Beta
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

এমপক্স : চট্টগ্রাম বিমানবন্দরেও বিশেষ সতর্কতা

শনিবার রাতে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জারি করা হয় বিশেষ সতর্কতা।
শনিবার রাতে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জারি করা হয় বিশেষ সতর্কতা।
[publishpress_authors_box]

মাঙ্কিপক্স বা এমপক্সের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পর এবার চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সেখানে তিন সদস্যের মেডিকেল টিম গঠন করে আক্রান্তদের শনাক্তে চালু করা হয়েছে থার্মাল স্ক্যানার।

এছাড়া বোর্ডিং পাস নেওয়ার সময় যাত্রীদের কারও মধ্যে এমপক্সের লক্ষণ দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে তা জানাতে সব বিমানসংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংক্রামক এই রোগের লক্ষণ রয়েছে এমন কেউ শনাক্ত হলে তাকে নির্ধারিত হাসপাতালে পাঠানোরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।                           

শনিবার রাত থেকে জারি হওয়া এই সতর্কতার পর এখন পর্যন্ত কোনও আক্রান্ত ব্যক্তির দেখা মেলেনি বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।  

বিশেষ এই সতর্কতার বিষয়ে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ সোমবার সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমরা বিমানবন্দরে সতর্ক অবস্থা জারি করেছি। শনিবার রাত থেকে পুরোদমে থার্মাল স্ক্যানিং চালু করা হয়েছে।

“বিদেশ থেকে আসা সব যাত্রীকে স্ক্যান করা হচ্ছে। পাশাপাশি চিকিৎসকসহ আমাদের তিন সদস্যের টিম কাজ করছে। এখন পর্যন্ত কোনও সন্দেহভাজন রোগী পাওয়া যায়নি।”

তিনি বলেন, “এমপক্সের লক্ষণ আছে এমন কেউ শনাক্ত হলে তাকে বিমানেই রেখে আমাদের জানাতে এয়ারলাইনসগুলোকে বলা হয়েছে। কেউ শনাক্ত হলে তাকে ফৌজদারহাটে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে। সংক্রামক রোগের জন্য এটি নির্ধারিত আছে।”

তাসলিম আহমেদ আরও বলেন, “করোনাভাইরাস মহামারির সময় আক্রান্তদের শনাক্ত করতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে মেডিকেল ডেস্ক চালু করা হয়েছিল। পরে করোনার বিস্তার কমে এলে মেডিকেল টিমের সদস্য কমানো হয়। এখন এমপক্সে আক্রান্ত রোগী এলে বা তাদের সংখ্যা বাড়তে শুরু করলে আমরা সেই ডেস্ক আবার পুরোদমে চালু করব।”

এ বিষয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, “করোনা মহামারির সময় চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ডাক্তার ও টেকনোলজিস্ট এনে মেডিকেল ডেস্কের জনবল বাড়ানো হয়। এখন রোগীর সংখ্যা দেখে জনবল আবারও বাড়ানো হবে।”

এদিকে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগও এমপক্স ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে এমপক্স রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসক, স্বাস্থ্য সহকারী ও সেবা সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে।

এর আগে শনিবার দুপুরে এমপক্সের বিস্তার রোধে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়।

সেদিন বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, “মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সতর্কতার কারণে শুক্রবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন এয়ারলাইনস, রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র ও বিমানবন্দর স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় একটি বৈঠক হয়।

“এরপরই এয়ারলাইনসগুলোকে সতর্ক থাকতে এবং কোনও লক্ষণযুক্ত যাত্রী থাকলে দ্রুত স্বাস্থ্য বিভাগকে জানাতে বলা হয়েছে। আগমনের ২১ দিনের মধ্যে লক্ষণ দেখা দিলে যাত্রীদের ১০৬৫৫ নম্বরে কল করতে বলা হয়েছে।”

এমপক্স সম্পর্কে সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, “এটি গুটি বসন্তের মতো এক ধরনের বসন্ত। ছোঁয়াচে এই রোগ কারও দেহে বাসা বাঁধলে যারা তাকে সেবা দিবে, সেই ডাক্তার, নার্সসহ অন্যদের ঝুঁকি বেশি।

“তাই রোগীর সংস্পর্শে যারা আসবেন, তারা যেন অবশ্যই সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধোয়ার পাশাপাশি মাস্ক পরেন।”

শিশু, বয়স্ক, সন্তানসম্ভবা এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম-এই চার ধরনের মানুষ এমপক্স ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদের ঝুঁকি বেশি থাকবে বলেও জানান এই সিভিল সার্জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জ্বর, মাথাব্যথা, পেশী ব্যথা, পিঠে ব্যথা, দুর্বলতা, ফোলা লসিকা গ্রন্থি ও ত্বকের ফুসকুড়ি বা ক্ষত এমপক্সের সাধারণ উপসর্গ। তবে লসিকা গ্রন্থির ফোলাভাব এই সংক্রামক রোগের একটি বৈশিষ্ট্যযুক্ত লক্ষণ।


আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত