গত বিশ্বকাপে রূপকথাই গড়েছিল নেদারল্যান্ডস। পৌঁছে গিয়েছিল সুপার টুয়েলভে। ১৫৮ রানের পুঁজি নিয়ে নেদারল্যান্ডস সুপার টুয়েলভে ১৩ রানে হারিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকেও। এবারের বিশ্বকাপে ১০৩ রানের পুঁজি নিয়ে আবারও দক্ষিণ আফ্রিকাকে বাগে পেয়েছিল তারা। কিন্তু ডেভিড মিলার বীরত্বে শেষ হাসি প্রোটিয়াদের। তারা ডাচদের হারায় ৭ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেটে। ম্যাচ সেরা মিলার অপরাজিত ছিলেন ৫১ বলে ৩ বাউন্ডারি ৪ ছক্কায় ৫৯ রানে।
লক্ষ্য অল্প রানের হলেও দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা ছিল যাচ্ছেতাই। পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। রেজা হেনড্রিকসের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে প্রথম বলেই রান আউট কুইন্টন ডি কক! লোগান ফন বিকের করা পরের ওভারে ৩ রান করে বোল্ড হেনড্রিকসও।
নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ড্রপ ইন পিচে আজও ছিল অসম বাউন্স। রান পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করতে হয়েছে ব্যাটারদের। তাতেই ভিভিয়ানি কিংমার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন অধিনায়ক এইডেন মারক্রাম (০)।
আইপিএল মাতানো হেনরিক ক্লাসেনকেও ফেরান কিংমা। তুলে মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্লাসেন (৪ রান) ক্যাচ দেন প্রিঙ্গলকে। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ৪ উইকেটে মাত্র ১৬ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা, যা টি-টোয়েন্টিতে তাদের সর্বনিম্ন। আগের সর্বনিম্ন ছিল ২০১৩ সালে কলম্বোর বিপক্ষে ৩ উইকেটে ২৩।
এমন নড়বড়ে শুরুর পর হাল ধরেন ডেভিড মিলার ও ট্রিস্টান স্টাবস। দলের প্রথম বাউন্ডারিটা মারেন নবম ওভারে মিলার! ১০ ওভার শেষে তাদের রান ছিল ৪ উইকেটে ৩২। মিলার ও স্টাবসের পঞ্চম উইকেটে ৬৫ রানের জুটিতে ম্যাচে ফিরে প্রোটিয়ারা।
১৭তম ওভারে স্টাবসকে ফিরিয়ে জুটিটা ভাঙেন বাস ডি লিডি। ৩৭ বলে ১ বাউন্ডারি ১ ছক্কায় ৩৩ করেন তিনি। এরপর ইয়ানসেন ফিরেন ৩ রানে। শেষ ২ ওভারে প্রোটিয়াদের দরকার ছিল ১৬ রান। আশা ভরসার প্রতীক হয়ে তখনও ক্রিজ আঁকড়ে ছিলেন মিলার। তার ৫৯* রানের ঝড়ে ডাচ বিপর্যয় এড়ায় প্রোটিয়ারা।
এর আগে ব্যাট করে শুরুটা দুঃস্বপ্নের মতো হয়েছিল নেদারল্যান্ডসের। মার্কো ইয়ানসেন প্রথম ওভারেই ০ রানে ফেরান ওপেনার মাইকেল লেভিটকে। ওপর ওপেনার ম্যাক্স ও’ডাউড ফেরেন ২ রানে। ধারাবাহিকভাবে উইকেট হারানো ডাচরা ১২তম ওভারে ৪৮ রানে হারিয়ে বসে ৬ উইকেট।
সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে তাদের উদ্ধার করেন সিব্রান্ড এঙ্গেলব্রেখট ও লোগান ফন বিক। সপ্তম উইকেটে দুজন গড়েন ৫৪ রানের জুটি। তাতেই স্কোরটা পার হয় ১০০ রান।
শেষ ওভারে জুটিটা ভাঙেন প্রোটিয়া পেসার ওটনিল বার্টমান। ৪৫ বলে ২ বাউন্ডারি ১ ছক্কায় ৪০ করে এঙ্গেলব্রেখট ফিরেন ইয়ানসেনকে ক্যাচ দিয়ে। লোগান ফন বিক ফিরেন ২২ বলে ২৩ রানে। আর টিম প্রিঙ্গল আউট ০ রানে।
সেই ওভারে বার্টমান নেন ৩ উইকেট। ৪ ওভারে ১১ রানে তার শিকার ৪ উইকেট। বিশ্বকাপে এটা দক্ষিণ আফ্রিকানদের তৃতীয় সেরা বোলিং। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪ উইকেট পাওয়া আনরিখ নরকিয়া ২টি আর ইয়ানসেন নেন ২ উইকেট। ৪ ওভারে ২৭ রানে উিইকেটের দেখা পাননি কাগিসো রাবাদা।