স্বপ্ন পূরণ করতে দরকার ৬৯ রান, হাতে ৮ উইকেট। এখান থেকে একটা দলই হারতে পারে, সেটা ‘চিরকালীন চোকার’ দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে হারতে হারতে, ঠেকতে ঠেকতে বদলে গেছে এই দলটার রসায়ন। সিংহের মত গর্জে অবশেষে বিশ্বসেরা হওয়ার স্বাদ পেল তারা।
অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রোটিয়ারা জিতল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। তাতে কাটল ১৯৯৮ সালের মিনি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর আইসিসির কোন ট্রফি জিততে না পারার হতাশাও। একটা প্রান্ত আগলে থেকে মাইনফিল্ড হয়ে ওঠা লর্ডসের উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার নায়ক এইডেন মারক্রাম।
১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল থেকে জুড়ে গিয়েছে ‘চোকার্স’ তকমা। একের পর এক বিশ্বকাপ ব্যর্থতায় সেই তকমার আঁঠা আরও গাঢ় হয়েছে। বড় ম্যাচের চাপ নিতে পারেননি অ্যালান ডোনাল্ড, শন পোলক, জ্যাক ক্যালিসরা। সেই ‘চোকার্স’ তকমা অবশেষে ঘোচালেন টেম্বা বাভুমারা। দলটার শাপমুক্তিই হল যেন।
আগের দিনের ১০২ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামা এই ব্যাটার আজ (শনিবার) চতুর্থ দিন খেলেন ১৩৬ রানের ইনিংস। হ্যাজেলউডের বলে তিনি আউট হওয়ার সময় জয়ের জন্য দরকার ছিল ৬ রান, হাতে ৫ উইকেট। সহজ সমীকরণটা অনায়াসেই মিটিয়ে ফেলে প্রোটিয়ারা। সে সঙ্গে টেম্বা বাভুমার দল প্রমাণও করে দিল তারা আর ‘চোকার’ নয়।
লর্ডসে কাল (শুক্রবার) তৃতীয় দিনে তৃতীয় উইকেটে ১৪৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দিন শেষ করেছিলেন এইডেন মারক্রাম ও টেম্বা বাভুমা। তবে চা–বিরতির দুই ওভার আগে বাভুমা ৬ রানে ব্যাট করার সময় হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পান।
মাঠে চিকিৎসা নিলেও অস্বস্তি আর তীব্র ব্যথা নিয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন পুরোটা দিন। সিংহের মতো বুক চিতিয়ে করেছিলেন ৬৫ রান। আজ আর ১ রান করেই অবশ্য প্যাট কামিন্সের বলে ফিরে যান অ্যালেক্স ক্যারিকে ক্যাচ দিয়ে।
ট্রিস্টান স্টাবস ধুঁকছিলেন রীতিমত। ৪৩ বলে ৮ রানে তিনি বোল্ড হন মিচেল স্টার্কের বলে। তখন আবারও শঙ্কা জাগে প্রোটিয়াদের ‘চোক’ করার। তবে এইডেন মারক্রাম খেলে গেছেন দলের পুরো দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে। তার অসাধারণ ইনিয়ংসটিতেই কেটে যায় শঙ্কার মেঘ।
২০৭ বলে ১৪ বাউন্ডারিতে খেলা ১৩৬ রানের ইনিংসটা অমর হয়ে থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট ইতিহাসে।কার্যকরী ছিল ডেভিড বেডিংহামের ২১ রানের ইনিংসও। তাতেই আইসিসিরি মর্যাদার এই শিরোপাটা এবার গেল দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরে।