Beta
বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫

নির্বাচন নিয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ শিগগিরই : আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। ফাইল ছবি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। ফাইল ছবি
[publishpress_authors_box]

শিগগিরই নির্বাচন নিয়ে আরও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশা করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।

বাসাস জানিয়েছে, সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

গত বছর অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের তাগিদ দিচ্ছে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরের দিকে নির্বাচন হতে পারে।

ভোট পেছাতে চান- এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, নির্বাচনে অংশ নিতে তারা মানসিকভাবে তৈরি। তবে নির্বাচনের জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আলী রীয়াজ বলেন, “ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন করার ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন এবং এটি সরকারের পক্ষ থেকেও বার বার বলা হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আশা করি, খুব শিগগিরই এ ব্যাপারে আরও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

নির্বাচন ও সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্যে কোনও বিরোধ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ঐকমত্য কমিশনের কাজের কারণে নির্বাচনী প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হওয়ার কোনও কারণ আমি দেখি না। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবেন, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে একটা ঐকমত্য তৈরি করা।”

এসময় তিনি জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো ছকের আকারে বিন্যস্ত করে গত ৬ মার্চ ৩৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে মোট সুপারিশের সংখ্যা ১৬৬টি। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত সুপারিশ ৭০টি, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে সুপারিশ ২৭টি, বিচার বিভাগ সংক্রান্ত সুপারিশ ২৩টি, জনপ্রশাসন সংক্রান্ত সুপারিশ ২৬টি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত সুপারিশ ২০টি।

আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে ৩৪টি রাজনৈতিক দলকে মতামত দিতে বলা হয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “তাদের মতামত প্রাপ্তি সাপেক্ষে আমরা দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরু করব। এজন্য এখনো পর্যন্ত আমরা কোনও সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ নির্ধারণ করিনি। যখন যে দলের মতামত পাওয়া যাবে সেই সময় থেকেই আলোচনার শুরু হবে।”

রাজনৈতিক দলগুলো যেসব বিষয়ে একমত হবে, সেসব বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে আলোচনা করে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা চাই দ্রুত আলোচনা করতে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যেই ঐকমত্যে পৌঁছে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে।”

এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, শুধু রাজনৈতিক দল নয়, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সব সংস্কারের বিষয়ে সুস্পষ্ট মতামত দেওয়ার অধিকার রয়েছে। এ জন্য ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশমালার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি নাগরিকদের মতামত জানতে চাওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ছয় মাস মেয়াদি এ কমিশন আগামী নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনগুলোর সুপারিশ বিবেচনা ও গ্রহণের লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য রাজনৈতিক দল ও শক্তিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে এবং এই মর্মে পদক্ষেপসমূহ সুপারিশ করবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত