নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ইউনিয়ন পরিষদ উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই যুবকের নাম হৃদয় ভূঁইয়া। সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৫ জন।
সোনারগাঁ উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোশাররফ হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করেন। শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশের সময় পরাজিত প্রার্থী ও বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
নিহত হৃদয় ভূঁইয়া দুধঘাটা গ্রামের আমির আলী ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি নির্বাচনের প্রার্থী কায়সার আহম্মেদ রাজুর সমর্থক।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকালে ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণার পর পরাজিত প্রার্থী ও বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশ, দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এসময় প্রিজাইডিং অফিসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপর হামলা করে বাল্ট বক্স ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে পরাজিত প্রার্থীর লোকজন। ভাংচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে গুলিবিদ্ধ একজনকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। উভয় পক্ষের আরও চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মোশাররফ হোসেন জানান, হাসপাতালে আনার আগেই হৃদয় ভূঁইয়া মৃত্যুবরণ করে। তার বুকে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। নিহতের মরদেহ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহীনা ইসলাম চৌধুরী জানান, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য উপনির্বাচনে মোরগ প্রতীকে আব্দুল আজিজ সরকার ও তালা প্রতীকে কায়সার আহম্মেদ রাজু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোটগণনা শেষে আজিজ সরকার ৯২৯ ভোট ও কায়সার আহম্মেদ রাজু ৮১১ ভোট পান। এ নিয়ে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়।
এ ঘটনায় আহত দুই পুলিশ সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় হাসপাতালে নেওয়ার পর যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি পুলিশ জানে। তবে কার গুলিতে সে মারা গেছে তা তদন্ত করা হবে। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. মুজিবুর রহমান গত বছরের ২০ মে ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে এ পদটি শূন্য হয়। শনিবার শূন্য পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।