Beta
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫

সাভারে দফায় দফায় সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ১

সাভারে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
সাভারে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

ঢাকার সাভারে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকার সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে। এতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের থানা স্ট্যান্ড, সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড, রেডিও কলোনি স্টান্ড, বজার রোড, স্মরণিকা এলাকাসহ আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ছে। সংঘর্ষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীসহ অন্তত অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে ঢাকা-আরিচা ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

জানা গেছে, গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শিক্ষার্থীর নাম ইয়ামিন। তিনি ঢাকার মিরপুরের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।

বুধবার রাতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এর পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে সাভারের বেপজা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও সৃষ্টি সেন্ট্রাল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নতুন ডিইপিজেডের সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নেয়।

এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা একটি বাস ভাঙচুর করে। এ সময় বাসের কয়েকজন যাত্রী আহত হয় বলে জানান আশুলিয়া থানার ওসি এএফএম সায়েদ। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিলে তারা চলে যায়।

অন্যদিকে সাভারের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নবীনগর এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে চাইলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এর কিছুক্ষণ পরেই শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে চলে যায়।

সকাল ১১টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাকিজা মোড় এলাকা থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের ঠেকাতে কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয়।

একপর্যায়ে থানা স্ট্যান্ড, সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড, রেডিও কলোনি স্টান্ড, বাজার রোড, স্মরণিকা এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে এসব এলাকাজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষ চলাকালে দীর্ঘ সময় ধরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

নতুন ডিইপিজেডের সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ঠিকানা পরিবহনের একটি বাস ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে মুনসুর মার্টের সামনে শিক্ষার্থী ইয়ামিন গুলিবিদ্ধ হন। তাকে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ইয়ামিন এমআইএসটির শিক্ষার্থী বলে তিনি জেনেছেন।

এদিকে সাদ্দাম নামে আহত আরেকজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় সুপার মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায় শিক্ষার্থীরা। তবে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসক তাকে অন্য হাসপাতালে রেফার্ড করেন। তখন শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চেয়ে না পেয়ে হাসপাতালের সামনে রাখা অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করেছে।

পাকিজা এলাকায় দায়িত্বরত সাভার মডেল থানার এসআই মনিরুজ্জামান বলেন, বিক্ষুদ্ধ ছাত্রদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। বিক্ষোভরত ছাত্ররা একটি পুলিশের ভ্যান, একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করেছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত