দেশে মার্শাল ল’ বা সামরিক আইন জারির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট উন সুক ইয়েল। তবে তিনি পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারির পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন প্রেসিডেন্ট ইয়েল। প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি তার বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অভিশংসন প্রস্তাব উত্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়, যার ওপর শনিবার ভোট হবে।
নিজের ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টির নেতারাও প্রেসিডেন্ট ইয়েলের সামরিক আইন জারির ঘোষণায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। দলটির কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা তাকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ারও আহ্বান জানান।
তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সামরিক আইন জারি যা তিনি ৬ ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নেন, তার জন্য তিনি ক্ষমা চাইতে রাজি আছেন কিন্তু দলীয় চাপ ও বিরোধী দলের অভিশংসন তাকে পদত্যাগে বাধ্য করতে পারবে না।
১৯৮০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ সামরিক আইন দেখেছিল। হঠাৎ কী কারণে চার দশকের বেশি সময় পর দেশটিতে আবার এই আইন জারি করার প্রয়োজন পড়ল, এ বিষয়ে উন সুক ইয়েল বলেন, মরিয়া হয়েই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তার এই সিদ্ধান্তের কারণে আইনগত ও রাজনৈতিক পরিণতির মুখোমুখি হতে তিনি প্রস্তুত।
সামরিক আইন জারির জন্য শনিবার জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেন, “আমার এই সিদ্ধান্তে দেশের জনগণ আঘাত পেয়েছে। এজন্য তাদের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি।
“দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দায়িত্ব আমি আমার দলের ওপর ছেড়ে দিচ্ছি।”
উন সুক ইয়েলের ভাষণের পর তার দল পিপল পাওয়ার পার্টির নেতা হান ডং-হুন বলেন, প্রেসিডেন্ট জনগণের দায়িত্ব নেওয়ার অবস্থায় নেই। তার পদত্যাগ এখন অনিবার্য।
এর আগে শুক্রবার হান ডং-হুন বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ইয়েল দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য বিপজ্জনক। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা দরকার।
দক্ষিণ কোরিয়ার সংবিধানে বলা আছে, প্রেসিডেন্ট যদি পদত্যাগ করেন বা অভিশংসিত হন, তাহলে তার নিয়োগকৃত প্রধানমন্ত্রী দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন।
সেই হিসেবে চাপের মুখে পদত্যাগ করতে রাজি না হওয়া প্রেসিডেন্ট ইয়েলকে ক্ষমতা থেকে সরানোর একমাত্র পথ এখন অভিশংসন।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতৃত্বাধীন জোট, যারা পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ, প্রেসিডেন্ট ইয়েলকে অভিশংসন করতে তাদের ক্ষমতাসীন দলের আট আইনপ্রণেতার ভোট পেলেই চলবে।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স, বিবিসি