হাইকোর্টের আদেশ পক্ষে আসার পর ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, বুয়েটে ‘নিয়মতান্ত্রিক’ রাজনীতি করবে তার সংগঠন।
বুয়েট শিক্ষার্থী এক ছাত্রলীগ নেতার রিট আবেদনে হাই কোর্ট বুয়েটে ছাত্র রাজনীতিতে নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিতের পর আদালত প্রাঙ্গণে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একথা বলেন তিনি।
২০১৯ সালে ছাত্রলীগের এক দল নেতা-কর্মীর পিটুনিতে শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ নিহত হওয়ার পর আন্দোলনের মুখে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ছাত্র রাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।
সম্প্রতি সাদ্দামসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা বুয়েটে গেলে তার প্রতিক্রিয়ায় সেখানকার শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। তারা ছাত্র রাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার দাবি জানায়।
তাদের দাবির মুখে সাদ্দামদের বুয়েটে আমন্ত্রণ জানানো ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ রাব্বি রাহিমের হলের সিট বাতিল করে বুয়েট প্রশাসন।
তার পাল্টায় সমাবেশ করার পাশাপাশি ছাত্র রাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞার বিজ্ঞপ্তিটি চ্যালেঞ্জ করে সোমবার আদালতে রিট আবেদন করেন ইমতিয়াজ।
আদালত বুয়েটের ওই বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিতের পাশাপাশি ২০১৯ সালে জারি করা এই বিজ্ঞপ্তি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছে।
পক্ষে আদেশ পাওয়ার পর সাদ্দাম আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বলেন, “বুয়েটে গণতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি লঙ্ঘনের যে ঘটনা ঘটছিল, সংবিধান প্রদত্ত আমাদের যে অধিকার আছে, সেগুলো লঙ্ঘনের কারণে এবং বুয়েট প্রশাসন যে সংবিধানবিরোধী, শিক্ষাবিরোধী, মৌলিক অধিকারবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সেটির বিরুদ্ধে আমরা রাজনৈতিকভাবে আন্দোলন করছি। একই সঙ্গে রিট আবেদনের মাধ্যমে আইনের আশ্রয়ের নিয়েছিলাম।”
এখন সংবিধানের আলোকে, বুয়েট অর্ডিন্যান্সের আলোকে নিয়ম মেনে ছাত্রলীগ বুয়েটে কার্যক্রম চালাবে বলে জানান তিনি।
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব বিকাশ এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠার আহ্বান বুয়েটের শিক্ষার্থীদের প্রতিও জানান ছাত্রলীগ সভাপতি।
তিনি একইসঙ্গে বলেন, “একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপযোগী ও গবেষণা উপযোগী ছাত্র রাজনীতি তৈরি করার জন্য বুয়েট প্রশাসন যদি কোনও ধরনের নিয়ম-কানুন, বিধি-বিধান জারি করে, যা সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, বুয়েটের অধ্যাদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, তাহলে সেটিকে আমরা স্বাগত জানাব।”
বুয়েটে আন্দোলনের মধ্যে ইমতিয়াজের সিট বাতিলের প্রতিবাদ এবং বুয়েটে রাজনীতির পথ অবারিত করার দাবিতে রবিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করেছিল ছাত্রলীগ। পরে তারা মিছিল নিয়ে বুয়েট ঘুরে আসে।
ছাত্রলীগ দাবি করে আসছে, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের সুযোগে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর এবং জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির আস্তানা গেঁড়েছে। ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আন্দোলনও তাদের মদদে হচ্ছে।
অন্যদিকে বুয়েটের আন্দোলনকারীরা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট কোনও সংগঠনের বিপক্ষে নয়, সব রাজনৈতিক তৎপরতাই বিপক্ষে। শিবিরের প্রতিও তাদের কোনও সমর্থন নেই।