ্টিনন্দন এক সাদার রাজ্য। তবে এ বছরের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। কাশ্মীরের মনোরম শহর গুলমার্গ এবার অদ্ভুত বাদামি ও শুষ্ক।

প্রতিবছর তুষারে ঢাকা কাশ্মীরের মনোরম সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজার হাজার পর্যটক এখানে আসেন। বরফের ওপরে স্কিইং কিংবা ঘোড়া টানা গাড়িতে চড়ে তারা কাশ্মীরের অন্যরকম শুভ্র রাজ্য উপভোগ করেন। তবে এবার তুষারপাত না হওয়ায়, পর্যটকদের উপস্থিতি কমে এসেছে।

কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, গত জানুয়ারিতে কাশ্মীরে সমাগম ঘটেছিল প্রায় এক লাখ পর্যটকের। এবছর তা অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে।

কাশ্মীরের মনরোম শহর গুলমার্গের হোটেল ব্যবসায়ী মাঞ্জুর আহমেদ। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তিনি এ ব্যবসায়ে জড়িত। ৫০ বছর বয়সী মাঞ্জুর পুরো জীবনেও এরকম তুষারহীন কাশ্মীর দেখেননি।

তুষারপাত না হওয়ার প্রভাব পড়েছে পর্যটন শিল্পে। মাঞ্জুর বিবিসিকে জানান, এ অবস্থায় পর্যটকরাও হোটেল বুকিং বন্ধ করে দিয়েছেন।

সেখানকার হোটেল মালিকরা জানান, অনেক পর্যটক এসে যখন দেখছেন তুষারপাত নেই, তারা স্কিইং কিংবা ঘোড়ায় টানা গাড়িতে চড়া উপভোগ করতে পারছেন না, তখন তারা ছুটি না কাটিয়েই ফিরে যাচ্ছেন। অনেক পর্যটকরা তাদের রিজার্ভেশন বাতিলও করেছেন।

গুলমার্গ হোটেলিয়ার্স ক্লাবের সভাপতি আকিব ছায়া বলছেন, “৪০ শতাংশের বেশি হোটেল রিজার্ভেশন বাতিল হয়েছে। তুষারপাত না হওয়ায় এখন অনেক নতুন বুকিং আটকে আছে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তুষারহীন শীতকাল জম্মু-কাশ্মীরের অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে। কারণ এ অঞ্চলের জিডিপির প্রায় ৭ শতাংশ আসে পর্যটন খাত থেকে। এছাড়া, কৃষি ও পানি সরবরাহের ওপরেও এর প্রভাব পড়বে।

পরিবেশবাদীরা জানান, তুষারপাত না হওয়ায় এ অঞ্চলে নদীর প্রবাহ কমে যেতে পারে। যার কারণে সুপেয় পানিসহ কৃষি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলোতে পানির স্তর কমে যাবে। এছাড়া তুষার না পড়ায় ভূগর্ভস্থ পানির মজুদ যথেষ্ট পরিমাণে পূরণ হবে না। ফলে উক্ত অঞ্চলে পানির ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

কাশ্মীরের অনেক স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জীবিকা নির্ভর করে শীতকালে আসা পর্যটকদের ওপর। যার কারণে, পর্যটক কমার প্রভাব পড়েছে তাদের জীবনে। গুলমার্গের পাশে আরেক পর্যটন গন্তব্য লাদাখের চিত্রও একই। তুষারশূন্য লাদাখেও পর্যটকের উপস্থিতি কম।

পর্যটন শিল্প বাদেও এই অঞ্চলের চাষাবাদ হিমবাহ ও তুষারের ওপর নির্ভর করে। পরিবেশবিদ সোনম ওয়াংচুক জানান, শীত কম পরায় এখন দ্রুত হিমবাহ গলছে। আর শীতের ভরা মৌসুমে তুষারপাত না হওয়ায় বসন্তে গিয়ে পানির বড় সঙ্কট তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।

কাশ্মীরের লেহ শহরের আবহাওয়া কেন্দ্রের পরিচালক সোনম লোটাস বলেন, এটি হিমালয় অঞ্চলের সবচেয়ে শুষ্ক মৌসুমগুলোর একটি।

এদিকে তুষারপাত না হওয়ায় অঞ্চলটি খরার সম্মুখীন হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ইরফান রশিদ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত