জাপানের হোক্কাইডো শহরের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর নিউ চিতোসে। গত শনিবার বিমানবন্দরটির বোর্ডিং গেটের কাছের একটি দোকান থেকে এক জোড়া কাঁচি হারিয়ে যায়।
আর এই ঘটনায় শনিবার সকালে ৩৬টি ফ্লাইট বাতিল ও ২০১টি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়। পুরো বিমানবন্দর এলাকায় দেখা দেয় বিশৃঙ্খলতা। দুই ঘণ্টার বেশি সময় স্থগিত ছিল যাত্রীদের নিরাপত্তা পরীক্ষা। এতে শত শত যাত্রী অস্থায়ীভাবে আটকা পড়েন।
পরে অবশ্য যাত্রীদের নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হয়। ফলে দীর্ঘ লাইন ও জটলা তৈরি হয়।
হারিয়ে যাওয়া কাঁচি খুঁজতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়। কিন্তু মজার বিষয় হলো, পরদিন একই দোকান থেকে কাঁচি উদ্ধার করা হয়।
হারিয়ে যাওয়া কাঁচিটি শনিবার পাওয়া না গেলেও, অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই পরে ফ্লাইটগুলো চালু করা হয়।
নিউ চিতোসে বিমানবন্দরের পরিচালনা প্রতিষ্ঠান হোক্কাইডো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সোমবার জানায়, হারিয়ে যাওয়া কাঁচি রবিবার দোকানের একজন কর্মচারী খুঁজে পায়।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হারিয়ে যাওয়া কাঁচি খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত তারা এই ঘটনাটি প্রকাশ করেনি।
জাপানের বার্ষিক বন উৎসবের পর বাড়ি ফেরার পথে অনেক যাত্রীই এই ফ্লাইট বাতিল ও বিলম্বের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
একজন যাত্রী তখন স্থানীয় মিডিয়াকে জানিয়েছিলেন, “আমাদের মনে হয় অপেক্ষা করার বিকল্প নেই। তবে আমি আশা করি, তারা এ ব্যাপারে আরও সতর্ক থাকবে।”
আরেক যাত্রী উদ্বেগের স্বরে জানিয়েছিলেন, “আজকাল এতো কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হয় যে মনে হয় এই দুশ্চিন্তার অবসান হবে না। আমি বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত নিরাপদ বোধ করতে পারছি না।”
দেশটির ভূমি, অবকাঠামো, পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় হোক্কাইডো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে এই ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেই ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দিয়েছে।
হোক্কাইডো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “আমরা স্বীকার করছি যে, দোকানে সঠিকভাবে জিনিসপত্র রাখার ব্যবস্থা না থাকার কারণেই এই ঘটনাটি ঘটেছে। এই ধরনের ঘটনা অপহরণ বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও যুক্ত হতে পারে। এমন ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে সেদিকে নজর থাকবে আমাদের।”
নিউ চিতোসে জাপানের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর। বিমান চলাচল বিশ্লেষণকারী সংস্থা ওএজির তথ্য অনুযায়ী, টোকিও ও সাপ্পোরোর মধ্যকার বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক পরিচালিত অভ্যন্তরীণ বিমান রুট এই বিমানবন্দরের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
২০২২ সালে ১ কোটি ৫০ লক্ষেরও বেশি যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করেছেন।
তথ্যসূত্র : বিবিসি।