Beta
শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫

টিকটকের স্পিড আপ কি মৌলিক গানের জন্য হুমকি

Raye
[publishpress_authors_box]

পাঁচ-ছয় মিনিটের জনপ্রিয় গানগুলো টিকটকে এসে হয়ে যাচ্ছে সংক্ষিপ্ত। কখনো তার আকার হচ্ছে ১  মিনিট, আবার কখনও বা ২ মিনিট। কীভাবে? গানের লয় দ্রুত করে দিয়ে!

টিকটকের মতো সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্মটিতে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে গানের সংক্ষিপ্ত এই রূপটি। যাকে বলা হচ্ছে ‘স্পিড আপ সংস’। যে কোন মৌলিক গান দ্রুত ভাইরাল হচ্ছে গানের এই সংস্করণে। অনেক শিল্পীর মৌলিক গানের জনপ্রিয় হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে এইসব স্পিড আপ সংস।  ব্রিটিশ গায়িকা রেই এর ‘এস্কেপিজম’ তেমনই এক দৃষ্টান্ত।     

তবে স্পিড আপ সংস এর শুরুটা একবিংশ শতকের গোড়ার দিকে। তখন মৌলিক গানের সংক্ষিপ্ত এবং দ্রুত লয়ের সংস্করণকে বলা হতো ‘নাইটকোর’। আজকাল পডকাস্ট এবং চলচ্চিত্রের আবহ হিসেবে স্পিড আপ সংস যুক্ত করা হচ্ছে। যা কিনা একটি গতিময় আবহ তৈরিতে ভূমিকা রাখে।

বর্তমানে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে স্পিড আপ গানের প্রভাব বাড়ছে। এ সময়ের শিল্পীরা জেন জি-দের কাছে প্রাসঙ্গিক থাকতেই গানের এই সংস্করণকে ছড়িয়ে দিচ্ছেন স্পটিফাইয়ের মতো মিউজিক স্ট্রিমিং সাইটগুলোতে। এটা খানিকটা এই শতকের শুরুর দিকের ‘রিমিক্স’ ধারণার সঙ্গেই বেশি সাদৃশ্যপূর্ণ। যদিও অনেক শিল্পী একে মৌলিক গানের প্রতি হুমকি হিসেবে দেখছেন। কারণ স্পিড আপের জনপ্রিয়তার কারণে অসংখ্য শ্রোতা আর মৌলিক গানটি শুনতে চায়না কিংবা শোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। পাশাপশি, কোন কোন সঙ্গীত বোদ্ধার মতে, ‘অরিজিনাল’ বা মৌলিক গানের এইসব সংক্ষিপ্ত সংস্করণে শিল্পমান অনেকটা খর্ব হয়। হারিয়ে যায় মৌলিক গানের আবেদন।   

গানের টিকটক সংস্করণ স্পিড আপ হয়ে উঠেছে শ্রোতার কাছে দ্রুত পৌঁছানোর মাধ্যম। অনেক শিল্পী একে যথেষ্ট সৃজনশীল মনে করলেও বহু শিল্পী এই স্পিড আপ-কে আপদই মনে করছেন। তাদের আশংকা, মৌলিক গানের জায়গা আবার দখল করে নিচ্ছে না তো টিকটকের এই সংস্করণ?

তবে সঙ্গীত বিশ্লেষকরা মনে করেন, প্রযুক্তি বিকাশের ধারাবাহিকতায় সঙ্গীতের নানা রূপ বৈচিত্র নিয়ে তো আসবেই, সেই সাথে সঙ্গীতের চরিত্রও বদলে দেবে। বদলে দেবে সঙ্গীত সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা। ধীরে হলেও এই পরিবর্তন হতেই থাকবে।

যদিও সত্যিটা হলো, মিউজিকের এই ট্রেন্ডে সবাই খুশি হতে পারছে না। কারণ টিকটকের এই সংস্করণে একটি গান নির্মাণের পেছনে শিল্পীর যে উদ্দেশ্যটি থাকে সেটি হারিয়ে যায়। এমন ধারণা সংগীত বোদ্ধাদের কারও কারও। তারা মনে করেন, এটা মূলত রিমিক্সেরই নতুন ধরণ, যেখানে গানের মূল আবেদনটি হারিয়ে যায়, গানটি হয়ে ওঠে শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট আবহের। এতে শ্রোতার পরিসরও কমে আসে, গানে শ্রোতার একান্ত নিজস্ব বিচরণের সুযোগও সীমিত হয়ে আসে।  

লন্ডনের ২৩ বছর বয়সী এক সঙ্গীত শিল্পী এবং প্রযোজক টনকা বি অবশ্য বলছেন ভিন্ন কথা। তার মতে, গানকে স্পিড আপ এ রূপান্তর অত্যন্ত সৃজনশীল প্রক্রিয়া।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি আমার গান অন্তত তিনগুণ বেশি ‘স্পিডআপ’ করে শুনতে (তাল-লয়ের গতি বাড়ানো) ভালোবাসি।  এটা সম্পূর্ণ নতুন একটি অনুভূতি দেয়, প্রতিটি শ্রোতার জন্য খুলে দেয় ভিন্ন ভিন্ন দরজা”।    

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত