Beta
বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫
Beta
বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫

ডিএসইতে টানা তিন দিন প্রধান সূচকের পতন

ঢাকার একটি ব্রোকারেজ হাউসে পুঁজিবাজারের লেনদেন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
ঢাকার একটি ব্রোকারেজ হাউসে পুঁজিবাজারের লেনদেন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

ফের দরপতনের ধারায় ফিরেছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। মূল্যসূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমছে। কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর।

টানা দশ কার্যদিবস বাড়ার পর সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন সোমবার সূচক ও লেনদেন কমেছিল বাজারে। তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও কমে। সবশেষ বুধবারও সেই পতন অব্যাহত ছিল।

বুধবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৩ দশমিক ২৭ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৭১ দশমিক ৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আরেক বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১০২ দশমিক ৩১ পয়েন্ট কমে লেনদেন শেষে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৯৮ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্টে।

তবে পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, টানা দশ দিন সূচক বাড়ার পর মূল্যসংশোধন হচ্ছে বাজারে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনেকেই মুনাফা তুলে নিচ্ছেন। সে কারণে বাজারে সূচক ও লেনদেন কমছে। ভয়ের কিছু নেই; বাজার ফের চাঙা হবে।

ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন মূল্যসীমা তুলে নেওয়ার পর কয়েকদিন বাজারে পতন হলেও সেই ধাক্কা কাটিয়ে তেজিভাব ফিরেছিল বাজারে। মূল্যসূচকের পাশাপাশি লেনদেন বাড়ায় বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে এসেছিল। দীর্ঘ মন্দায় যারা বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন, তারা ফিরে আসছেন। বিশ্লেষকরাও আশার কথা শোনাচ্ছেন। বলছেন, বাজার আরও ভালো হবে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের পাঁচ দিনই ডিএসইর সূচকে উল্লম্ফন দেখা যায়। তার আগের সপ্তাহের প্রথম দিন রবিবার ছাড়া পরের চার দিনই সূচক বেড়েছিল।

চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন রবিবার ডিএসইএক্স ৭৩ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বেড়েছিল। সব মিলিয়ে দশ কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩৭০ পয়েন্টের মতো বেড়েছিল।

সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন সোমবার সেই সূচক ২২ দশমিক ১৩ পয়েন্ট কমে। মঙ্গলবার কমে ৩০ দশমিক ১১ পয়েন্ট। বুধবার কমেছে ২৩ দশমিক ২৭ পয়েন্ট। সব মিলিয়ে এই তিন দিনে ডিএসইএক্স ৭৫ পয়েন্টের বেশি কমেছে।

তবে তিন দিন বাজারের এই পতনকে ‘স্বাভাবিক’ বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষক ডিএসইর বর্তমান পরিচালক ও সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী স্টক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাকিল রিজভী।

সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “এটা ঠিক যে, টানা তিন দিন সূচক কমেছে; লেনদেনও কমেছে। ফ্লোর পাইস বসিয়ে বাজারটাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। তুলে নেওয়ায় এখন স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আশা করছি, সামনের দিনগুলোতে আরও ভালো হবে। টানা দশ দিন বাজার চড়ার পর সূচক কিছুটা কমবে—এটাই স্বাভাবিক। এটা মূল্যসংশোধন। পৃথিবীর সব বাজারেই এটা হয়ে থাকে। কয়েক দিন বাড়বে, পরে দু-একদিন কমবে—এটাই বাজারের স্বাভাবিক গতি।”

‘এতে ভয়ের কিছু নেই’ মন্তব্য করে শাকিল রিজভী বলেন, “বাজারে বিনিয়োগকারীরা ফিরে এসেছেন। ছোট বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগ করছেন। আগামীতে বাজার আরও ভালো হবে।”

বাজারের হালচাল

সপ্তাহের চতুর্থ দিন বুধবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৩ দশমিক ২৭ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৭১ দশমিক ৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াহ সূচক ডিএসইএস দশমিক ১৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৯১ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্টে। তবে ডিএস-৩০ সূচক দশমিক ৮২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৭২ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

বুধবার ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয় ৩৯৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৯টির, কমেছে ২৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির দর।

লেনদেনও বেশ খানিকটা কমেছে। বুধবার এই বাজারে এক হাজার ১৭৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন মঙ্গলবার লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক হাজার ৬৪৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

সপ্তাহের প্রথম দিন রবিবার ডিএসইতে এক হাজার ৮৫২ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। সোমবার লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৬৯৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

বুধবার আরেক বাজার সিএসইতে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১০২ দশমিক ৩১ পয়েন্ট কমে লেনদেন শেষ হয়েছে ১৮ হাজার ৩৯৮ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্টে।

এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৬৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫৬টির, কমেছে ১৯২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির দর।

বুধবার ৪৩ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। মঙ্গলবার লেনদেনের অঙ্ক ছিল ২৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত