Beta
রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫
Beta
রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫

কোটার সমাধান আদালতে : প্রধানমন্ত্রী

যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : বাসস
যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : বাসস
[publishpress_authors_box]

সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, “হাইকোর্টের রায়, এটার বিরুদ্ধে এভাবে আন্দোলন করা– এটা তো সাবজুডিস (বিচারাধীন)। আমরা সরকারে থেকে কিন্তু এ ব্যাপারে কোনও কথা বলতে পারি না। কারণ হাইকোর্ট রায় দিলে সেটা হাইকোর্ট থেকেই আবার আসতে হবে।”

যুব মহিলা লীগের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রসঙ্গক্রমে প্রধানমন্ত্রী কোটা ইস্যুতে এসব কথা বলেন।

স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা চলে আসছিল। এই কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের অক্টোবরে নবম থেকে ১৩তম গ্রেডের (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

পরে এক রিটের প্রেক্ষিতে গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। তবে হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করলেও সেই পরিপত্র পুনর্বহালসহ কয়েকটি দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা আন্দোলনে নেমেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে একটা কথা আমি না বলে পারছি না– আমরা দেখছি যে কোটা আন্দোলন। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যে কোটা, সেটা বাতিল করতে হবে, নারীদের কোটা বাতিল করতে হবে– এ ধরনের নানা কথা শোনা যাচ্ছে।”

এই কোটা একবার বাতিল করা হয়েছিল উল্লেখ করে তার ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষার হিসাব যদি দেখা যায় তাহলে দেখা যেত, আগে কোটা থাকাতে মেয়েরা যে সংখ্যায় সুযোগ পেত সে সুযোগ কিন্তু এই গত কয় বছরে পায়নি। এটা হলো বাস্তবতা।

“এমনকি অনেক অনেক জেলা, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলো কিন্তু বঞ্চিত থেকে গেছে। তারাও চাকরি পাচ্ছে না। আর এরকম বঞ্চিত হওয়ার কারণেই কেউ মামলা করে, যাতে হাইকোর্ট একটা রায় দেয়। হাইকোর্টের রায়টা আমরা সবসময়ই মেনে নেই। কিন্তু আমরা এখন দেখলাম যে কোটাবিরোধী আন্দোলন এখন আবার গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে কোটা বিরোধী আন্দোলন করছে, সেখানে মেয়েরাও করছে।”

তিনি বলেন, “এখানে আমার একটা প্রশ্ন আছে, যারা এর আগে কোটা বিরোধী আন্দোলন করেছিল তারা কয়জন পাবলিক সার্ভিস কমিশনে পরীক্ষা দিয়েছিল আর কতজন পাস করেছিল সেই হিসেবটা একটু বের করা দরকার। তারা দেখাক যে পরীক্ষা দিয়ে তারা বেশি পাস করেছিল, মেয়েরা বেশি পরীক্ষা দিয়ে বেশি চাকরি পেয়েছে কি না? সেটা আগে তারা প্রমাণ করুক।”

“আজকে আন্দোলনের নামে যেটা আবার করা হচ্ছে– পড়াশোনার সময় নষ্ট করা, এটার কোনও যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “সর্বজনীন পেনশন স্কিম আমরা দিয়েছি, এটা সকলের জন্য। এটা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল, ২০০৮ এর নির্বাচনী ইশতেহারে। যেটা আমরা করতে পেরেছি।”

তিনি বলেন, শুধু সরকারি চাকরিজীবীরাই পেনশন পায় আর বাকিরা বঞ্চিত থাকে। কাজেই কেউ যাতে বঞ্চিত না থাকে সেজন্য এই পেনশন স্কিমে বিভিন্ন স্তর দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

যুব মহিলা লীগের প্রতিটি সদস্যকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি মনে করি আমাদের যুব মহিলা লীগের প্রত্যেকেই এই সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যুক্ত হতে পার। যুক্ত হতে পার নিজেদের একটা ভবিষ্যতের জন্য।”

তিনি বলেন, “যখন মানুষের বয়স হয়ে যাবে বা তারা কর্মক্ষম থাকবে না এর মাধ্যমে তাদের জীবন-জীবকা নির্বাহের জন্য একটি নিশ্চিত অর্থ প্রাপ্তির সুযোগ রয়েছে। এটা কিন্তু আজীবন পাবে। আমি মনে করি, যারা আমাদের রাজনীতির সাথে যুক্ত তাদের এ ধরনের পেনশন স্কিমে ঢোকা দরকার। আর যারা একেবারে প্রান্তিক বা নিম্ন আয়ের মানুষ রয়েছে, তাদের জন্য এতে বিশেষ প্রণোদণা দেওয়া হয়েছে।”

যুব মহিলা লীগ প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে বলেও এসময় মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সেই সংগ্রামের পথ বেয়েই আজকে আমরা সরকারে আসতে পেরেছি এবং অত্যাচার নির্যাতন যতই হোক আমরা মাথা নত করিনি, আর আমরা একটাই জিনিস চেয়েছিলাম– গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠিত হোক।”

এর আগে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানে যুব মহিলা লীগের ওয়েবসাইটও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০০২ সালের ৬ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রীদের নিয়ে যুব মহিলা লীগ গঠন করেন। বাসস।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত