Beta
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫

কুবি ভিসিকে জুতা নিক্ষেপ কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন।
[publishpress_authors_box]

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে (ভিসি) লক্ষ্য করে জুতা ও পানির বোতল ছুড়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা একপর্যায়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকায় অবস্থান নেন। তাদের শান্ত করতে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন সেখানে গেল তার ওপর চড়াও হন শিক্ষার্থীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উপাচার্যকে দেখামাত্রই ‘ভুয়া ভুয়া’, ‘দালাল দালাল’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তারা উপাচার্যকে লক্ষ্য করে জুতা ও খালি পানির বোতল নিক্ষেপ করেন।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকা দ্রুত ত্যাগ করতে বাধ্য হন উপাচার্য আবদুল মঈন। সেসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কোটাপদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

সেসময় সরকারি চাকরিতে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, ১০ শতাংশ জেলা, ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এবং ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা ছিল। 

এই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৫ জুন হাইকোর্টে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়।

তারপরই নতুন করে আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনকারীরা প্রথমে ৩০ জুন পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দেয় কোটা পুনর্বহাল না করতে। তারপর রাজপথে কর্মসূচিতে নামে তারা।

এর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে। রাষ্ট্রপক্ষের পাশাপাশি আইনি লড়াইয়ে যুক্ত হতে আবেদন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী।

এই দুই আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার আপিল বিভাগ সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করে।

তবে বুধবার সর্বোচ্চ আদালত থেকে আদেশ আসার পর দেশজুড়ে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি অব্যাহত রাখে কোটাবিরোধীরা। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে কোটা বাতিলের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করার সময় পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয় কুবি শিক্ষার্থীরা।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এসময় তাদের লাঠিপেটা করতেও দেখা যায়।

এতে দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি অনন মজুমদার, চ্যানেল আইয়ের প্রতিনিধি সৌরভ সিদ্দিকীসহ ১০ জন আহত হয়।

আন্দোলনরতদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটা, ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপের ঘটনায় উপাচার্য আবদুল মঈনকেই দায়ী করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, পুলিশের লাঠিপেটায় কয়েকজন শিক্ষার্থীর মাথা ফেটে যায়।     

আন্দোলনরতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ভিসির ইন্ধনেই পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। তারা লাঠিপেটা করে আমাদের কয়েকজন সহপাঠীর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। এসবের মূলে ছিলেন ভিসি।”

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের বিচার না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত