Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

দক্ষিণ কোরিয়ায় ‘মার্শাল ল’ জারি

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট উন সুক ইয়েল।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট উন সুক ইয়েল।
[publishpress_authors_box]

মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেন যুদ্ধ যখন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম, তখন প্রেসিডেন্টের এক পদক্ষেপে সবার নজর ঘুরে গেল দক্ষিণ কোরিয়ায়।

দেশটির প্রেসিডেন্ট উন সুক ইয়েল আকস্মিকভাবে মঙ্গলবার রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে দেশে মার্শাল ল সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন বলে সংবাদমাধ্যমগুলোতে খবর এসেছে।

দেশটির পিপল পাওয়ার পার্টির নেতা উন সামান্য ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে ২০২২ সাল থেকে প্রেসিডেন্টের চেয়ারে রয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা লি জায়ে-মিউং থেকে মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছিলেন।

সামরিক আইন জারির পক্ষে উন যুক্তি দেখিয়ে বলেছেন, বিরোধীদের রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, বিদ্রোহে উসকানি এবং পার্লামেন্টকে অপরাধীদের আখড়া বানানোর চক্রান্ত ঠেকাতে তাকে এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।

ভাষণে তিনি বলেন, “উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট শাসকদের হুমকি থেকে উদার দক্ষিণ কোরীয়দের রক্ষা, রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্ত নস্যাতে আমি সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিচ্ছি।”

“জনগণের জীবন-জীবিকার প্রতি দায়িত্বশীলতা না দেখিয়ে বিরোধী দল সরকারকে অচল করে দিতে চাইছিল,” বলেন প্রেসিডেন্ট।

সামরিক আইন জারির মানে হলো, দক্ষিণ কোরিয়ায় দণ্ডমুণ্ডের কর্তা এখন সামরিক বাহিনী। সেসামরিক প্রশাসনের ওপর তাদের কর্তৃত্ব চলবে। নাগরিক অধিকার থাকবে সঙ্কুচিত।

দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন সাময়িক সময়ের জন্য জারির কথা বলা হলেও তা বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে অনির্দিষ্টকালের জন্য তা চলার নজির রয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে সামরিক আইন জারির পর দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের জীবনযাত্রায় কোনও পরিবর্তন তাৎক্ষণিকভাবে ধরা পড়েনি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজের অধ্যাপক জন নিলসন-রাইট সিউল থেকে বিবিসিকে বলেন, রাস্তাঘাটের সামরিক বাহিনীর কোনও উপস্থিতি তিনি এখনও দেখেননি।

তবে দেশটির সংবাদ সংস্থা ইওনহপ নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, পার্লামেন্ট ভবনের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে সেনাবাহিনী। এমপিদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

সোশাল মিডিয়ায় আসা বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, পার্লামেন্ট ভবন ঘিরে বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা রক্ষী অবস্থান নিয়েছে।

সামরিক আইন জারির পর দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্ট ভবন ঘিরে নিরাপত্তা রক্ষীরা।
সামরিক আইন জারির পর দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্ট ভবন ঘিরে নিরাপত্তা রক্ষীরা।

দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে বিরোধীরা যখন পার্লামেন্টে ইয়ুন সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব তুলতে যাচ্ছিল, তার ঠিক আগেই সামরিক আইন জারি করলেন তিনি। তার স্ত্রীর দুর্নীতির তদন্তের উদ্যোগ নেওয়ার জন্যও চাপ দিচ্ছিল বিরোধী দল।

এই অবস্থায় সামরিক আইন জারির প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা লি জায়ে-মিউং। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপ অসাংবিধানিক।

এটি একটি ভুল পদক্ষেপ, ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির প্রধান হান দং-হুন এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বলে ইওনহপ জানিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট শাসিত রাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ায় পার্লামেন্টে এখন ডেমোক্রেটিক পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। ফলে কোনও আইনই পাস করতে পারছেন না উন।

এবার প্রেসিডেন্ট যে বাজেট প্রস্তাব দিয়েছেন, তাও পাস করতে পারছেন না। উল্টো তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার তোড়জোড় চালাচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট সামরিক শাসন জারি করলেও পার্লামেন্টের স্পিকার অধিবেশন ডাকার উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দেশটির টেলিভিশনে খবর এসেছে। যদিও পার্লামেন্ট ভবনে ঢোকার পথ আটকে রেখে নিরাপত্তা বাহিনী।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত